কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ভুয়া দলিলের মাধ্যমে দুই বোনের প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি জবরদখলের চেষ্টার মামলায় মনোহরদিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা মেসবাহুর রহমানের (৫৫) তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) পুলিশ ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে কুষ্টিয়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. ফজলে এলাহী খান ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে সোমবার (১২ ডিসেম্বর) বিচারক মো. ফজলে এলাহী খান তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
শাহ মেসবাহুর রহমান কুষ্টিয়া সদর উপজেলার দুর্বচরা গ্রামের মৃত শাহ উজির উদ্দিনের ছেলে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সদর উপজেলার লাহিনী গ্রামের মৃত সামাদ খার ছেলে আক্তার হোসেন, একই গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে তানভির হোসেন, মাধপুর গ্রামের এবাদত মন্ডলের ছেলে দেলোয়ার হোসেন, বেড় বাড়াদি গ্রামের নজরুল ইসলাম নুরু, রাহিনী গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে শামসুল ইসলাম (৩০), নড়াইল জেলার মাধবপাশা গ্রামের হামিদুল হকের ছেলে এসএম জিয়াউর রহমান, তার স্ত্রী সুমনা এবং ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার নেপা মাইলবাড়িয়া গ্রামের মান্নানের মেয়ে মারুফা ইয়াসমিন।
এর আগে জমি জালিয়াতির ঘটনায় শুক্রবার (০৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর সবুজবাগ এলাকা থেকে ভুক্তভোগীদের বাসার ২৩ বছরের বিশ্বস্ত কর্মচারী এসএম জিয়াউর রহমান (৪১) ও তার প্রথম স্ত্রী সুমনাকে (৩২) গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেপ্তারের সময় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়টি স্বীকার করেন।
ভুক্তভোগীরা হলেন- কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার হরিনারায়ণপুর ইউনিয়নের বেড়বাড়াদী গ্রামের মৃত নিয়ামত আলী শেখের মেয়ে জামিলা নাহার শেখ ও জুবাইদা নাহার শেখ। জুবাইদা নাহার শেখ অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী এবং জামিলা নাহার শেখ সরকারি চাকরিজীবী। তারা বর্তমানে ঢাকার গুলশানে বসবাস করছেন।
জানা গেছে, আসামিরা ভূমি অফিস ও তহসিল অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগসাজশে ভুয়া দলিলের মাধ্যমে নামজারি তৈরি করে দুই বোনের প্রায় দশ কোটি টাকার মূল্যের ২৮ বিঘা পৈতৃক জমি ও পেট্রল পাম্পের জমি আত্মসাতের চেষ্টা করে। এ নিয়ে ভুক্তভোগী দুই বোন আদালতের দারস্থ হন। এ বিষয়ে আদালতে ৭টি মামলা চলমান রয়েছে।
ভুক্তভোগীরা বলেন, জালিয়াত চক্র আমাদের জমি ও বাড়ি দখলের চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে পেট্রলপাম্প দখলে নিয়েছেন। তারা সব সময় আমাদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে এবং মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। জালিয়াত চক্রের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
পিবিআই কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার শহীদ আবু সরোয়ার বলেন, আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন