আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, “মীর্জা ফকরুল ইসলাম আগে আপনি বলতেন। এখন তুমি বলে। আগামী মিটিংয়ে হয়তো তুই বলবে। এ সব তিনি কেন বলেন ? অর্ন্তজালায়। ওরে জ¦ালা! শেখ হাসিনার উন্নয়নের অর্ন্তজালায় ভুগছেন তিনি”। তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে ১৫ই আগষ্টের কুশিলব, মীরজাফর ও পলাশীর বিশ^াসঘাতকের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, “সেদিন ইতিহাসের মহানায়ক মহাবীর বঙ্গবন্ধুর নাম ওরা মুছে দিতে চেয়েছিল, শিশু রাসেলকে হত্যা করেছিল। মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল ও জামালকে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে চিরতরে স্তব্ধ করে দিতে চেয়েছিল, কিন্তু পারেনি। ওবায়দুল কাদের রোববার দুপুরে ঝিনাইদহ শহরের পানি উন্নয়ন বোর্ড মাঠে জেলা আওয়ামীলীগের ত্রী-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতাদানকালে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, কে বলেছে বঙ্গবন্ধু নেই ? তিনি আছেন কৃষকের লাঙ্গলের ফালে, ভাটিয়ালি গানে, পাখির কলরবে। যতদিন সমুদ্রের গর্জন থাকবে, তোমার স্মৃতি কেউ মুছে দিতে পারবে না। তোমার নাম মুছে ফেলার সাধ্য কারো নেই। লালনের স্মৃতি বিজড়িত এই ঝিনাইদহের বিশাল সমাবেশ সে কথায় প্রমান করে। তিনি বলেন, এতো ফ্লাই ওভার, মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু টানেল। দেশবাসি আর কি চাই? এ সব উন্নয়ন মীর্জা ফকরুলদের সহ্য হয়না। তাই ওদের মন খারাপ। ওবায়দুল কাদের কাদের বলেন, ভোট চুরি ও ভুয়া ভোটারের বিরুদ্ধে খেলা হবে। লুটপাট দুর্নীতির বিরুদ্ধে খেলা হবে। আপনারা প্রস্তুত হয়ে যান। এই খেলায় বিএনপির আন্দোলন ও নির্বাচনের পতন হবে। বিএনপি মহাসচিবকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, দুবাই থেকে আনা টাকার বস্তা নিয়ে আপনি মাঠে নেমেছেন। আকাশে বাতাসে এখন টাকা ওড়ে। বরিশাল ও ফরিদপুর সমাবেশে টাকা ওড়ে। এখন থেকেই মনোনয়ন বানিজ্য ও এমপি মন্ত্রী কেনাবেচা শুরু করেছে বিএনপি। কিন্তু আওয়ামীলীগ এসব হতে দেবে না। তত্বাবধায়ক সরকার মামা বাড়ির আবদার। তত্বাবধায়ক ভুলে যান। সন্ত্রাস করে, আগুন দিয়ে সরকারের পতন ঘটানো যাবে না। তিনি তারেক রহমানের উদ্দেশ্যে বলেন, আর রাহজনীতি করবো না এমন মুচলেকা দিয়ে লন্ডনে পালিয়েছেন। অর্থ পাচার মামলায় দন্ড নিয়ে একজন পলাতক আসামীকে যদি নেতা বানানো হয়, তবে খেলা হবে। তিনি ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, নেত্রী বলেছেন বিলাসবহুল সম্মেলন করা যাবে না। সাশ্রয়ী হতে হবে। গরীবের পাশে দাড়াতে হবে। অপচয় করা যাবে না। অথচ বিলবোর্ড বানিয়ে সবাইকে নায়ক বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এতো আয়োজন অথচ হেলিকপ্টার থেকে নেমে দেখি আমার নামের বানান ভুল। ওবায়দুল কাদের বলেন, দলের কারা কারা দুর্নীতি করে আমরা জানি। সময় আছে সংশোধন হয়ে যান। নইলে খবর আছে। সমাবেশে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আফম বাহাউদ্দীন নাছিম বলেন, আমরা রাজপথে আছি, থাকবো। বিএনপির হুংকারে আওয়ামীলীগ ভীত নয়। বিএনপি জামায়াতের আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমরা রাজপথে লড়বো। তাদের প্রতিহত করবো। তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপি চাঁদাবাজীর টাকায় সমাবেশ করছে। দলের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, সারা দুনিয়ায় যখন মন্দা চলছে, তখন শেখ হাসিনার দক্ষতা ও সাহসিকতায় বাংলাদেশ ঘুরে দাড়িয়েছে, আমাদের আলোর পথ দেখাচ্ছে। বাঁধার পাহাড় ডিঙ্গিয়ে আমরা সোনার বাংলা গড়বো। তিনি বলেন, স্বাধীনতা বিরোধীদের মুখপাত্র হিসেবে মীর্জা ফকরুল গলা ফাটাচ্ছেন। অথচ তার পিতা পাকিস্থানীদের দোসর ছিল। রোববার সকালে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ। জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই এমপির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুর সঞ্চলনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, শফিকুল আজম খান চঞ্চল, আনোয়ারুল আজিম আনার, তাহজিব আলম সিদ্দিকী সমি, কেন্দ্রীয় নেতা এ্যাডঃ আমিরুল আলম মিলন এমপি, পারভীন জামান কল্পনা ও গ্লোরিয়া সরকার ঝর্না এমপিসহ ঝিনাইদহ জেলা উপজেলার নেতৃবৃন্দ। সম্মেলন শেষে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। দলের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক অনুষ্ঠানে নতুন কমিটি ঘোষনার প্রস্তাব করলে ওবায়দুল কাদের নেত্রীর নির্দেশে পুরানো কমিটির সভাপতি আব্দুল হাইকে সভাপতি ও সাইদুল করিম মিন্টুকে বহাল রাখেন। উল্লেখ্য সকাল ৭টা থেকে সম্মেলন স্থলে মানুষ আসতে থাকেন। সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যে ঝিনাইদহ শহরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাঠ কানায় কানায় পুর্ন হয়ে যায়। এক পর্যায়ে লোক সমাগম উপচে পড়ে আশপাশের রাস্তায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন