পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের ভূমিহীনদের জন্য তৃতীয় পর্যায়ের দুটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাটি-ভরাট কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষে শ্রমিক দিয়ে ভরাটের কথা থাকলেও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) যোগসাজশে ইঞ্জিনচালিত মেশিন দিয়ে নাম মাত্র বালু ভরাট করে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য ও মাটি ভরাট প্রকল্পের সভাপতিরা। তাদের অভিযোগ শুধু ডেকে নিয়ে স্বাক্ষর নেওয়াই হয়েছে বাকি কিছুই জানেন না তারা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মাধবখালী ইউনিয়নের ৩য় পর্যায়ে একক আশ্রয়ণ প্রকল্পের দশমিক ২৩ একর মাটির ভারাটে ১০ দশমিক ৪২২ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতি টন গম ৫০ হাজার টাকা হিসেবে মোট মূল্য ৫ লাখ ২১ হাজার ১০০ টাকা। আর মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের প্রকল্পের জন্য দশমিক ৫৫ একর জমির মাটি ভরাটের জন্য ১৩ লাখ ৭ হাজার ৩০০ টাকা মূল্যের ২৬ দশমিক ১৪৬ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ দেওয়া হয়।
সরজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানান, মির্জাগঞ্জ প্রকল্পে মেশিন (মাটি কাটার যন্ত্র) দিয়ে চারপাশে মাটি কেটে বেড়া দিয়ে মাঝখানে ড্রেজার কিছু বালু দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। আর মাধবখালি প্রকল্পে একপাশে শ্রমিক দিয়ে কিছু মাটি দিয়ে বেড়া দিয়ে নাম মাত্র বালু দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। যার ফলে প্রকল্পটি ভবিষ্যতে ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। মাধবখালি ইউনিয়নের মাটি ভরাট প্রকল্পের সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য লোকমান বলেন, আমার তো শুধু স্বাক্ষর নিয়েছে, লাখ তিনে টাকার বালু ফালাইছে মনে হয়। আপনারা অফিসে যোগাযোগ করেন।
মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের প্রকল্পের সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আল মামুন হাওলাদার বলেন, ইউএনও বালু দিয়া ভরাট করছে। ৬ লাখ টাকার বালু ফালাইতে পারে। আমি ঢাকা থাকতে সে আমাকে ফোন দিয়ে বলেন আমাকে এইটা দিয়া উদ্ধার করেন। এসে একটু স্বাক্ষর দিয়ে যান। তাদের কাছে আমাদের অনেক কাজ থাকে তাই পরে অফিসে গিয়ে অনেকগুলো কাগজে স্বাক্ষর দিয়ে আসছি। বেশিকিছু আমি জানি না।
মির্জাগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা খোকন চন্দ্র দাস (অতিরিক্ত দায়িত্ব) বলেন, এই কাজটা ইউএনও স্যারে নিজেই করছে। আর তাদের মাধ্যমে গমটা উঠাইছে। আমাদের যে পরিমাণ গমের বরাদ্দ দেওয়ার কথা তার তিন ভাগের এক ভাগ দিছে। আপনি ইউএনও স্যারের সাথে কথা বলেন।
মির্জাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোসা. তানিয়া ফেরদৌউসের মুঠোফোন একাধিক বার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি এবং ক্ষুদে বার্তা পাঠলেও উত্তর দেননি।
পটুয়াখালী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, এই কাজ তো তার না। সে কিভাবে এই কাজ করাতে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন