প্রাণঘাতী ভ‚মিকম্পের পর জাভা দ্বীপের পশ্চিমাঞ্চলীয় একটি শহরের ধ্বংসস্ত‚পের নিচে আটকা পড়া মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়ছেন ইন্দোনেশিয়ার উদ্ধারকর্মীরা। সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ২১ মিনিটে পর্বতবেষ্টিত সিয়ানজুর শহরের কাছে ভ‚পৃষ্ঠের মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ভ‚মিকম্পটির উৎপত্তি হয়। ভ‚মিকম্পটি ৭৫ কিলোমিটার উত্তরপশ্চিমে রাজধানী জাকার্তায়ও অনুভ‚ত হয়, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ড স্থায়ী প্রবল কম্পনে সিয়ানজুরের আতঙ্কিত বাসিন্দারা ঘরবাড়ি ছেড়ে বাইরে বের হয়ে আসে, এ সময় বহু ভবন ধসে পড়ে। রাতেই সিয়ানজুরের এক হাসপাতালের পার্কিং এলাকা আহতদের দিয়ে ভরে যায়, অনেকে সেখানেই অস্থায়ীভাবে তৈরি তাঁবুতে চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসা কর্মীরা টর্চের আলোতে আহতদের ক্ষত সেলাই করে। ধসে পড়া ভবনগুলোর নিচে আটকাপড়াদের উদ্ধারের চেষ্টায় জরুরিবিভাগের কর্মীরা রাতভর কাজে করে যায়। যে এলাকাটিতে ভ‚মিকম্পটির উৎপত্তি হয়েছে সেটি ঘনবসতিপূর্ণ এবং ভ‚মিধস প্রবণ। যে সব বাড়ির অবকাঠামো দুর্বল ছিল সেগুলো ধসে পড়েছে। বিবিসি জানিয়েছে, ঠিক কতোজন নিহত হয়েছে তা মঙ্গলবার দুপুর গড়িয়ে যাওয়ার পরও পরিষ্কার হয়নি। ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দুর্যোগ প্রশমন সংস্থা (বিএনপিবি) জানিয়েছে, তাদের তথ্য অনুযায়ী ১০৩ জন নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই ধ্বংসস্ত‚পের নিচে চাপা পড়ে মারা গেছে। কিন্তু পশ্চিম জাভার গভর্নর রিদওয়ান কামিল নিহতের সংখ্যা ১৬২ বলে জানিয়েছেন যা যাচাই করা যায়নি। বিএনপিবি জানিয়েছে, আরও ৩৯০ জন আহত হয়েছে এবং ওই অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ৭০০০ লোককে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। এখনও প্রায় ২৫ জন ভেঙ্গে পড়া ভবনগুলোর ধ্বংসস্ত‚পের নিচে চাপা পড়ে আছে বলে জানিয়েছে তারা। এর আগে সিয়ানজুরের জেলা প্রশাসক হেরমান শুহেরমান জানান, নিহতদের মধ্যে ৪০ জন শিশু আর অন্তত ৭০০ জন আহত হয়েছে, যাদের অনেকেরই পড়ন্ত বস্তুর আঘাতে হাড় ভেঙ্গে গেছে। এ ভ‚মিকম্পে মোট ১৩০০ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং আরও অনেকে এখনও ‘বিচ্ছিন্ন এলাকাগুলোতে আটকা পড়ে আছে’ বলে জানিয়েছেন গভর্নর কামিল। সময়ে সঙ্গে সঙ্গে হতাহতদের সংখ্যা আরও বাড়বে, কর্মকর্তারা এমন আশঙ্কা করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। ইন্দোনেশিয়া পুলিশের মুখপাত্র দেদি প্রাসেতিও রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা অন্তারাকে বলেছেন, উদ্ধার অভিযানে সহায়তা করার জন্য মঙ্গলবার সকালে কয়েকশ পুলিশ সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে। রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন