মুসলমানদের পাঠ্যতালিকায় বিবর্তন থাকতে পারে না। চার্লস ডারউইন এর বিবর্তনবাদে সৃষ্টি কর্তাকে অস্বীকার করা হয়েছে। তার থিউরিতে মানুষ এসেছে বানর থেকে, অথচ পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে মানুষের স্রষ্টা স্বয়ং আল্লাহ। ডারউইনের বিবর্তনবাদ অধ্যয়ন করা হারাম। ধর্মীয় শিক্ষা বাদ দিয়ে আদর্শ রাষ্ট্র সোনার বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়। আজ জুমার খুৎবা পূব বয়ানে পেশ ইমাম এসব কথা বলেন।
আজ নগরীর মহাখালীস্থ মসজিদে গাউছুল আজমে জুমার খুৎবা পূর্ব বক্তব্যে খতিব প্রিন্সিপাল মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, মুসলনমানদের ঈমান আনার পর প্রথম কাজ হচ্ছে সে পড়বে, সে শিখবে জানবে। এটাই মহাগ্রন্থ আল কোরআনের প্রথম নির্দেশ। যেমন আল্লাহ বলেন, ইক্বরা-পড়। সূরা আলাক : ০১। আর এ কাজটি অবশ্য কর্তব্য। প্রিয়নবী (সা.) বলেন, ইলম অর্জন করা সকল মুসলমানের জন্য ফরজ-ইবনে মাজাহ। দ্বীন চর্চার জন্য যে ইলম আছে তা অবশ্যই সকলকে শিখতে হবে। খতিব বলেন, মুসলমানদের শিক্ষা কি ভাবে হবে, এর সূত্র কী হবে তা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট। আল্লাহ তায়া’লা পবিত্র কোরআনের প্রথম নির্দেশের মধ্যেই তা স্পষ্ট করেছেন। তিনি বলেন পড় তোমার রবের নামে। সূরা আলাক : ০১
খতিব যে শিক্ষা আল্লাহকে স্বীকার করে না, আল্লাহর পরিচয় অস্বীকার করে কিংবা তাঁর সাথে শরীক করতে শেখায় তা অধ্যয়ন করা, অর্জন করা হারাম। মুসলিম তা করতে পারে না। যেমন চার্লস রবিন ডারউইন এর বিবর্তনবাদ। মুসলমানদের পাঠ্যতালিকায় বিবর্তনা থাকতে পারে না। চার্লস ডারউইন এর বিবর্তনবাদে সৃষ্টি কর্তাকে অস্বীকার করা হয়েছে। তার থিউরিতে মানুষ এসেছে বানর থেকে, অথচ পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে মানুষের ¯্রষ্টা স্বয়ং আল্লাহ। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন : হে মানব সমাজ, তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর, যিনি তোমাদের এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গীনীকে সৃষ্টি করেছেন, আর বিস্তার করেছেন তাদের দুজন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী। সূরা নিসা : ০১
হে মানব, আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিত হও। সূরা হুজুরাত : ১৩।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি রুহুল আমিন আজ জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, হাশরের ময়দানে চারটি প্রশ্নের জবাব না দিয়ে কেউ এক কদমও নড়তে পারবে না। প্রথম প্রশ্ন হবে হায়াতের জিন্দেগী কী ভাবে কাটিয়েছে। দ্বিতীয় প্রশ্ন হবে যৌবন কাল কী ভাবে অতিবাহিত করেছে। দুনিয়াটা হচ্ছে পরীক্ষার ঘর। পরীক্ষার পর আল্লাহ মূল্যায়ন করবেন। খতিব বলেন, কিয়ামতের ভয়াবহতা যদি কেউ বুঝতো তা’হলে দুনিয়ার ভোগ বিলাসের কথা ভুলে যেতো। যারা আখেরাতের প্রস্তুতি নিবে তারা কঠিন হাশরের দিনে সবল থাকবেন। খতিব বলেন, গুনাহের জন্য আল্লাহর কাছে বেশি বেশি তাওবাহ ইস্তিগফার করতে হবে। তিনি বলেন, শেষ রাতে মহান আল্লাহ প্রথম আসমানে নেমে আসেন এবং কে আছো আমার কাছে ক্ষমা চাইবে আমি তাকে ক্ষমা করে দিবো। খতিব বলেন, সন্তানদের ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়া যাবে না। দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণের জন্য সন্তানদের সুশিক্ষা দিতে হবে। তিনি বলেন, কিয়ামতের দিন আল্লাহ ৭ ব্যক্তিকে আরশের নীচে ছায়া দান করবেন। সে দিকে আমাদের নজর দিতে হবে। বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন বলেছেন, ধর্মীয় শিক্ষা বাদ দিয়ে আদর্শ রাষ্ট্র সোনার বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়। ইসলামী শিক্ষার অভাবেই দেশে অপরাধ প্রবণতা দিন দিন বেড়ে চলছে। সবধরনের অপরাধ নির্মূলে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। কোরআন ও সুন্নাহর সহীহ দীক্ষা পেলে মানুষের মধ্যে আল্লাহর ভয় সৃষ্টি হবে। দেশে খুন, সন্ত্রাস, ধর্ষণ, দুর্নীতিসহ সকল অপকর্ম বন্ধ হবে। ইতিহাস সাক্ষী আল্লাহ প্রদত্ত কোরআনী শিক্ষাব্যবস্থা যা মুহাম্মদ (সা.) কে দিয়ে পাঠানো হয়েছিল তা প্রয়োগে তিনি আইয়্যামে জাহিলিয়্যাতের বর্বর জাতিকে সোনালী জাতিতে রূপান্তরিত করতে সক্ষম হয়েছেন। আজ রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর রহমতিয়া জামে মসজিদে জুমার বয়ানে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, আদর্শ সমাজ গঠনে প্রাইমারী স্তর থেকে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন। কেননা ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থা ছাড়া আদর্শ সমাজ গঠন করা সম্ভব নয়। তাই মুসলিম প্রধান দেশ হিসেবে দেশ ও জাতির স্বার্থে সরকারকেই ইসলামি শিক্ষা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন