কোনো কাজেই আসছে না পটুয়াখালীর মহিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। উদ্বোধনের এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও চালু হয়নি এ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটি। চাহিদা অনুযায়ী জায়গা না থাকা এবং মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের সমন্বয়হীনতাকে এজন্য দ্বায়ী করেছেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা। অপরদিকে প্রভাবশালী কয়েকজন মৎস্য ব্যবসায়ীর স্বার্থহানীসহ তাদের সিন্ডিকেট বাণিজ্যিকে এজন্য দ্বায়ী করছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
মহিপুর মৎস্য বন্দরে ৮৫ জন তালিকাভুক্ত আড়ৎদার ছাড়াও তালিকাবার্হিভুত রয়েছে আরো অর্ধশতাধিক আড়ৎদার, আড়াই’শ পাইকারী ও ৫ হাজার খুচরা ব্যবসায়ী, ২৫ হাজার বিভিন্ন শ্রেণির পরিচ্ছন্নকর্মী, ১৫ হাজার শ্রমিক, ২ হাজার ট্রলার মালিকসহ প্রায় ৬০ হাজার জেলে। মৎস্য শিল্পের উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে আহরিত মৎস্য আহরণ, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়া ও বাজারজাতকরণের জন্য মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন ২০১৬ সালে ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটি নির্মাণ কাজ শুরু করে। নির্মাণ করা হয় জেলে ট্রলার থেকে মাছ নামানোর জন্য পন্টুন ও গ্যাংওয়ে, ১ হাজার বর্গফুটের অকশন এলাকা, প্যাকেজিং সেট, আড়ৎদার রুম, বরফকল, জেনারেটর রুম, স্যানিটেশন, মহাসড়ক থেকে মার্কেট পর্যন্ত রাস্তা প্রসস্থ ও সম্প্রসারণ, পয়োনিষ্কাশনসহ সাত হাজার বর্গফুটের একটি ট্রাক স্ট্যান্ড।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে খাপড়া নদীর দক্ষিণপাশে লতাচাপলী ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামে আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র নামে একটি ও ওই নদীর উত্তর পাশে মহিপুর বাজারে মহিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র নামে অপর একটি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। এর মধ্যে গত বছরের ২৬ অক্টোবর আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটির কার্যক্রম পুরোপুরি চালু হয়। বর্তমানে ক্রেতা, বিক্রেতা ও পাইকারদের হাকডাকে ও মানুষের আনাগোনায় মুখরিত থাকে এ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটি। কিন্তু এর পুরো উল্টো চিত্র মহিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে। সামনের গেটে তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে এ অবতরণ কেন্দ্রটি। বন্ধ রয়েছে বরফ কল। দেখলে মনে হয় যেন সুনসান নীরবতা।
মাহাতাব ফিসের স্বত্ত্বাধিকারী আবদুস ছত্তার হাওলাদার জানান, আমার যারা ছোট পরিসরে আড়ৎদার ব্যবসা করছি তারা ওখানে যেতে চাই। কিন্তু এখানে যে আড়ৎ ব্যবসায়ী আছে তার থেকে ওখানে কক্ষ সঙ্কট রয়েছে। তবে বেশির ভাগ মহিপুরের হাওলাদার মার্কেট ও গাজী মার্কেটের গরমসির কারণেই দীর্ঘদিন যাবৎ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটি চালু হচ্ছেনা।
মৎস্য আড়ৎ সৌরভ এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী শাহরিয়ার সুমন জানান, আমাদের ওই কেন্দ্রে যেতে কোনো সমস্যা নেই। আমরা ওখানে যেতে চাই। কিন্তু গাজী মার্কেটের মালিক মজনু গাজী, মহিপুর মৎস্য আড়ৎ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাজা মিয়া ও তার লোকজন ওখানে যেতে চায় না। এছাড়া এখানে আড়ৎদারদের তুলনায় অর্ধেক রুমও নাই এবং মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের লোকজন তেমন তৎপর না। যার কারণে আলীপুরের মতো এ অবতরণ কেন্দ্রটি চালু হচ্ছেনা।
মহিপুর ও আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ম্যানেজার মো. শাকিল জানান, মৎস্য আড়ৎদারদের সঙ্গে আমরা সমন্বয় করার চেষ্টা চালাচ্ছি। আশা করছি ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এটার পুরোপুরি কার্যক্রম চালু হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন