নওগাঁর রাণীনগরে ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগে এক শিক্ষককে অবরুদ্ধ অবস্থায় আটক করেছে থানা পুলিশ। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের পক্ষ থেকে শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। আটক শিক্ষক উপজেলার মেরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। সে একই গ্রামের আলহাজ্ব আশেক উদ্দিন দেওয়ানের ছেলে হাফিজুর রহমান (৪৫)।
জানা গেছে, উপজেলার মিরাট ইউনিয়নের মেরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হাফিজুরের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে। তার বিচারের দাবিতে রবিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল পৌনে ৩টা পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও গ্রামবাসিরা এক যোগে স্কুল ঘেরাও করে ওই শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) হাফিজুর রহমান ও অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) সেলিম রেজা প্রয়োজনীয় পুলিশ নিয়ে সকাল ১১টায় ওই স্কুলে যান। এসময় তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে ভূক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ জেনে সত্যতা পাওয়ায় শিক্ষক হাফিজুরকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
অভিযোগকারি ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী খুশি বানু (১২), ফাতেমা বানু (১৩), সুখী (১২), হালিমা (১৩) ও রিয়ামুনি (১০) জানায়, হাফিজুর মাষ্টার আমাদেরকে গায়ে হাত দিয়ে জামাকাপড় ধরে টানা হিঁচড়াসহ আমাদেরকে বিরক্ত করতো। তাই আমরা পিতা-মাতাকে বলেছি এবং তার বিচারের দাবিতে স্কুল ঘেরাও করেছি।
ওই স্কুলের শিক্ষার্থী খুশির চাচা আজিজুল ইসলাম বলেন, গত বৃহস্পতিবার আমার ভাতিজিকে হাফিজুর মাষ্টার শ্লীলতাহানি করেছে। এর বিচারের দাবিতে আমরা গ্রামবাসি স্কুল ঘেরাও করেছি।
অভিযুক্ত শিক্ষক হাফিজুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের লেখা-পড়া ব্যাপারে আমি মেরেছি কিন্তু শ্লীলতাহানির মতো কোনো ঘঠনা আমি করিনি। এসব মিথ্যা এবং বানোয়াট।
থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) সেলিম রেজা বলেন, মেড়িয়া স্কুলের শিক্ষক হাফিজুর রহমানকে ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনায় বিচারের দাবিতে ভুক্তভোগীরা ঘেরাও করে রেখেছে এমন সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে ওই শিক্ষককে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন ওই শিক্ষককে পুলিশের কাছে সোর্পদ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে। মামলা দায়েরের পর শিক্ষককে সোমবার সকালে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হবে।
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) হাফিজুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্রী এবং অভিভাবকদের কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত জেনে অবরুদ্ধ অবস্থায় শিক্ষক হাফিজুরকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে। প্রচলিত আইন মোতাবেক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন