উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের তেলখোলার চাদরখোলা নামক স্থানে হাতীর পায়ে পৃষ্ট হয়ে ছেনোয়ারা বেগম(৩৫) নামক এক গৃহবধূর মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে।
রোববার ( ১১-ডিসেম্বর), সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের তেলখোলার চাদরখোলা নামক গহীন অরন্যে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। ভিক্টিম গৃহবধুটি স্থানীয় আবুল কালামের স্ত্রী বলে জানা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় সিরাজ মিয়া বলেন, ছেনোয়ারা তার ২ সন্তানকে নিয়ে স্বামী আবুল কালামসহ এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে একটু রাতের অন্ধকারে হাতে টর্চের আলো জ্বালিয়ে চাদর খোলা নামক সরু স্থানে পৌঁছে। হঠাৎ করে একটি বন্য হাতি কোনকিছু বুঝে উঠার আগেই তেড়ে আসলে সাথে থাকা ১ ছেলে ও উনার স্বামী দৌড়ে পার্শ্ববর্তী ঢালুতে পালিয়ে আত্মরক্ষা করতে সক্ষম হয়। কিন্তু ভিক্টিমের কোলে থাকা ছেলেসহ তিনি হাতির সামনে পড়ে যান। তৎক্ষনাৎ ভিক্টিমে উনার কোলে থাকা শিশুকে পার্শ্ববর্তী স্থানে ছুড়ে মারেন, উনি নিজে হাতির সামনে থেকে হাতির কাছে আত্মসমর্পণ করেন। কোন কিছু বুঝে উঠার পুর্বেই হাতির শুড় দিয়ে ভিক্টমকে প্যাচিয়ে উপরে তুলে আছাড় মারে এবং পরে পায়ে পিষ্ট করে দ্রুত হাতিটি স্থান ত্যাগ করে। পরে ভিক্টিমকে তুলে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। এখানে উল্লেখ্য যে, ভিক্টিম মা-তার কোলে থাকা শিশুকে এক পাশে ছোড়ে মেরে নিজকে একপ্রকার আত্মাহুতি দিয়ে পুত্রস্নেহের কাছে মায়ের প্রাণ বিসর্জন দেন। ভিক্টিম মা আবারো প্রমান করলেন সন্তানের প্রতি মায়ের চিরন্তন অকৃত্রিম ভালোবাসা।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ৬ নং ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধি কামাল মেম্বার বলেন, ' ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। হাত্ব্র পায়ে পিষ্ট হওয়া মহিলা আমার ওয়ার্ডের একজন স্থায়ী বাসিন্দা। ঘটনাটি শুনে আমি ঘটনাস্থলে ছুটে আসি। চাদর খোলা এলাকাটি ঘীন অরন্যে অবস্থিত। মুল তেল খোলা থেকে প্রায় দুই কিমিটার দূরে অত্র এলাকাটি অবস্থিত। এই এলাকায় প্রায় ৪০ টি পরিবারের বসবাস। একটু দুর্গম এলাকা হওয়ায় মানুষের চলাচলের রাস্তাটি খুবই সরু। জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হবার পরে, স্থানীয় অধিবাসীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য এই এলাকাটিতে একটা রাস্তা দেবার চেষ্টা করেছি। কিন্তু স্থানীয় কিছু স্বার্থান্বেষী লোক রাস্তা করার জন্য কথা ন জায়পগা ছাড়তে রাজি না হওয়ায় একটি রাস্তা করতে পারিনি। এ ব্যাপারে স্থানীয় মোঃ হোসেনের পুত্র নুর মোহাম্মদসহ কতিপয় স্বার্থান্বেষী ব্যক্তির অসহযোগিতার কারনে রাস্তাটি করতে পারিনি। আজক্র রাস্রাটি করতে পারলে, সোলার প্যানেলের সাহায্যে রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা করলে এরুপ মর্মান্তিক ঘটনার সম্মুখীন হয়ত হতে হতোনা।'
এ ব্যাপারে তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন