বিএনপি’র বিভাগীয় গনসমাবেশেকে কেন্দ্র করে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল ছিল বরিশাল মহানগরীর বিএনপির সমাবেশমুখি। সমাবেশ যোগ দিতে সারা দেশ থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দক্ষিণাঞ্চলের জনশ্রোতে নগরীর বেলপার্ক ছাপিয়ে জনশ্রোত থামছে অনেক দুরের রাস্তায়। আসেপাশে বাড়ী ছাদেও অনেক মানুষ দাড়িয়ে এসমএবশ প্রত্যখ্য করেছেন। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে ট্রলারে বোঝাই করে শণিবার শেষ রাত থেকেই মানুষ পৌছছে মহানগরীতে। দুপুর ১২টার মধ্যে শত শত ট্রলারে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার মানুষ মহানগরীতে পৌছেছে। সবার গন্তব্যই ছিল বঙ্গবন্ধু উদ্যান-বেলপার্ক। দুপুর ১টার আগে মহানগরী ও সন্নিহিত এলাকা থেকেও মিছিলের পর মিছিল ছুটতে শুরু করে বেল পার্কে। বুধবার থেকেই দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার বিএনপি নেতা-কর্মীরা এ নগরীতে পৌছে সমবেশস্থলে অবস্থান নেয়।
তবে পথে পথে বাঁধা বিপত্তিও অব্যাহত ছিল। শণিবার সকালে ঢাকা থেকে বরিশালের সমাবেশে যোগদানের পথে গৌরনদীর মাহিলাড়াতে ইঞ্জিনিয়ার ইসরাক হোসেনের গাড়ী বহরে হামলায় কয়েকটি গাড়ী ভাংচুর ও তার সফরসঙ্গী অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। গৌরনদীতে অনুরূপ হামলার শিকার হয়েচেন ারো কয়েকজন বিএনপি নেতা।
যোগাযোগ শূণ্য পটুয়াখালী,বরগুনা,ভোলা ও পিরোজপুরের বিভিন্ন এলাকার পথে পথে সমাবেশে যোগদানকারীদের বাঁধা দেয়ার অভিযোগ ছিল গত দুদিন। পিরোজপুরের নেসারবাদে শুক্রবার কয়েকজন নেতা-কর্মীকে গ্রেফÍারও করা হয়েছে।
বরিশালে দেশের প্রধান বিরোধী দলের বিভাগীয় এ গনসমাবেশকে সামনে রেখে আরো ১০ দিন আগেই পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষনা দিয়েও শেষ পর্যন্ত জন¤্রােত আটকানো যায়নি। শুক্রবার সকাল থেকেই বরিশালের সাথে সড়ক ও নৌ যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়া হয়। এমনকি শুক্রবার সকাল থেকে বরিশালের সাথে দক্ষিণাঞ্চলের অন্য জেলাগুলোর সাথে বাস সার্ভিস বন্ধ রাখে রাষ্ট্রীয় সড়ক পরিবহন প্রতিষ্ঠান-বিআরটিসি’ও। সংস্থাটির বরিশাল বাস ডিপো ম্যানেজারের মতে ‘যাত্রীর অভাবে তাদের বাস ছাড়েনি’। শুক্রবার রাতে বরিশাল সহ দক্ষিনাঞ্চলের সাথে রাজধানীর নৌযোগাযোগও বন্ধ করে দেয়া হয়।
অপরদিকে বাস ও মিনিবাস ধর্মঘটের রেশ ধরে শুক্রবার সকাল থেকেই মহানগরীতে ইজিবাইক ও গ্যাস চালিত থ্রীÑহুইলার চলাচলও বন্ধ করে দেয়া হয়। এমনকি পটুয়াখালী,পিরোজপুর ও বরগুনাতে বৃহস্পতিবার রাতে ও ঝালকাঠীতে শুক্রবার সকালে আকষ্মিক পরিবহন ধর্মঘট ডেকে সব ধরনের যানবাহনের চলাচল বন্ধ করে গোটা দক্ষিণাঞ্চলকে সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। বরিশাল মহানগরীতে প্রবেসের সবগুলো রাস্তায়ই এ্যাম্বেুলেন্স, প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাসগুলোতে তল্লশী করেই নগরীতে প্রবেস করতে দেয় বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের লোকজন। মহানগর ট্রাফিক পুলিশও কোন কোন স্থানে যানবাহনে তল্লাশী চালায়। শুক্র ও শণিবার বিমান বন্দরে অবতরন করা ফ্লাইটগুলোর কয়েকশ যাত্রীর বেশীরভাগই কোন যানবাহন না পেয়ে রিক্সা ভ্যানে করে ১৫ কিলোমিটার দুরে নগরীতে প্রবেস করতে গিয়ে পদে পদে বিড়ম্বনার শিকার হন। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার মুমুর্ষ রোগীদের হাসপাতালে স্থানন্তর করতে গিয়ে চরম অনিশ্চয়তা ও দূর্ভোগের শিকার হয়েছেন সাধারন মানুষ। কোন ধর্মঘট ডাকা না হলেও শুক্রবার সকাল থেকে এক চত’র্থাংশ রিক্সাও বরিশালের রাস্তায় নামেনি। ফলে জনগনের দূর্ভোগ ছিল সব বর্ণনার বাইরে।
কিন্তু এতসব কিছুর পরেও যোগাযোগ শূণ্য দক্ষিণাঞ্চলের প্রতিটি জেলা ও উপজেলা সহ ইউনিয়ন পর্যায় থেকেও নেতা-কর্মী সহ সাধারন মানুষ গত তিন দিন ধরেই বরিশালের গনসমাবেশে আসছেন। শণিবার সকাল থেকে নিকট দুরের জনশ্রোত শুরু হয়। জোহরের নামাজের পরে মহানগরীর সাধারন মানুষ ঘর থেকে বের হতে শুরু করে। সবার গন্তব্য ছিল নগরীর বেল পার্ক-বঙ্গবন্ধু উদ্যানের বিভাগীয় গনসমাবেশ।
দুপুর ১২টায় সমাবেশস্থলের মাঠ মানুষে মানুষে সয়লাব হয়ে যায়। জন¤্রােতে দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত এ সমাবেস্থলে তিল ধার ঠাই ছিলনা। ফলে মাঠ ছাপিয়ে চার পাশের রাস্তাগুলোতে দাড়িয়েও নেতৃবৃন্দের ভাষন শুনতে দেখাগেছে হজার হাজার মানুষকে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন