যশোর টাউন হল ময়দানের ঐতিহাসিক স্বাধীনতা উন্মুক্ত মঞ্চের পুনঃনির্মাণের মাধ্যমে সংরক্ষণ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেলে এই মঞ্চের উদ্বোধন ও স্বাধীন দেশের জনসভার প্রথম জনসভার আলোকচিত্রী কুষ্টিয়ার সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ রায়হানকে সম্মাননা দেয়া হয়েছে।
১৯৭১ সালের গতকাল রোববার আজকের এই দিনে হানাদার বাহিনীর কবলমুক্ত যশোরের এই মঞ্চে স্বাধীন বাংলার প্রথম জনসভায় মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সবাইকে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে ছিলেন। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর যশোর জেলা পরিষদ মঞ্চটি সংরক্ষণে ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে তা পুনঃনির্মাণ করেছে।
যশোরের জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এমপি।প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত সকল স্থাপনা সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় স্বাধীন বাংলার প্রথম জনসভার এই মঞ্চটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর ফলে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে পারবে।
অনুষ্ঠানে যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুজ্জামান পিকুল, যশোর পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার গণী খান পলাশ, তৎকালীন মুজিবাহিনী প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী হোসেন মনি, মুজিবাহিনী উপ-প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. রবিউল আলম যশোর ইনস্টিটিউটের সাধারণ সম্পাদক ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানের শেষে স্বাধীন বাংলার প্রথম জনসভার ছবির আলোকচিত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ রায়হানকে সম্মাননা স্মারক প্রদান, উত্তরীয় ও চাদর পরিয়ে দেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এমপি।
সম্মাননাপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ রায়হান তার অনুভূতি জানাতে গিয়ে বলেন, আমি অভিভূত! ঐতিহাসিক সেই জনসভার ৫১ বছর পর আপনারা আমাকে স্মরণ করেছেন, সে কারণে আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। যশোরবাসীকে আমার অনুভূতি প্রকাশ করা কঠিন।
কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর দুই দফায় জনসভায় সশরীরে উপস্থিত এবং তাদের খাওয়ানোর দায়িত্বে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ রায়হান বলেন, ১৯৭০ এবং ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু কুষ্টিয়ার জনসভায় এলে আমি বাড়ি থেকে তার জন্যে গরুর দুধ নিয়ে গেছি। তিনি খেয়েছেন। বঙ্গবন্ধু আমাকে খুব ভালোবাসতেন। আজ তিনি নেই। তার কারণেই দেশ আজ অনেক দূর এগিয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন