বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

বাবার লাশ বাড়ীতে রেখে পরীক্ষা হলে ছেলে!

বিস্মিত পরীক্ষা কেন্দ্রের অন্যান্য পরীক্ষার্থী

কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৫ নভেম্বর, ২০২২, ৬:২৬ পিএম

সোমবার মধ্যরাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতে মারা গেছেন বাবা। এদিকে দুপুরে এইচ এস সি পরীক্ষা। শেষ পর্যন্ত বাবার লাশ বাড়িতে রেখে অশ্রুসজল চোখে পরীক্ষা দিলেন শুভ চন্দ্র নামের এক শিক্ষার্থী।পরীক্ষার অংশ নিতে গিয়ে শুভ চন্দ্র এক হাতে চোখ মুছছেন, অন্য হাতে কলম দিয়ে লিখছেন পরীক্ষার খাতায়। মাঝে মধ্যেই ফুঁপিয়ে কেঁদেও উঠেছেন। মঙ্গলবার কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সাইফুর রহমান সরকারি কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে এমন দৃশ্য দেখা যায়। তার পারিবারিক খবর শুনে অন্যান্য পরীক্ষার্থী বিস্মিত হয়েছেন।

এমন ঘটনাটি হলো উপজেলার ভাঙ্গাড়ামোর ইউনিয়নের রাবাইটারী গ্রামে। ঐ পরীক্ষার্থীর নাম শুভ চন্দ্র । তার বাবা নাম সুভল চন্দ্র (৫০)। তিনি সোমবার মধ্যরাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতে মারা যান ।

জানা যায়, মঙ্গলবার বাংলাদেশ কারিগরি (বিএমটি) শিক্ষা বোর্ডেও অধীনে সাইফুর রহমান সরকারি কলেজে বিকাল বেলা ব্যবসায় গনিত ও পরিসংখ্যান বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই তাদের অভিভাবককে নিয়ে আসেন পরীক্ষা কেন্দ্রে । দু”চোখে অশ্রু নিয়ে শুভকে নিয়ে আসেন কেন্দ্রে তার কাকা ভবেশ চন্দ্র । পরীক্ষার্থী শুভ চন্দ্রের চোখে জল দেখে অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন। কেউ কেউ কান্নার কারণও জানতে চেয়েছেন। এর কিছুক্ষণ পর শুভর বাবা মারা যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে সহপাঠীরা তাকে সান্তনা দেয়ার চেষ্টা করেন। পরে শুভ পরীক্ষা কেন্দ্রের ৫নং কক্ষে পরীক্ষার হলে গিয়ে বসেন। দুইটা থেকে ৪টা পর্যন্ত পরীক্ষা হলে বসে পরীক্ষা দেন সে। তার রোল নং ২৯৮২৮৩।

শুভ'র সহপাঠী রফিকুল ইসলাম জানান, শুভ পরীক্ষা দিতে গিয়ে বাবার শোকে পুরো সময়ই কেঁদেছে আর লিখেছে খাতায়। আর এ দৃশ্য দেখে তার সহপাঠী, শিক্ষকরা শোকাহত হয়েছেন।

শুভর কাকা ভবেশ চন্দ্র জানান, সোমবার রাত ১২টার দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শুভর বাবা বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। বাবাকে হারানোর পর ভেঙে পড়লেও কাঁদতে কাঁদতে পরীক্ষার হলে আসেন শুভ চন্দ্র। দুপুর আড়াইটার দিকে শুভর বাবার লাশ পারিবারিক ভাবে দাহন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এ সাইফুর রহমান সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব মো.জাকির হোসেন জানান, পরীক্ষার্থী শুভ চন্দ্রের বাবার মৃত্যুর বিষয়টি আমরা শুনেছি। আমরা তাকে সান্তনা দিয়ে পরীক্ষা দিতে উৎসাহ দিয়েছি। তবে তার জন্য কোনো বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। সে সবার সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই পরীক্ষা দিয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন