বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

ঈশ্বরদীর চাঞ্চল্যকর ঋণ খেলাপি মামলায় ৩৭ জন কৃষকের জামিন মঞ্জুর

ঈশ্বরদী (পাবনা) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ নভেম্বর, ২০২২, ৬:৩৯ পিএম

ঈশ্বরদীর চাঞ্চল্যকর ঋণ খেলাপি মামলায় গ্রেফতারকৃত ১২ জন সহ মোট ৩৭ জন কৃষকেরই জামিন মঞ্জুর করেছে বিজ্ঞ আদালত। আজ ২৭ নভেম্বর'২২ সকালে পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক (সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-২ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক) মো. শামসুজ্জামান শুনানীয়ান্তে জামিন মঞ্জুর করেন।

জামিনপ্রাপ্তরা হলেন- ঈশ্বরদী উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারি গ্রামের শুকুর প্রামানিকের ছেলে আলম প্রামানিক (৫০), মনি মন্ডলের ছেলে মাহাতাব মন্ডল (৪৫), মৃত কোরবান আলীর ছেলে কিতাব আলী (৫০), হারেজ মিয়ার ছেলে হান্নান মিয়া (৪৩), মৃত আবুল হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ মজনু (৪০), মৃত আখের উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ আতিয়ার রহমান (৫০), মৃত সোবহান মন্ডলের ছেলে আব্দুল গণি মন্ডল (৫০), কামাল প্রামানিকের ছেলে শামীম হোসেন (৪৫), মৃত আয়েজ উদ্দিনের ছেলে সামাদ প্রামানিক (৪৩), মৃত সামির উদ্দিনের ছেলে নূর বক্স (৪৫), রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ আকরাম (৪৬) এবং লালু খাঁর ছেলে মোহাম্মদ রজব আলী (৪০) সহ মোট ৩৭ জন।

জানা গেছে, ২০১৬ সালে ৩৭ জন প্রান্তিক কৃষকের একটি গ্রুপ বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক থেকে জন প্রতি ২৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ নেয়। ঋণ খেলাপির দায়ে ২০২১ সালে ব্যাংকের পক্ষে তৎকালীন ম্যানেজার সৈয়দ মোজাম্মেল হক মাহমুদ বাদী হয়ে ৩৭ জনের নামে মামলা করেন।

এদিকে গত ২৩ নভেম্বর'২২ পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। গত ২৫ নভেম্বর'২২ দুপুর পর্যন্ত পরোয়ানাভুক্ত ৩৭ জনের মধ্যে ১২ জনকে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়।

এসব কৃষকের পরিবারের দাবি, ঋণ নেওয়ার পর এক বছরের মধ্যে অধিকাংশ কৃষক তাদের ঋণ পরিশোধ করে দিয়েছেন। তার পাশ বই ও জমা স্লিপও রয়েছে। অথচ সেই অর্থ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা জমা না করে আত্মসাৎ করেছেন। ফলে তাদের হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে।

আদালত চত্বরে বাংলাদেশ কৃষক উন্নয়ন সোসাইটির কেন্দ্রীয় সভাপতি, বঙ্গবন্ধু জাতীয় পদকপ্রাপ্ত কৃষক সিদ্দিকুর রহমান কুল ময়েজ বলেন, গত বুধবার যখন এসব কৃষকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়, তখন তারা সবাই গাজরের ক্ষেতে কাজ করছিল। বাড়িতে ও বিভিন্ন স্থান থেকে পুলিশ ১২ জনকে গ্রেফতার করে। অন্য ২৫ জন কৃষক গ্রেফতার আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে গেছেন।

তিনি বলেন, যে কৃষক সকালে ঘুম থেকে উঠে সারা দেশের মানুষের জন্য খাদ্য উৎপাদনে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন, তাদের হয়রানি করা মোটেও ঠিক হয়নি। অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানি মূলক মামলা প্রত্যাহার করার দাবি জানান তিনি।

এদিকে এই মামলায় হয়রানির শিকার কৃষক পরিবারের সদস্যরা দৈনিক ইনকিলাব সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আজকে তাদের কারণেই অসহায় মানুষ গুলো আইনি সহায়তা পেয়েছেন।

ওদিকে মামলার বাদী বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংকের তৎকালীন ম্যানেজার সৈয়দ মোজাম্মেল হক মাহমুদ বলেন, কৃষকরা ঋণের টাকা পরিশোধ না করায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মামলা করা হয়। খেলাপি ঋণ আদায়ে এটা চলমান প্রক্রিয়া। আমরা আমাদের অফিসিয়াল ব্যবস্থা নিয়েছি। তারা তাদের আইনগত সহায়তা পেয়েছেন।

আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান সুমন, অ্যাডভোকেট কাজী সাজ্জাদ ইকবাল লিটন ও অ্যাডভোকেট মইনুল ইসলাম মোহন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন