পুর্বের দ্বন্দ্বের জের ধরে বগুড়ায় সরকারি আজিজুল হক কলেজের নতুন ভবনে জেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় নতুন করে সংঘাতের আশংকা সৃষ্টি হয়েছে।
গত শনিবার রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টায় সরকারি আযিযুল হক কলেজের অধ্যক্ষের বাসভবনের অদূরে এই হামলায় নবগঠিত জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান এবং শহর কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান সাব্বিরসহ অন্তত ৭ জন আহত হয়েছে। ভাংচুর হয়েছে ১৫টি মোটর বাইক। হামলায় আহতদের মধ্যে ছাত্রলীগ নেতা আতিকুর রহমানের অবস্থা গুরুতর। তাকে বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ছাত্রলীগের নবগঠিত জেলা কমিটির নেতারা ওই হামলার জন্য কমিটি পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের দায়ী করেছেন। তবে পদবঞ্চিত নেতারা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এদিকে এই ঘটনায় পুলিশ সতর্কতামুলক ব্যবস্থা
হিসেবে জেলা ছাত্রলীগ অফিসের সামনে অবস্থান গ্রহন করেছে।
উল্লেখ্য গত ৭ নভেম্বর বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৩০ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। তবে কাঙ্খিত পদ না পাওয়া নেতাকর্মীরা ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে ওই দিন থেকেই আন্দোলন করে আসছে। তাদের ধারাবাহিক আন্দোলনের মুখে নবগঠিত কমিটির নেতারা এখনও ছাত্রলীগের জেলা কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারেনি।
ছাত্রলীগের নবগঠিত বগুড়া জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আল মাহিদুল ইসলাম জয় সাংবাদিকদের বলেন, সংগঠনের সভাপতি সজীব সাহা এবং তিনি নেতা-কর্মীদের নিয়ে কলেজ অধ্যক্ষের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মোটরসাইকেলে যোগে সরকারি আজিজুল হক কলেজ ক্যাম্পাসে তার বাসভবনে যান।
তিনি বলেন, ‘সভাপতি এবং আমি নেতাকর্মীদের বাইরে রেখে ভেতরে অধ্যক্ষ স্যারের সঙ্গে কথা বলার সময় আমাদের কমিটি বাতিলের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী তৌহিদুর রহমান এবং মাহফুজার রহমানের নেতৃত্বে ১৫-১৬ জন লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকে। তারা অধ্যক্ষের বাসভবনের বাইরে অপেক্ষমান আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর চড়াও হয় এবং তাদের মোটর সাইকেল ভাঙচুর করে।’
সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শাহজাহান আলী জানান, তার বাসভবনের বাইরে বহিরাগতরা এসে গোলমাল করেছে বলে তিনি খবর পেয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য আমি পুলিশকে খবর দিই।’
তবে জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলরত মাহফুজার রহমান হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা ক’দিন আগে ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও শিবিরকে ধাওয়া করেছিলাম। আজ রাতে আমরা খবর পাই যে, ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যাওয়া ছাত্রদল ও শিবিরের নেতাকর্মীরা প্রতিশোধ নিতে ক্যাম্পাসে এসেছে। তখন আমরা তাদের প্রতিহত করতে গেলে আমাদের ওপর ২ রাউন্ড গুলি চালানো হয়।’
বগুড়া সদর থানার পুলিশের উপপরিদর্শক মঞ্জুরুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা কলেজে আসি। তার আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে গেছে। পরে অন্র নেতাকর্মীদেরও কলেজ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত। তবে হামলা নিয়ে কেউ থানায় কোনো অভিযোগ করেনি।’
এদিকে এই হামলাকে ঘিরে ছাত্রলীগের বিবাদমান দুটি গ্রুপের মধ্যে নতুন করে সংঘাতের আশংকা করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন