পতনের বৃত্তে আটকে যাওয়া দেশের শেয়ারবাজারে দরপতন কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। সপ্তাহের দুই কার্যদিবসের মতো তৃতীয় কার্যদিবসে গতকাল প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা পাঁচ কার্যদিবস দরপতন হলো শেয়ারবাজারে। টানা দরপতনের সঙ্গে শেয়ারবাজার অব্যাহত রয়েছে লেনদেন খরা। অথচ শেয়ারবাজার ভালো করতে সম্প্রতি একাধিক বিষয়ে ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সর্বশেষ গত সোমবার শেয়ারবাজারের জন্য আরও একটি সুখবর দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। শেয়ারবাজারে যেসব ব্যাংকের বিনিয়োগ আইনি সীমার বেশি রয়েছে, তাদের অতিরিক্ত বিনিয়োগ সমন্বয় করতে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এরপর পতনের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি শেয়ারবাজার। দরপতন এতটাই ভয়াবহ রূপ নিয়েছে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে (সর্বনিম্ন দাম) আটকে রয়েছে। ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের ক্রেতার দেখা তেমন একটা পাওয়া যাচ্ছে না।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ছাড় দেয়ার পর গতকাল মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে শেয়ারবাজারে লেনদেনর শুরুতেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৬ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের প্রথম আধাঘণ্টা সূচকের এ ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকে। তবে লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বদলে যেতে থাকে বাজারের চিত্র। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দরপতনের তালিকায় নাম লেখায়। ফলে টানা পাঁচ কার্যদিবস পতন দেখতে হয় শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের।
মূল্যসূচকের পতনের সঙ্গে বড় হয় দাম কমা প্রতিষ্ঠানের তালিকা। এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ১৪ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৫টির। আর ২৩৫টির দাম অপরবর্তিত রয়েছে।
ফলে ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১২ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২২৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৯৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৬৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩২২ কোটি ৪১ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৪৫৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ১৩৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। টাকার অংকে বাজারটিতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে মুন্নু সিরামিকের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৫ কোটি ২৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশনের ১৯ কোটি ১৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ১২ কোটি ১৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জেনেক্স ইনফোসিস।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-বসুন্ধরা পেপার, অ্যাডভেন্ট ফার্মা, মুন্নু এগারো, ওরিয়ন ইনফিউশনইনফিউশন, আমরা নেটওয়ার্ক, ওরিয়ন ফার্মা এবং এপেক্স ফুডস। অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেয়া ১৩২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৪টির এবং ৭৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন