নাতি ছেলের সূন্নতে খাৎনার এক লাখ টাকা প্রবাসি নানার দিতে বিলম্ব হওয়ায় স্বামী ও শাশড়ীর নির্যাতনে ২ সন্তানের জননীকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শহরের চরথানাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, গত ১ নভেম্বর রাত অনুমান ৪টার দিকে ইমরান হোসেন তুষারের শয়ন কক্ষে তার স্ত্রী ২ সন্তানের জননী আশা খাতুন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার প্রচার করেন স্বামী তুষারের মা। আশা খাতুনের পরিবারের দাবি আত্মহত্যা নয় পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে তাকে। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। হত্যা প্ররোচনার দায়ে ইমরান হোসেন তুষার ও তার মা ইয়াসমিন বেগমকে পুলিশ গ্রেফতার করে। সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে কুষ্টিয়া বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট জেল হাজতে প্রেরণ করেছে গ্রেফতারকৃত ২ আসামীকে।
ঘটনার বিবরণে জানাযায়, কুবুর হাট সরদার পাড়ার আলম হোসেন ও নাছিমা খাতুন দুজনে বিদেশ (ওমানে) থাকেন। আলম হোসেন এর কন্যা আশা খাতুন (২৩)’র সাথে গত ২০১৭ সালে ৬ বছর পৃর্বে ইমরান হোসেন তুষার এর ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক পারিবারিক ভাবে বিবাহ হয়। বিবাহের সময় সোনার গহনা ,নগদ টাকাসহ অনুমান তিন লক্ষ টাকার সাংসারিক বিভিন্ন জিনিস পত্র দেয়। বিবাহের পর আশার স্বামী ইমরান হোসেন তুষার যৌতুক বাবদ ২ লক্ষ টাকা নেয়। কিছুদিন পর ব্যবসা করার জন্য নেয় ১ লক্ষ টাকা, পুনরায় জমি ক্রয় এবং বাড়ি করার জন্য আরও ২ লক্ষ টাকা নেয়। এভাবে বিভিন্ন সময় কয়েক দফায় শ্বশুরের নিকট থেকে ৫ লাখ টাকা নেয়। প্রবাসিশ্বশুর পেয়ে তুষারে দাবির শেষ নেই। ইতিমধ্যে স্ত্রী আশার কাছে আবারও দাবি করে বসে ১ লক্ষ টাকা দিতে হবে। মেয়ের কান্না-কাটির কারণে আশার পিতা চলতি মাসের ৭ তারিখে ১ লক্ষ টাকা দিতে চেয়েছিল কিন্তু‘ তার আগেই নির্যাতন করে পিটিয়ে হত্যা করে আত্মহত্য বলে চালিয়ে দেয়ার দাবি করে আশার পিতা আলম হোসেন। মামলার বাদী আশার চাচা কলম মন্ডল বলেন, টাকা দিতে দেরী হওয়ায় শারীরক ও মানুষিক নির্যাতন করতে থাকে আমার ভাইজির উপর। আশা স্বামী সহশ্বশুর-শ্বাশরীর নির্যাতন সহ্য করে স্বামীর ঘর করতে থাকে। বিভিন্ন সময় আশা ফোনে আমাদের কাছেকান্না-কাটিকরত। আশার শুশুর বাড়ীর আস-পাশের স্থানীয়রা জানায় বিভিন্ন সময় আশার উপর নির্যাতন করত তার স্বামী তুষার ও শ্বশুর-শ্বাশুরীরা। স্থানীয় কমিশনারের নিকট থেকে জানাযায়, আশার শ্বাশুড়ী খুবই উগ্র মেজাজী, বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময় নির্যাতন করত, বলে জানতে পেরেছি। আশার ছেলের সুন্নাতী খৎতনা বাবদ ১ লক্ষ টাকা দিতে চেয়েছিলেন আশার পিতা। সেই টাকা দিতে কিছু দিন বিলম্ব হওয়ায় আশার শ্বাশুড়ী এবং স্বামীসহ নির্যাতন চালাতো বলে জানতে পেরেছি। ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসলেই জানাযাবে হত্যার রহস্য। এত নির্যাতন সহ্য করেও তাদের ঘর সংসার চলাকালিন সময়ে একটি পুত্র সন্তান আবির (৪), কন্যা সন্তানআনিশা (১) বছরজন্ম গ্রহনকরে।তারপরও আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে করিয়া টাকার জন্য বিভিন্ন সময় আমার ভাইজি আশা খাতুন কেশারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন করাসহ আত্মহত্যার প্ররোচনা দিতে থাকে। এক পর্যায়ে আসামীরা গত ০১ নভেম্বর রাত ১১ টার দিকে তুষার এর শয়ন কক্ষে আমার ভাইজি আশা খাতুনকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে। ভোর ৫ টার দিকে সংবাদ পেয়ে আমিসহ পরীবারের সকলে আসিয়া দেখি আমার ভাইজী আশা খাতুন এর লাশ আসামীদের বাড়ীতে মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। পরে কুষ্টিয়া থানা পুলিশ আসিয়া মৃত দেহ ময়না তদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনালের হাসপাতালে নিয়ে যায়। ময়না তদন্ত শেষে লাশ দাফন করা হয়। এফ আই আর নং-০৩, জিআর নং-৪৭৫ ধারা ৩০৬ পেনাল কোড। সাব ইনস্পেক্টর মোঃ জাহাঙ্গীর সেলিমতার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, তিনজনের নামে মামলা হয়েছে দুই জনকে আটক করা হয়েছে। বাকি এক জনকে আটক করা হবে। চিকিৎসকের রিপোর্ট আসার পরে চুড়ান্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন