স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বসবাসরত মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফের ঘোষণা দিয়েছেন ডিএসসিসি মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে একাত্তরের মহান মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে মেয়র সাঈদ খোকন এ ঘোষণা দেন।
উল্লেখ্য, বর্তমানে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে বসবাসরত মুক্তিযোদ্ধাদের এক হাজার বর্গফুট বাসার হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফ রয়েছে। এটি বাড়িয়ে দেড় হাজার বর্গফুটের বাসার হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফের দাবি করেন মুক্তিযোদ্ধারা। তাদের এ দাবির প্রেক্ষিতে মেয়র উপরোক্ত ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ঢাকার প্রতিটি কবরস্থানে বিশেষ ব্যবস্থা রাখা এবং উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে সঙ্গে নিয়ে দুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একটি তহবিল গঠনের ঘোষণাও দেন তিনি। সাঈদ খোকন বলেন, যারা একাত্তরে রক্ত দিয়ে এ দেশ স্বাধীন করেছেন তাদের আবার দাবি থাকবে কেন? এই সামান্য হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফের জন্য তারা কেন দাবি জানাতে যাবে। এটা আমাদের জন্য লজ্জার। আমাদের উচিত স্ব-উদ্যোগে এটা মওকুফ করা। তাই আমি মুক্তিযোদ্ধাদের হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফের ঘোষণা দিচ্ছি।
ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ঢাকাকে আজ বসবাসের অনুপযোগী শহর হিসেবে দেখা হচ্ছে। আপনারা (মুক্তিযোদ্ধারা) রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনেছেন। আপনারা রক্ত দিয়ে এ দেশ স্বাধীন করেছেন, আপনাদের সন্তান হিসেবে আমরা কেন এই শহরকে বসবাসযোগ্য করতে পারব না। আমরা অবশ্যই ঢাকাকে বাসযোগ্য শহর হিসেবে গড়ে তুলব।
খোকন বলেন, বাংলাদেশ মৃত্যুঞ্জয়ী দেশ। এদেশে বিভিন্ন সময়ে জীবন-মৃত্যু’র মুখোমুখি দাঁড়াবার চ্যালেঞ্জ এসেছিল। কখনো দুর্ভিক্ষ, কখনো অপরাজনীতি, আবার কখনো ধর্মের নামে জঙ্গিবাদ এসেছে। এদেশে স্বৈরশাসন মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি বিনষ্ট করে দিয়ে গেছে। আজ দেশে শীর্ষ ৫০ জন ধনীর তালিকা হয়। কোথায় মুক্তিযোদ্ধার নাম? ধনীর তালিকায় আপনাদের নাম থাকতে হবে।
সাঈদ খোকন আরো বলেন, দুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন তহবিল গঠন করবে। আমরা দুই ভাই (ঢাকার দুই মেয়র) মিলে আলাপ আলোচনা করে এ তহবিল কীভাবে সবল করা যায় তা দেখবো। আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কবরের ব্যবস্থা করেছি। এরই মধ্যে জুরাইন কবরস্থানে বিশাল অংশ রেখেছি। আপনারা যেখানেই চান সেখানেই ব্যবস্থা করে দয়া হবে। আপনাদের এই চাওয়া আমাদের লজ্জিত করছে।
অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক বলেন, সব কবরস্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কবর সংরক্ষণ থাকবে। আপনার বিচ্ছিন্নভাবে না থেকে একসঙ্গে আসেন, আমাদের সঙ্গে কথা বলেন। মেয়রের হাতে কাজ রয়েছে, যা আমরা করতে পারি এমন বিষয় আমাদের জানান। আমরা দুই মেয়র মিলে তা পূরণের চেষ্টা করবো।
আনিসুল হক বলেন, আমি সরাসরিভাবে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান শুধু বক্তৃতা দিয়ে শেষ করা যাবে না। আপনাদের জন্য প্রধানমন্ত্রী সব সময় পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। আমরা তারই সহানুভূতিতে মেয়র হয়েছি। আমরাও আপনাদের পাশে আছি।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রায় তিন হাজার মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান, উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্তকর্তা মিসবাহুল ইসলাম, দুই সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর, সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন