শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ল ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ১ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক আয়কর বিবরণী জমা বা রিটার্ন জমা দেয়ার সময় বাড়ানো হয়েছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিটার্ন দেয় যাবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিম। গতকাল বুধবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অডিটোরিয়াম আয়কর দিবস উদযাপনের অনুষ্ঠানে তিনি এ ঘোষণা দেন। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, গতকালকে আমরা সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আজকে সার্কুলার হিসেবে আসতে পারে। অনেক সংগঠনের দাবি ও জনগণের সুবিধার্থে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া তিনি সবাইকে মাসের প্রথমেই রিটার্ন জমা দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন যাতে মাস শেষে দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে কাউকে রিটার্ন জমা দিতে না হয়। এদিকে জাতীয় আয়কর দিবস উপলক্ষে সেমিনারের আয়োজন করে এনবিআর। সেমিনারে প্রত্যক্ষ কর ব্যবস্থাপনা ও কর নেট সম্প্রসারণ: প্রাসঙ্গিক ভাবনা শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এনবিআরের সদস্য (কর নীতি) ড. সামস উদ্দিন আহমেদ। তিনি তার প্রবন্ধে বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০৪১ সালের মধ্যে কর জিডিপি অনুপাত ২১ দশমিক ৮৫ শতাংশ করতে চায় এবং মোট রাজস্বে প্রত্যক্ষ করের অবদান ৫০ শতাংশ করতে চায় যা বর্তমানে মাত্র ৩৪ শতাংশ। এ লক্ষ্যে কর সেবা আধুনিকায়ন ও ডিজিটাইজেশনে জোর দিয়ে কাজ করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ এর মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহম্মদ মুসলিম চৌধুরী বলেন, দেশের বাইরের কোনো ভেন্ডরের কাছে কর ডিজিটাইজেশন নির্ভর না করে নিজেদের কমিশনারদের মধ্যে যারা আইটিতে দক্ষ তাদেরকে ট্রেনিং দিয়ে কাজে লাগাতে হবে। তা না হলে বাইরের ভেন্ডরের খপ্পরে পড়ে যেতে হবে। কারণ তারা এক সফটওয়্যার বিক্রি করে চলে যায় এতে সঠিক উন্নতি হবে না। এছাড়া তিনি আয়কর বাড়াতে ডিজিটাইজেশনের বিকল্পনেই বলেও জানান। এখানে করদাতাদের উপর আস্থা বাড়ানো এবং মানুষের হস্তক্ষেপ কমিয়ে আনার পরামর্শদেন।
এনবিআরের সদস্য (শুল্ক নীতি) মাসুদ সাদিক বলেন, উপাস্থপনায় দেখানো হয়েছে রিটার্ন গত বছরের চাইতে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে, আমাদের রাজস্ব আহরণও বেড়েছে। তিনি আরো বলেন, প্রত্যক্ষ কর সাম্যভিত্তিক সমাজ গড়ার হাতিয়ার, কিন্তু প্রত্যক্ষ কর একজন গরীবকেও সমানভাবে দিতে হয়। আমি চাই মোট রাজস্বে ভ্যাট ও পত্যক্ষ কর মিলে হোক ৯৫ শতাংশ এবং কাস্টমসের অবদান কমুক। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অটোমেশনের উপর বড় বিনিয়োগ করতে হবে তাহলে পুরো দেশের অন্যান্য অটোমশন প্রক্রিয়া যুক্ত হওয়া সহজ হবে এবং করনেট বাড়বে বলেও জানান তিনি।
রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (ট্যাক্স অডিট ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন) প্রদ্যুৎ কুমার সরকার বলেন, ইনকাম ট্যাক্সের আইন জটিল, কিন্তু এই জটিলতা কমাতেকোনো পদক্ষেপ নিলেসেই জটিলতা আরো বৃদ্ধি পায়।
তাই এই অনিবার্যতা মেনে নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। তিনি আরো বলেন, প্রত্যক্ষ কর ব্যবস্থাপনায় সরকারী ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা জড়িত। তাই বলা যায় সবাই মিলেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। রাজস্ব বোর্ডের ঘাটতি মানে দেশের ঘাটতি। বাড়ি বাড়ি না গিয়ে বিভিন্ন তথ্যভান্ডারের দিকে মনোযোগ দিতে হবে, যেমন বিআরটিএ, ল্যান্ড মিনিস্ট্রি, গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন ইত্যাদি। এতে করনেট বাড়িয়ে করবেশি আদায় করা সম্ভব হবে।
প্রসঙ্গত,করদাতাদের সেবা গ্রহণ ও রিটার্ন দাখিলের সুবিধার্থে গত ১ নভেম্বর থেকে শুরু হয় করসেবা মাস। সেদিন থেকে শুরু হয়ে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত এনবিআরে জরিমানা ছাড়াই আয়ও সম্পদের বিবরণী জমা দেয়ার কথা। তবে এফবিসিআইসহ বিভিন্ন সংগঠন বার্ষিক আয়কর বিবরণী জমা বা রিটার্ন জমা দেয়ার সময় বাড়ানো আবেদন করেছে। সেই প্রেক্ষিতে সময় বাড়ানোর ঘোষণা দিল এনবিআর।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন