কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া সমুদ্রসৈকতে আবারও ভেসে এসেছে অলিভ রিডলে প্রজাতির একটি সামুদ্রিক মৃত কচ্ছপ। এটির ওজন প্রায় ৪০ কেজি বলে স্থানীয় লোকজন ও জেলেরা জানিয়েছেন। গতকাল বিকেলে সাড়ে পাঁচটার দিকে টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের মনখালী সমুদ্রসৈকত এলাকার বালুচরে রক্তাক্ত মৃত কচ্ছপটি ভেসে আসে।
বাহারছড়া শামলাপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম এ মঞ্জুর বলেন, ভেসে আসা মৃত কচ্ছপটি রক্তাক্ত ও আহত। কয়েক দিন ব্যবধানে আরও একটি জলপাই রঙের কচ্ছপ ভেসে এল। এটির শরীরের পাশাপাশি মুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, রক্ত ঝরছে এবং জোয়ারের পানিতে রক্তমাখা পানি লালচে হয়ে পড়তে দেখা যায়।
ধারণা করা হচ্ছে, কয়েক ঘণ্টার আগে গভীর সাগরে মাছ ধরার ট্রলার বা ট্রলিং জাহাজের জালে আটকা পড়লে জেলেরা এটিকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন। পরে জোয়ারে উপকূলে ভেসে আসে কচ্ছপটি।
এর আগে ৬ ডিসেম্বর বাহারছড়া সৈকতে ৩০ কেজি ওজনের মৃত অলিভ রিডলে কচ্ছপ ভেসে এসেছিল। মৎস্য বিভাগ জানায়, জলপাই রঙের সাগর কাছিম বা পান্না কাছিমের (Olive ridley sea turtle) বৈজ্ঞানিক নাম Lepidochelys olivacea।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, শীতের শুরুতে সমুদ্রসৈকতে একের পর এক বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক প্রাণীর মৃতদেহ ভেসে আসছে। কিছুদিন আগেও সমুদ্রসৈকতে ভেসে এসেছিল জেলিফিশ। এর কিছুদিন পর ৬ ডিসেম্বর শামলাপুর সৈকতে আরও একটি মৃত কচ্ছপ ভেসে এসেছিল। বিষয়টি নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের গবেষকেরা গবেষণা করছেন। সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষায় জেলেদের সচেতন করতে এলাকায় এলাকায় উঠান বৈঠক ও প্রচারণা চালানো হচ্ছে। প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক জোট আইইউসিএন অলিভ রিডলে কচ্ছপকে ‘সংকটাপন্ন’ প্রজাতি হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
দেলোয়ার হোসেন আরও বলেন, ‘সাগরসংলগ্ন এলাকার মাছ ধরা জেলেদের নিয়ে আমরা গত সপ্তাহে একটি সচেতনতামূলক সভা করেছি। জেলেদের বুঝিয়েছি, জালে কচ্ছপসহ সামুদ্রিক প্রাণী আটকা পড়লে, তা যেন যত্নসহকারে পানিতে ছেড়ে দেন তাঁরা।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন