কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের দু’টি পয়েন্টের ৬৭৭ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। হাইকোর্টে দাখিলকৃত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক।
গতকাল বুধবার বিচারপতি জে বি এম হাসান এবং বিচারপতি রাজিক আল জলিলের ডিভিশন বেঞ্চে প্রতিবেদনটি দাখিল করা হয়। প্রতিবেদন হাতে পেয়ে আদালত কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। জেলা প্রশাসকের পক্ষে অ্যাডভোকেট মোমতাজউদ্দিন ফকির এবং রিটের পক্ষে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ শুনানি করেন।
এর আগে হাইকোর্টের নির্দেশনা অগ্রাহ্য করায় গত ২৫ আগস্ট ওই জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন আদালত। রায় বাস্তবায়ন না করায় আদালতে এসে ব্যাখ্যা দিতে বলেন। এ প্রেক্ষিতে গত ১৯ অক্টোবর জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ হাইকোর্টে হাজির হন।
ওইদিন আদালতে একটি হলফনামা দাখিল করেন জেলা প্রশাসক। সেই হলফনামায় মন্ত্রিপরিষদ সচিবের একটি স্মারক যুক্ত করা হয়। তাতে বলা হয়, আদালতের আদেশ অনুসরণে উচ্ছেদ কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় ১০ অক্টোবর পুনরায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে সুগন্ধা পয়েন্ট, লাবণী ও কলাতলী সমুদ্র সৈকত এলাকায় ৪১৭টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। কিন্তু দুটি সমিতি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের আদেশ দেখায়। ওই আদেশে দেখা যায় সুগন্ধা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষে জাকির হোসেন ও অপর একজন সমুদ্র সৈকতে অবস্থিত তাদের ব্যবসা অন্যত্র সরিয়ে নিতে সময় প্রার্থনা করেন। আদালত তাদের ব্যবসা অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার জন্য সময় দেন এবং ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত তাদের উচ্ছেদ না করার আদেশ দেন। ফলে ১০ অক্টোবর দুটি সমিতির ২৩৩টি (১৪৩+৯০) দোকান উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি। তবে সরেজমিন পরিদর্শেনে দেখা গেছে দোকানদাররা তাদের মালামাল বেশিরভাগই সরিয়ে নিয়েছেন। অবশিষ্ট মালামাল নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সরিয়ে নেয়ার অঙ্গীকার করেছেন। শুনানি শেষে জেলা প্রশাসককে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়ে ৯ নভেম্বরের আদালতের আদেশ প্রতিপালনের প্রতিবেদন পেশ করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
দাখিলকৃত প্রতিবেদনের বিষয়ে ‘হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পীস ফর বাংলাদেশ’র প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক দাখিল করেছেন। সেখানে বলা হয়েছে, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বালিয়াড়িতে ২৬০ এবং সুগন্ধা পয়েন্টে ৪১৭টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে রুল নিষ্পত্তি করেন হাইকোর্ট। জেলা প্রশাসককে আদালত অবমাননার দায় থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
এই আইনজীবী আরও জানান, অপর এক আদেশে আদালত বিবাদীদেরকে কক্সবাজার ‘সী বিচ’ এর বৈশিষ্ট্য রক্ষায় আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে সবসময় সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়ে ভবিষ্যতে যাতে আর কেউ উচ্ছেদ করা এলাকায় দখল বা স্থাপনা নির্মাণ করতে না পারে, সে ব্যপারে সব সময় ভিজিলেন্স থাকতে বলেছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন