সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সউদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে দায়মুক্তি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন। সউদী শাসকদের কট্টর সমালোচনা করা জামাল খাশোগি ২০১৮ সালে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সউদী কনস্যুলেটের ভেতর হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।
জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনের একটি আদালতে মামলা চলছে। সেই মামলার অভিযুক্তদের তালিকা থেকে যুবরাজ মোহাম্মদের নাম বাদ দেয়া হবে। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
এর ব্যাখ্যা হিসেবে বলা হয়েছে, যুবরাজ মোহাম্মদ যেহেতু সউদীর প্রধানমন্ত্রী সে কারণে যুক্তরাষ্ট্রে তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের বিচার সম্ভব না।
২০১৮ সালে জামাল খাশোগিকে হত্যার পর তার মরদেহ এসিড প্রয়োগ করে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের বিশ্বাস, ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান নিজে এ হত্যাকাণ্ডের হুকুম দিয়েছিলেন।
এদিকে প্রিন্স মোহাম্মদকে দায়মুক্তি দেয়ার পর এর সমালোচনা করেছেন জামাল খাশোগির বাগদত্তা হ্যাটিস চেঙ্গিজ। তিনি টুইটে বলেছেন, জামাল আজ আবারও মারা গেল। আমরা ভেবেছিলাম যুক্তরাষ্ট্রে হয়তো বিচারের আশার আলো দেখব। কিন্তু আবারও অর্থই জিতল।
বিবিসি জানিয়েছে, জেঙ্গিস ও খাশুগজি প্রতিষ্ঠিত মানবাধিকার গোষ্ঠী ‘ডেমোক্র্যাসি ফর দ্য আরব ওয়াল্ড নাউ’ এ খুনের জন্য সউদী যুবরাজের কাছে অনির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণ চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মামলা দায়ের করেছিল।
অভিযোগে ‘অপহরণ, আটকে রাখা, মাদক প্রয়োগ ও নির্যাতন এবং যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী সাংবাদিক ও গণতন্ত্রের সমর্থক খাশুগজিকে হত্যার দায়ে’ সউদী নেতা মোহাম্মদ ও তার কর্মকর্তাদের অভিযুক্ত করা হয়।
২০১৭ সালে রাজকুমার মোহাম্মদকে তার বাবা সউদী আরবের বাদশা সালমান বিন আব্দুলআজিজ আল সউদী যুবরাজ হিসেবে অভিষিক্ত করেন। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে মোহাম্মদকে (৩৭) প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র লিখিত এক বিবৃতিতে বলেছেন, “প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইনের দীর্ঘস্থায়ী নীতি অনুযায়ীই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনি এ সিদ্ধান্তটি নিয়েছে। মামলার অভিযোগের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।”
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের আইনজীবী ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়ার জেলা আদালতে পেশ করা এক নথিতে বলেছেন, “যুবরাজ মোহাম্মদ একটি বিদেশি সরকারের বর্তমান প্রধান হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের বিচারের আওতা থেকে রাষ্ট্রপ্রধানের দায়মুক্তি পান। রাষ্ট্রপ্রধানের দায়মুক্তি মতবাদ সুপ্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক প্রথা।”
তবে এই দায়মুক্তি দেওয়ার মাধ্যমে বাইডেন প্রশাসন যুবরাজ মোহাম্মদকে নির্দোষ হিসেবে রায় দিচ্ছে না বলে জোর দিয়ে জানিয়েছে। সূত্র : বিবিসি, ভোয়া, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন