রাস্তায় ভিক্ষুকের কাছে পাওয়া এবারের উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষার ইংরেজি প্রথম পত্রের ৫০টি খাতা সংগ্রহ করে তা থানায় জমা দিয়েছেন এক পথচারী।
বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পাওয়া ওই খাতাগুলো রাজধানীর কাফরুল থানায় জমা দেন দেন তিনি। ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থানা থেকে খাতা সংগ্রহের জন্য লোক পাঠিয়েছে।
মেয়েকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছে দিতে গিয়ে পথে মুরাদ হোসেন খাতাগুলো দেখতে পান। প্রথমে সন্দেহ হলে ভালো করে যাচাইয়ের পর তিনি বুঝতে পারেন, এগুলো চলমান এইচএসসি পরীক্ষার খাতা।
মুরাদ হোসেন জানান, ‘মেয়েকে বাসে তুলে দেয়ার জন্য মিরপুর গোল চত্বরে আসার পর আমি একটা জটলা দেখে এগিয়ে যাই। এরপর দেখি কিছু ভিক্ষুক এক বান্ডিল মতো খাতা নিয়ে তা বিক্রি করার জন্য আলোচনা করছে। তারা আমাকে জানায় এগুলো রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি তাদের কাছ থেকে খাতাগুলো নিয়ে যাচাই করে দেখি এখানে তারিখ অনুযায়ী তা এ বছর চলমান এইচএসসি পরীক্ষার খাতা। খাতার ওপরে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কাগজ দিয়ে বাঁধা ছিল। সেই সঙ্গে ইংরেজি প্রথম পত্রের কোড নম্বর দেয়া ছিল। খাতার বান্ডিলে ৫০টি খাতা, এটাও উল্লেখ করা ছিল।’
মুরাদ হোসেন বলেন, ‘কী করব ওই মুহূর্তে বুঝতে না পেরে আমি আমার এক অধ্যক্ষ বন্ধুকে ফোন দিয়ে বিস্তারিত বলি। এরপর খাতাগুলো নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিলে আমার সঙ্গে ঢাকা বোর্ড থেকে যোগাযোগ করা হয়।’
ঢাকা বোর্ডের একজন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মুরাদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা আমাকে নিকটস্থ থানায় সাধারণ ডায়েরি করে তা জমা দিতে বলেন। আমি কাফরুল থানায় খাতাগুলো জমা দিয়ে আসি।’
এ বছর এইচএসসি পরীক্ষার ইংরেজি প্রথম পত্রের পরীক্ষা হয়েছিল ১০ নভেম্বর। এইচএসসির পরীক্ষা এখনও চলমান রয়েছে।
কাফরুল থানার ডিউটি অফিসার রুমি বলেন, ‘থানায় খাতার একটা বান্ডিল জমা দেওয়া হয়েছে। একজন পথচারী খাতাগুলো রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়ে থানায় জমা দিয়েছেন। আমাদের অফিসারদের সঙ্গে বোর্ড থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা এসে খাতা নিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে।’
ঢাকা বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (উচ্চ মাধ্যমিক) মো. জাহিদ বক্ত চৌধুরী বলেন, ‘আমরা খাতার বিষয়ে তথ্য পেয়েছি। আমি ইতোমধ্যে একজনকে থানায় পাঠিয়েছি খাতাগুলো নিয়ে আসার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি খাতাগুলো পেয়েছিলেন তাকে আমরা সাধারণ ডায়েরি করে খাতা থানায় জমা দিতে বলেছিলাম। তিনিও তা-ই করেছেন। এ বিষয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে বিস্তারিত বলা হয়েছে। তিনি পরবর্তী নির্দেশ বা ব্যবস্থা নেয়া হবে তা জানাবেন।’
ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সন্ধ্যায় বলেন, ‘আমরা খাতাগুলো থানা থেকে এনেছি। দোষী পরীক্ষককে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।’
বোর্ড সূত্রে জানা যায়, উত্তরপত্রগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত পরীক্ষক শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সরকারি মহিলা কলেজের প্রভাষক মো. ইব্রাহীম হুসাইন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন