প্রতারণার মাধ্যমে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। টাকা ফেরত চাওয়ায় ব্যবসায়ীকে মামলা দিয়ে হয়রানি ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
জানা যায়, মকবুল আহমদের ছেলে নুরুল আফছার ভূঁইয়ার জেনারেল কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বিল্ডার্স একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তার ব্যবসায়ীক অংশীদার চাচাতো ভাই মো. আবু তাহের। আবু তাহের ব্যবসার জন্য উত্তরা ব্যাংক বিরিঞ্চি শাখা থেকে ১০ লাখ টাকা ঋণ নেয়। তিনি ব্যাংক ঋণের সুদের টাকা পরিশোধের জন্য ২০১০ সালের মে মাসে ৫৮ হাজার ৩০০ টাকা নেন। এরপর থেকে ২০১৯ সালের আগস্ট পর্যন্ত আবু তাহের ২ কোটি ২৬ লাখ ৭৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। এছাড়া তাহের প্রতিষ্ঠান থেকে ৪৫ লভ্যাংশ বাবদ ৪৫ লাখ ৫৮ হাজার টাকা, সম্মানি বাবদ ১৩ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, ব্যাংকের সুদ বাবদ ৮১ লাখ ৮২ হাজার টাকা ৯১০ টাকা নেন। ২০১০ সাল থেকে ২০১৯ সালের আগস্ট পর্যন্ত মোট লভ্যাংশ নিয়েছেন ৪৫ লাখ ৯৭ হাজার ৩৬৬ টাকা। প্রতারণা করে এভাবে টাকা নিয়েও তাহের ক্ষান্ত হয়নি। তিনি আফছারের কাছে ১ কোটি ১৫ লাখ ৩৪ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংকের সুদ বাবদ দাবি করেন। যা মামলাটি পিবিআই তদন্তাধীন। তাহের ১ কোটি ৫২ লাখ টাকা পাওনা দাবি করে ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন।
এদিকে নুরুল আফছার ২০২১ সালের ৩ মার্চ তাহের এর কাছে ৪৫ লাখ টাকা দাবি করে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলা তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য প্যানেল মেয়র জয়নাল আবদিন লিটনকে দায়িত্ব দেন। তারা একাধিকবার বৈঠক করেও কোনো সমাধান করতে পারেননি। পরে বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) মামলা তদন্তের নির্দেশ দেন। এতে এক কাউন্সিলর ক্ষিপ্ত হয়ে স্ট্যাম্পে মনগড়া টাকার অংক লিখে তা পরিশোধ করার জন্য বাদী নুরুল আফছার ভূঁইয়াকে চাপ দেন। এব্যাপারে নুরুল আফছার ভূঁইয়া ২০২২ সালের ১১ নভেম্বর ফেনী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এছাড়া আবু তাহের জিএম হাটে সুপার ব্রিক ফিল্ড করার নামে ছাগলনাইয়া পশ্চিম শিমুলিয়া গ্রামের সিকান্দার পাটোয়ারীর ছেলে মো. রফিক, ফেনী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সুলতান আহমদ চৌধুরীর ছেলে এয়ার আহমদ চৌধুরী, দাগনভূঁইয়া লাল মিয়ার ছেলে দীন মোহাম্মদ এর কাছ থেকে ২৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা নিয়েছেন। তাদের টাকা এখনো পরিশোধ করেননি। টাকা চাইলে তাদের হুমকি দেন বলে অভিযোগ করা হয়।
তাতী লীগ সভাপতি আবুল আলম জানান, বিষয়টি সমাধানের জন্য একাধিকবার বৈঠক করা হয়েছে। বৈঠকে তাহের টাকা পাওয়ার প্রমাণ দেখাতে পারেননি। মিথ্যা মামলা দিয়ে নুরুল আফছারকে হয়রানি করছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের পরিদর্শক মো. শাহ আলম জানান, আবু তাহের বিষয়টি আইনী প্রক্রিয়ায় সমাধান চাচ্ছেন না। তিনি টাকা পাওয়ার কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। ওই ব্যাপারে আবু তাহেরের সঙ্গে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন