পারিবারিক কলহের জেরে শ্যালক আবু সালেহের (২০) দায়ের কোপে দুলাভাই নুর নবীর (৩০) হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন মা মোক্তামাইনা বেগম (৪৮)। এ ঘটনায় শ্যালকের দুই সহযোগীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন এলাকাবাসী। গুরুতর আহত মা ও ছেলেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বুধবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের ডিকসো মোল্লাপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) নুর নবীর চাচা নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে ছয় জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেছেন।
আটক ব্যক্তিরা হলেন- সৈয়দপুর শহরের একটি হার্ডবোর্ড কারখানার শ্রমিক ও উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের হাজীপাড়ার মৃত বুলু মামুদের ছেলে নুর আমিন (১৮) এবং ওই ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়ার আব্দুর রহিমের ছেলে ফিরোজ ইসলাম (২০)। তিনি পেশায় একজন ভ্যানচালক।
পুলিশ জানায়, সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের ডিকসো মোল্লাপাড়ার হাফিজুল ইসলামের ছেলে নুর নবীর সঙ্গে বিয়ে হয় একই উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়ার আবেদ আলীর মেয়ে আবেদা খাতুনের (২৪)। বিয়ের পর থেকে স্বামী ও শাশুড়ির সঙ্গে মতবিরোধ চলছিল গৃহবধূ আবেদা খাতুনের। এ নিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়। সম্প্রতি বিষয়টি থানা পর্যন্ত গড়ালে স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে পুলিশ তা মীমাংসা করে দেয়।
পরে আবারও তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে গৃহবধূ আবেদা খাতুন দেড় মাসের শিশুসন্তান নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান। এরই জেরে ওই গৃহবধূর ভাই আবু সালেহ তার দুই সহযোগী নুর আমিন ও ফিরোজ ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় দুলাভাই নুর নবীর বাড়িতে যান। সেখানে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে শ্যালক আবু সালেহ সঙ্গে থাকা ধারালো দা দিয়ে দুলাভাইকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। এতে নুর নবীর ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এ সময় ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর জখম হন মা মোক্তামাইনা বেগম। তাদের আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। কিন্তু তার আগেই শ্যালক আবু সালেহ সেখান থেকে সটকে পড়েন। তবে গ্রামবাসী দুই সহযোগীকে ধাওয়া দিয়ে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। আহত মা ও ছেলেকে প্রথমে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে নেন স্থানীয়রা। পরে তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় একটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। অন্যদিকে ঘটনার মূল হোতা শ্যালক আবু সালেহসহ অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তিনি জানান, ঘটনায় ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্রটি রক্তাক্ত অবস্থায় ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন