আগামী কাল ৭ডিসেম্বর কক্সবাজরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। সোমবার বিকেলে জনসভাস্থলে এক সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে সফল করার জন্য সোমবার বিকেল ৩ টায় সভামঞ্চ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরে জানানো হয়,
আগামী কাল ৭ই ডিসেম্বর বুধবার, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী, গণতন্ত্রের মানসকন্যা, দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা এমপি কক্সবাজার শুভাগমন করবেন এবং কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত বীরমুক্তিযোদ্ধা শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ প্রদান করবেন।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী ইতিপূর্বে তাঁর মেয়াদকালে আরো ৭বার কক্সবাজার এসেছেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এটি তাঁর ৮ম সফর। ২০১৭ সালের ৬ই মে এই একই স্থানে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ প্রদান করেছিলেন তিনি। তখন তিনি কক্সবাজারকে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছিলেন। প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে তিনি ইতিমধ্যে কক্সবাজারের বিভিন্ন উন্নয়নসহ ব্যাপক মেঘা প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। মেঘা প্রকল্পের বিভিন্ন প্রকল্প ইতিমধ্যে দৃশ্যমান হচ্ছে।
বাস্তবায়নাধীন মেঘা প্রকল্পের মধ্যে কক্সবাজার আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দর, কক্সবাজারবাসীর স্বপ্নের রেল লাইন, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর, মাতারবাড়ীর কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প, সাবরাং এক্সক্লোসিভ ট্যুরিজম জোন, মেরিন ড্রাইভ সড়ক, মেডিকেল কলেজ, সোনাদিয়া ইকো ট্যুরিজম, কক্সবাজার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ও ফুটবল স্টেডিয়াম, বিকেএসপি, খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্প, শেখ হাসিনা নৌ ঘাটি, হাই-টেক পার্ক, জাতীয় সমুদ্র গবেষনা ইনন্সিটিটিউট, অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ প্রায় ৪০টি বড় ধরনের উন্নয়ন মেঘা প্রকল্পের সুফল দ্রুত কক্সবাজারবাসীসহ দেশবাসী ভোগ করতে পারবেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়,
জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা, মুক্তিযোদ্ধের চেতনায় আজ দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ এবং বাঙালী জাতি সম্মানের আসনে অধিষ্টিত। সারা দেশে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন দেশবাসীর জীবন যাত্রার মান পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এক অপ্রতিরোধ্য গতিতে। এ এগিয়ে যাওয়া বিএনপি-জামাতসহ স্বাধীনতা বিরোধীদের পছন্দ নয়। তাই তারা দেশের এগিয়ে যাওয়া এবং উন্নয়নের গতি ব্যহত করার কুমানসে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তারা আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, অরাজগতা সৃষ্টি করে দেশের শান্ত পরিস্থিতি বিনষ্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্য যেকোন উপায়ে ক্ষমতা দখল করে লুটপাট, দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাস করে হাওয়া ভবনের মত আরেকটি ভবন সৃষ্টি করে পাকিস্তানী ভাবধারায় অনুন্নত ও অস্থিতিশীল বাংলাদেশে রূপান্তরিত করা। দুর্নীতিবাজ, ফেরারী আসামী তারেক জিয়া ও সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার এই নীল নকশা কখনো সফল হবে না এ বাঙালী জাতি কখনো তাদের রাষ্ট্র পরিচালনা করার অধিকার দেবে না।
নেতৃবৃন্দ বলেন, উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে নেওয়া ও উন্নত সমৃদ্ধির অসাম্প্রদায়িক, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এবং শান্তি সমৃদ্ধির বাংলাদেশকে টিকিয়ে রাখতে আগামী কাল ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের জনসভাকে জনসমূদ্রে পরিণত করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের মুখে হাসি দেখতে ভালোবাসেন। তিনি দেশকে দারিদ্রতা থেকে মুক্তি দিয়ে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে মর্যাদা দিয়েছেন। তিনি গৃহহীনকে গৃহ, ভূমিহীনকে ভূমি প্রদান করেছেন। এছাড়াও বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, পুষ্টি ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, পঙ্গু ভাতাসহ বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা ভাতা প্রদান করে সাধারণ মানুষের অন্তরে নিজের দৃঢ় অবস্থান সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন। মানুষ জননেত্রী শেখ হাসিনাকে অন্তর দিয়ে ভালোবাসেন, তার কথা শোনতে চান এবং তারা শেখ হাসিনাকে এক নজর দেখতে চান। তাই আগামী কাল ৭ই ডিসেম্বর কক্সবাজার মুক্তিযোদ্ধা শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম লক্ষ লক্ষ মানুষের পদচারনায় মুখোরিত হবে। সারা কক্সবাজার শহর জনসভাস্থলে পরিণত হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এত উন্নয়নের পরেও কক্সবাজারবাসী বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে আরো কিছু প্রত্যাশা করেন। এরমধ্যে কক্সবাজার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ব বিদ্যালয়, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের সংযুক্তিকরণ, কক্সবাজারের সাথে মহেশখালী উপজেলার সংযোগ সেতু ও বাকঁখালী নদীর তলদেশ দিয়ে ট্যানেল নির্মাণ, কুতুবদিয়া-মগনামার মধ্যে ফোরি সার্ভিস চালুকরণ, কক্সবাজার পর্যটন গবেষনা ইনস্টিটিউট, চার লেনের মেরিন ড্রাইভ সড়ক, ছয় লেনের কক্সবাজার- চগ্রাম মহসড়ক, কক্সবাজার সিটি কর্পোরেশন, কক্সবাজার সিটি কলেজকে সরকারিকরণ, যুগ যুগ ধরে ঝিনুক ব্যবসার সাথে উচ্ছেদকৃত ব্যবসায়ীদের পুণঃবাসন ও স্থায়ী আধুনিক ঝিনুক মার্কেট নির্মাণ ইত্যাদি।
সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইন্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন তাঁর বক্তব্যে বলেন, পর্যটন কেন্দ্রীক কক্সবাজােরের সম্ভাবনা অনেক বেশী। সেন্টমার্টিন হচ্ছে মালদ্বীপের মত একটা দ্বীপ। সেন্টমার্টিনকে ও সেভাবে গড়ে তোলা যেতে পারে। এবিষয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করবেন বলে জানান। তিনি আরো বলেন, পর্যটন শহরের দূষিত পানি যাচ্ছে বাকঁখালী অথবা সাগরে। এই বর্জ ব্যবস্থাপনার জন্য সেন্ট্রাল এসটিপি দরকার। চট্টগ্রামে ও এসটিপি হচ্ছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ব্যারিষ্টার বিপ্লব বডুয়া বলেন, গত ১৪ বছরে শেখ হাসিনা সাড়ে তিন লাখ কোটি টাকার প্রকল্প দিয়েছেন কক্সবাজারে। বিএনপি তাদের সময়ে সারাদেশের জন্য বাজেট বরাদ্দ দিয়েছিল ৬৯ হাজার কোটি টাকা। তার কয়গুণ বেশী টাকা আওয়ামী লীগ শুধু কক্সবাজারে খরচ করেছে। প্রধানমন্ত্রী তার মেয়াদে অষ্টম বারের মত কক্সবাজার সফর করছেন। এই উন্নয়নের সফল্য সারা দেশের মানুষ ভোগ করবে। তিনি বলেন কক্সবাজারের সাংবাদিক এবং সব মানুষের এগুলো প্রচার করা দরকার।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন,
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এড. সিরাজুল মেস্তফা, প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব সাখাওয়াত মুন, প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব জাহিদ ইমরান তোষার, এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল, এমপি জাফর আলম, এমপি আশেকুল্লাহ রফিক, সাবেক এমপি এথিন রাখাইন, আওয়ামী লীগ নেতা সালাহ উদ্দিন সিআইপি, সাবেক কউক চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল ফোরকান আহমদ, রেজাউল করিম, রন্জিত দাশ, মেয়র মকসুদুল হক, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান নুরুল আবছার,
ইন্জিনিয়ার বদিউল আলম, পিপি ফরিদুল আলম, আব্দুল খালেক ও আবুল মন্জুর সহ কয়েক শত আওয়ামী লীগ নেতা।
4 Attached Images
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন