শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

বাগেরহাটে ভালোবেসে বিয়ের চার মাসের মাথায় লাশ হলো মেধাবী ছাত্রী দিপ্তী

বাগেরহাট জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৪ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:১১ পিএম

মাত্র ৪ মাস আগে মেধাবী ছাত্রী দিপ্তী পরিবারের অমতে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল নয়ন পাত্রকে। এজন্য তার বাবা তাকে তেজ্যকণ্যা ঘোষণা করেন। দিপ্তী ভেবেছিল তার ভালোবাসার মানুষ তাকে আজীবন আগলে রাখবে। কিন্তু সেই ভালোবাসাই তার জন্য কাল হয়। শাশুড়ী, ননদ ও স্বামীর নির্মম নির্যাতন সইতে না পেরে অবশেষে গলার ফাঁস দিয়ে আত্মহত্য করতে বাধ্য হয় সে। এমন দাবি মৃতের পরিবার ও স্বজনদের।

রোববার (৪ ডিসেম্বর) সকালে পুলিশ দিপ্তী মন্ডলের (১৮) মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। দিপ্তী মন্ডল বাগেরহাট সদর উপজেলার হালিশহর গ্রামের তারক মন্ডলের ছোট মেয়ে ও চিতলমারীর সরকারি বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজের মেধাবী ছাত্রী ছিল। সে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিল। এরআগে শনিবার (৩ ডিসেম্বর) রাতে চিতলমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।

পুলিশ, হাসপাতাল, কলেজ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ মাস আগে দিপ্তী মন্ডল পরিবারের অমতে ভালোবেসে বাগেরহাট সদর উপজেলার সাজোখালী গ্রামের রণজিৎ পাত্রের ছেলে নয়ন প্রাত্রকে (২৬) বিয়ে করে। বিয়ের পর বাবা তাকে তেজ্যকণ্যা ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই শ্বশুর বাড়ি থেকে নেমে আসে শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন। নির্যাতনের এক পর্যায়ে সে সইতে না পেরে গত ৩০ নভেম্বর পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নেন সরকারি বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজের লাইব্রেরীয়ান সুচিত্রা রাণী মল্লিকের বাসায়। সেখানে এসে তিনি ১ ডিসেম্বর পৌরনীতি পরীক্ষা দেন।

শনিবার বিকেলে তিনি সুচিত্রা রাণী মল্লিকের চিতলমারী মহিলা কলেজ রোডের ভাড়া বাসায় সিংলি ফানের সাথে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। তাকে চিতলমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

দিপ্তী মন্ডলের মা কাঞ্চন মন্ডল ও দিদিমা পারুল বিশ্বাস জানান, শাশুড়ী, ননদ ও স্বামী ওকে নির্মম ভাবে নির্যাতন করত। মানসিক ও শাররীক নির্যাতন সইতে না পেরে দিপ্তি ঘর ছেড়েছে এবং গলায় ফাঁস দিয়েছে।

সরকারি বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজের লাইব্রেরীয়ান সুচিত্রা রাণী মল্লিক বলেন, ‘দিপ্তী মন্ডল আমার প্রতিবশী ও কলেজের মেধাবী ছাত্রী ছিল। শ্বশুর বাড়ির অত্যাচার-নির্যাতন সইতে না পেরে দিপ্তি এ পথ বেছে নিয়েছে। এছাড়া বাবা তেজ্যকণ্যা করায় এখানেও সে আশ্রয় পায়নি।

ঘটনার পর থেকে দিপ্তীর স্বামী নয়ন পাত্র ও তাঁর পরিবারের লোকজন পলাতক এবং নয়নের ব্যবহৃত মুঠোফোনটি বন্ধ থাকায় তাঁদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএইচএম কামরুজ্জামান খান জানান, খবর পেয়ে কলেজ ছাত্রী দিপ্তী মন্ডলের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠোনো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন