বিএনপির আন্দোলনে অর্ধেক পরাজয় হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, যারা বলেছিল- ‘নয়াপল্টনে সমাবেশ করবোই।’ আজ তারা গোলাপবাগে। তাহলে পরাজয় কার হলো? আমাদের (আওয়ামী লীগ) না বিএনপির? আন্দোলনে অর্ধেক পরাজয় এখানেই হয়ে গেছে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, খেলা হবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে আন্দোলনে খেলা হবে। বিজয়ের মাসে খেলা হবে। নির্বাচনে খেলা হবে। আপনারা প্রস্তুত আছেন? আজকে ঢাকা সিটিতে পা দিয়ে বুঝতে পারলাম আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার সৈনিকেরা প্রস্তুত। খেলা হবে রাতে ব্রাজিলের সঙ্গে ক্রোয়েশিয়া, আর্জেন্টিনা বনাম নেদারল্যান্ডস।
গুলিস্তানের মহানগর নাট্য মঞ্চে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশ নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি। বিকেল ৩টার মধ্যে সমাবেশ স্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। দুপুরের পর থেকে ঢাকা দক্ষিণের বিভিন্ন থানা-ওয়ার্ড থেকে খÐ খÐ মিছিল নিয়ে সমবেত হন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। তারা বিএনপি-জামায়াত বিরোধী বিভিন্ন সেøাগান দেন।
বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে দেশবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আতঙ্কের কারণ নেই, আমরা চলে যাচ্ছি কাল সাভারে। ঢাকায় আমরা নেই। বিএনপি ও তাদের লোকদের এই শহর তাদের দিয়ে গেলাম। আতঙ্ক কেন। আমরা ক্ষমতায়, আমরা কেন অশান্তি চাইব। আমরা কেন বিশৃংখলা করব। আরও এক বছর বাকি, নির্বাচন হবে ইন শা আল্লাহ।
গোলাপবাগে সমাবেশ করতে বিএনপির সম্মত হওয়ার ব্যাপারে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি বলেছিলাম যে বিএনপি শেষপর্যন্ত সমাধানে আসবে। পল্টন থেকে ভেবেছিলাম বাংলা কলেজ, না হলে গোলাপবাগ। অবশেষে মেনে নিয়েছে, শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, তৈরি হয়ে যান, প্রস্তত হয়ে যান। যারা আমাদের সহ¯্র জননীর বুক খালি করেছে, যারা এদেশের শত শত মায়ের কোল খালি করেছে, সন্তানহারা মায়ের কান্না, স্বামীহারা নববধ‚র ফরিয়াদি, ভাইহারা বোনের আর্তনাদে বাংলার বাতাস আজও ভারি। যারা ২১ আগস্ট, ১৫ আগস্ট ঘটিয়েছে, যারা ৩ নভেম্বরে জেল হত্যা করেছে, যারা জয় বাংলা নিষিদ্ধ করেছে, যারা মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ নিষিদ্ধ করেছিল, যারা স্বাধীনতার ভাষণ নিষিদ্ধ করেছিল, যারা হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে পাচার করেছে, আমেরিকা-সিঙ্গাপুরে ধরা খেয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে।
তারেক রহমানের দেশে আসার প্রসঙ্গ তুলে ওবায়দুল কাদের বলেন, জেলে গিয়ে রাজনীতি করবেন, সেই সাহস তারেক রহমানের নেই। সে নাকি আসবে, কবে আসবে? ২০০৭ সাল থেকে সেই পনেরো বছরে এলো না, আসবে কবে? ক্ষমতায় গিয়ে আন্দোলনের মুখে তাকে নিয়ে আসবেন? সেই চিন্তা করে লাভ নেই। বিএনপি স্বপ্ন দেখছে, দিবাস্বপ্ন। বিএনপি দুঃস্বপ্ন দেখছে, অচিরেই ক্ষমতাকেন্দ্রিক রঙিন খোয়াব কর্পুরের মতো উবে যাবে।
গণমাধ্যমের কঠোর সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার প্রতিযোগিতায় নেমেছে কিছু মিডিয়া। তাদের ভাবখানা বিএনপি ছাড়া দেশে আর কোনো দল নেই। আপনারা (আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী) তাদের চিনে রাখুন। তারা (গণমাধ্যম) সময় মতো জবাব পাবে। কোনো কোনো মিডিয়া রাতে এবং সকালে যখন দেখি, মনে হয় না এখানে আর কোনো দল আছে। আওয়ামী লীগ ছাড়া বাংলাদেশে আর কোন দল আছে বলেন? চট্রগ্রাম, যশোর ও কক্সবাজারে শেখ হাসিনা দেখিয়ে দিয়েছেন। তাদের (বিএনপি) সব সমাবেশ মিলিয়েও আমাদের চট্টগ্রামের সমাবেশের সমান হবে না।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী। সমাবেশের সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির। এতে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমÐলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নুর তাপস ও যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ প্রমূখ। ##
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন