আগামী রোববার সচিব সভা ডাকা হয়েছে। অর্থনৈতিক, খাদ্য ও জ্বালানি চলমান সংকট, সরকারি কাজে আর্থিক বিধিবিধান অনুসরণ করা উপায় খুঁজতে প্রশাসনের সব সচিবকে নিয়ে সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে প্রশাসনের ভূমিকা এবং সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বেশ কয়েকজন পুলিশের কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর ঘটনায় প্রশাসনজুড়ে তোলপাড়। প্রশাসনে কি অবস্থা বিরাজ করছে। প্রশাসনে সুশাসন নিশ্চিত ও শুদ্ধাচারসহ বেশ কিছু দাবিও প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলতে এসব কর্মকর্তারা পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
আগামী রোববার মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে দুপুর ১টায় সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে এ সভা শুরু হবে। করোনা মহামারির পর এবারই প্রথম প্রধানমন্ত্রী সশরীর সচিবালয়ে সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়াল সভায় অংশ নেন। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে সব সচিব উপস্থিত ছিলেন। এর আলোচ্যসূচিতে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা, অর্থনীতি, জ্বালানি সংকট মোকাবিলাসহ গুরুত্বপূর্ণ ১০টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক অতিরিক্ত সচিব ইনকিলাবকে বলেন, সচিব সভায় দেশে চলমান খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে। সামনে কি ধরনের চ্যালেঞ্জ আছে, সেসব চ্যালেঞ্জ সমাধানে কি করণীয়, তা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কি করনীয় সে বিষয়ে দিকনিদের্শনা দিবেন প্রধানমন্ত্রী।
সাবেক সিনিয়র সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান ইনকিলাবকে বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে সব সচিবকে নিয়ে সরকার প্রধানের বৈঠকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে চলমান সংকট নিয়ে আলোচনা হতে পারে। আবার আলোচ্য সূচির বাইরেও প্রশাসনের সচিবও অন্যান্য কর্মকর্তাদের সুযোগ সুবিধান নিয়ে আলোচনা হবে। এ বৈঠক থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবারের সচিব সভায় ১০টি আলোচ্য সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। যার মধ্যে ১ নম্বরে আছে দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ বিষয়টি। বিশ্ব খাদ্য সংস্থাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বিশ্বব্যাপী খাদ্যসংকটের আশঙ্কা করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে আগে থেকেই মিতব্যয়ী হতে আহ্বান জানিয়েছেন। এবারের সচিব সভায় বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে দেশের অর্থনীতিকে সুসংহত রাখার বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। দেশে এখন অর্থনৈতিক সূচকের প্রায় সব কটিই খারাপ অবস্থায় রয়েছে। দেশের মূল্যস্ফীতি এখন প্রায় এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ। মূল্যস্ফীতি নিয়ে ভবিষ্যতেও স্বস্তির খবর নেই। সচিব সভায় অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকের হালনাগাদ তথ্য নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। সচিব সভায় জ্বালানিনিরাপত্তা নিশ্চিত নিয়ে আলোচনা হবে। সচিব সভায় প্রয়োজনীয়তার ওপর ভিত্তি করে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা হবে। আলোচ্য সূচিতে বলা আছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা, কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সারের জোগান নিশ্চিত করা, পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় নিয়ে আসতে করণীয় ঠিক করা, সরকারি কাজে আর্থিক বিধিবিধান অনুসরণ করা, সরকারি সেবা দিতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বিষয়ক পরিকল্পনা, ভূমিকম্প, অগ্নিকাণ্ড, বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি বিষয়ে পর্যালোচনা এবং সুশাসন ও শুদ্ধাচার নিয়ে আলোচনা।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক কর্মকর্তা চলমান বিষয়ে সচিব সভা থেকে গুরুত্বপূর্ণ অনেক সিদ্ধান্ত আসবে। সেসব সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নেরও তাগিদ থাকবে।
##
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন