বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

আমার বাবার মৃত্যু আমি মেনে নিয়েছি,আর কোন বাবার মৃত্যু আমি এভাবে দেখতে চাইনা

বরিশালে বিভাগীয় সমাবেশে যোগদানের পথে হামলায় আহত শাহজাহান খানের জানাযায় ছেলে জেলা যুবদল নেতা শিপলু খান

পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৯ নভেম্বর, ২০২২, ৬:৪৫ পিএম

পটুয়াখালী -৩ (গলাচিপ-দশমিনা )আসনের সাবেক সংসদ সদস্য পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক ও বর্তমান আহবায়ক কমিটির ১ নং সদস্য আলহাজ্জ শাহজাহান খান (৭০) কে আজ সপ্তম নামাজে জানাযা শেষে বাদ মাগরিব নিজ গ্রামের বাড়ী পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চিকনিকান্দী ইউনিয়নের সুতাবাড়িয়া গ্রামের খান বাড়ী পারিবারিক কবরস্থানে বাবা, মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে। এর আগে মরহুম শাহজাহান খানের মৃতদেহ বাহী গাড়ী গতকাল ২৮ নভেম্বর রাতে পটুয়াখালী শহরের আদালতপাড়ার বাসায় পৌছে।

আজ সকাল ৯ টায় পটুয়াখালী শহরের বড় জামে মসজিদের সামনে আদালতের মাঠে নামাজে জানাজায় হাজার হাজার দলীয় নেতাকর্মী সহ সর্বস্তরের জনগন অংশগ্রহন করেন।নামাজে জানাযার আগে পটুয়াখারী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ্ব আব্দুর রশিদ চুন্নু মিয়া ও মরহুমের বড় ছেলে জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শিপলু খান বক্তব্য রাখেন।

শিপলু খান তার বক্তব্যে বলেন“ আমার বাবার মৃত্যু আমি মেনে নিয়েছি,আর কোন বাবার মৃত্যু আমি এভাবে দেখতে চাইনা। আমি সরকারের কাছে বিচার চাই না,বিচার চাওয়ার ইচ্ছা নেই,কেননা এ সরকার আমাদের বিচার করবেনা,আপনাদের কাছে বিচার রেখে দিলাম।

গত ৪ নভেম্বর বরিশালে বিভাগীয় সমাবেশে যাওয়ার পথে বদরপুরের শিয়ালীতে দুস্কৃতিকারী-া আওয়ামীসন্ত্রাসীরা তাকে বেদম প্রহার করে। কিন্তু কি উদ্দেশ্যে তাকে মারা হয়েছিল তা আমরা জানিনা। আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন রাখলাম কারো কি দল করা অপরাধ ?,যদি দল করা অপরাধ হয় তবে আমার বাবা দোষি। আমার বাবা বিএনপি করতো এটা ছিল তার অপরাধ-এ অপরাধের কারনে তারা বেদম প্রহার করেছে,আঘাত করেছে,তার প্রতি হামলা করেছে,আপনাদের কাছে বিচার দিলাম।

পরবর্তীতে শাহজাহান খানের মৃতদেহ পটুয়াখালী-৩ গলাচিপা-দশমিনা- আসনের দশমিনা উপজেলায় নিয়ে যাওয়া হয়।সেখান হাজার হাজার নেতাকর্মী সহ সর্বস্তরের জনতার উপস্থিতিতে দশমিনা জৈনপুরী পীর সাহেব খানকায় সাড়ে ১১ টায় নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে গলাচিপা উপজেলায় সড়ক পথে যাওয়ার সময় গলাচিপা উপজেলার উলানিয় বন্দরের আয়েশা জামে মসজিদ মাঠে নামাজে জানাযা অুনষ্ঠিত হয়।

পরবর্তীতে দুপুর আড়াইটায় গলাচিপা উপজেলা হাইস্কুল মাঠে হাজার হাজার সর্বদলীয় নেতাকর্মী সহ জনগন অংশগ্রহন করেন। সেখানে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাসান মামুন সহ উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতা উপজেলা চেয়ারম্যান মো: শহিন মিয়া ,পৌর মেয়র আহসানুল হক তুহিন সহ বিএনপির নেত্রীবৃন্দ।

পরবর্তীতে বিকেল ৪ টায় শাহজাহান খানের মৃতদেহ নিজ গ্রামের বাড়ী চিকনীকান্দী ইউনিয়নে নিয়ে যাওয়া হলে সেখান দলমত নির্বিশেষে হাজার হাজার নেতাকর্মী সহ সর্বস্তরের জনগন জনতায় অংশগ্রহন করেন।পরে মাগরিবের নামাজের আগে সুতবাড়িয়া গ্রামে নিজ বাড়ীর সামনের মাঠে ৭ম জানাযা শেষে বাদ মাগরিব শাহজাহান খানকে “খানবাড়ী” পারিবারিক কবর স্থানে বাবা মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয় বলে জেলা যুব দলের সভাপতি মো:মনিরুল ইসলাম লিটন নিশ্চিত করেছেন।

উল্লেখ্য গত ৫ নভেম্বরে বরিশালে বিভাগীয় সমাবেশে যোগদানের উদ্দেশ্যে ৪ নভেম্বর সন্ধ্যার পরে শাহজাহান খান বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে বরিশাল যাওয়ার পথে পটুয়াখালী-বরিশাল মহাসড়কের গাবুয়া এলাকা অতিক্রম কালে ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীরা তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা শাহজাহান খানকে লাঠি,রড ও জিআই পাইপ দিয়ে পিটিয়ে শরীরে বিভিন্ন স্থানে গুরতর ভাবে জখম করে।পরে তাকে পটুয়াখালীতে স্থানীয় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এদিকে গত ২২ নভেম্বর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকায় ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে গতকাল সকালে শাহজাহান খান মার যান।

শাহজাহান খানের প্রথম জানাজা গতকাল ঢাকায় বাদ জহুর পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে অনুষ্ঠিত হয়।

শাহজাহান খান ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে পটুয়াখালী-৩ গলাচিপা-দশমিনা আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এছাড়া পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সেচ্ছাসেবী সংগঠনের গুরত্বপূর্ণ পদে ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন