শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বিএনপি স্বাধীনতাবিরোধীদের বিচার চায় এটা বছরের সেরা কৌতুক -ওবায়দুল কাদের

| প্রকাশের সময় : ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি স্বাধীনতাবিরোধীদের বিচার চেয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার সঙ্গে তামাশা করেছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন যে, ‘বিএনপি স্বাধীনতাবিরোধীদের বিচার চায়’। এটা বছরের সেরা কৌতুক। এটা মিথ্যাচার, রসিকতা ও নির্মম তামাশা ছাড়া কিছু নয়।
স্বাধীনতার ৪৫ বছর পূর্তি ও মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে আমার কাছে অবাক লাগে, পত্রিকায় দেখলাম বিএনপির ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি স্বাধীনতাবিরোধীদের বিচার চায়। এটা এ বছরের সেরা  কৌতুক নয়? এটা কি মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার সঙ্গে তামাশা নয়? এটা কি নির্মম রশিকতা নয়? তিনি বলেন, আজকে ফখরুল ইসলামের মুখে এ কি শুনি? ‘বানরে সঙ্গীত গায়, শিলা জলে ভাসে।’ ভালইতো লাগছে, আর কত মিথ্যাচার, আর কত নিষ্ঠুর তামাশা, আর প্রতারণা করবেন?
শেখ হাসিনাকে নিয়ে বাংলাদেশ বিমানের জরুরী অবতরণে হত্যার ষড়যন্ত্র আছে কিনা দ্রুত তা বের করা হচ্ছে জানিয়ে কাদের বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্যে বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানাকে যে বুলেট ইয়াতিম করেছে, সে বুলেট আপনাকেও বিধবা করেছে। জিয়াউর রহমান যদি বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের বিচার করতেন, তাহলে আপনাকে স্বামীহারা হতে হতো না।
খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে কাদের আরও বলেন, যদি বঙ্গবন্ধু হত্যার খুনিদের আপনার স্বামী পুরস্কৃত না করতো, পুনর্বাসিত না করতো, তা হলে আরেকটা খুনি চক্র এসে জিয়াউর রহমানকে হত্যা করার সাহস দেখাতো বলে আমার বিশ্বাস হয় না।
তিনি বলেন, আল্লাহর অশেষ রহমতে শেখ হাসিনা ২০ বার তার জীবনের উপর হামলা হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন। সর্বশেষ বিমানের যে ঘটনা, এটা এখন রহস্য উন্মোচিত হতে শুরু করেছে। এখানেও শেখ হাসিনা হত্যার কোন ষড়যন্ত্র আছে কিনা, সেটা অচিরেই উন্মোচিত হবে। এভাবে বারে বারে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, তিনি বাংলার পতাকাকে ধরে আছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধকে তিনি ধরে রেখেছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেয়া সংলাপের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, হত্যা, হত্যাকে ডেকে আনে। রক্ত রক্তকে ডেকে আনে। খুন খুনকে ডেকে আনে। আপনার স্বামী বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করলেন। বিদেশী দূতাবাসে চাকরি দিলেন।
কার সঙ্গে সংলাপ? তার পরেও গত নির্বাচনে সংলাপ করতে চেয়েছিলাম। এই কারণে যে সবার আগে বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা কি আমন্ত্রণ জানাননি? গণভবনে কি ৫ জানুয়ারী নির্বাচনের আগে  বেগম জিয়াকে আমন্ত্রণ করেননি?
তিনি বলেন, সেদিন যদি বেগম জিয়া সেখানে যেতেন, তবে বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাস ভিন্ন হতো। শেখ হাসিনার ডাকে গত নির্বাচনে আপনারা সারা দিলেন না। নির্বাচন করলেন না। সে ভুলের খেসারত আপনারা দিচ্ছেন। মানুষ পুড়িয়ে মারলেন। আজকে তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা কি শোভা পায়?
বিএনপি প্রসঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি বাংলাদেশ নালিশ পার্টি। তারা ভারতের নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফলের আগেই ভারতীয় দূতাবাসে ফুল ও মিষ্টি নিয়ে গিয়েছিলো। তারা মনে করেছিলো মোদি ক্ষমতায় এসেই বেগম জিয়াকে ক্ষমতার মসনদে বসাবে। কিন্তু  সেখানেও ব্যর্থ হন তারা। তাদের সে বাসনা পূর্ণ হয়নি। এরপর তারা আটলান্টিকের ওইপাড়ে আমেরিকার নির্বাচনের উপর ভরসা করেছিলো। তারা মনে করেছিলো হিলারী জয়লাভ করবেন। এজন্য সেদিন সকাল বেলা রাজধানীর সকল মিষ্টির দোকান থেকে মিষ্টি ও ফুলের দোকান থেকে সব ফুল কিনে নিয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু তাদের সেই বাসনাও পূর্ণ হয়নি। ট্রাম্প ট্রাম্পকার্ড দিয়ে বিজয়ী হলেন। এখন তারা সকল মনোবাসনা ব্যর্থ হয়ে বিদেশীদের কাছে নালিশ করছে।
ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর উদ্দেশ্যে কাদের বলেন, আমি সেই ছাত্রলীগকে চাই না, যারা হলের সিট ভাগাভাগি করে। নিজেদের দল ভারি করার জন্য শিক্ষকদের উপর চাপ দিয়ে ভর্তি বাণিজ্য করে। এগুলো বাদ দিয়ে তাদের পড়াশোনা করতে হবে। ছাত্রলীগ ছাত্রলীগের শত্রু না হয়ে যায়।
ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ শাখার আহ্বায়ক তাসলিমা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো ছিলেন আওয়ামী লীগের মহিলা ও শিশু বিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা, ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ গায়ত্রী চ্যাটার্জী, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক জাকির  হোসাইন প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন