কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ঢাকা বাদে সারাদেশের ন্যায় রাজশাহীতে শনিবার দুপুরে বিএনপির গণমিছিল শুরু হয়। অসহনীয় দ্রব্যমূল্য, লাগাতার লোডশেডিং, দূর্নীতি-দু:শাসন. গুম, হত্যা, মামলা-হামলা, ভোটাধিকার পুন:প্রতিষ্ঠা, বিএনপি অফিস ভাঙ্গচুর, বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের আটককৃত সকল নেতাকর্মী ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তির দাবীতে এই গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহী জেলা ও মহানগরীর হাজার হাজার মানুষ গণমিছিল রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী ভূবনমোহন পার্ক থেকে শুরু হয়ে রাজশাহী মহানগরী প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে নিউমার্কেট এলাকায় যেয়ে শেষ হয়। সাহেব বাজারসহ পুরো এলাকায় বিএনপির স্লোগানে রাজশাহী শহর মুখরিত হয়ে ওঠে।
গণমিছিল ও পথসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, বিএনপি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, মানুষের ভোটের অধিকার ও এই সরকারের নির্যাতনের কবল থেকে রক্ষা করতে আন্দোলন করছে। বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আন্দোলন করছে না। বিএনপি দিনের ভোট দিনে এবং জনগণের অধিকরা আদায়ের জন্য আন্দোলন করছে। এই আন্দোলনে দেশে সকল মানুষকে অংশ গ্রহন করার জন্য বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ডাক দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন। সেইসাথে তিনি বিএনপি ঘোষিত ১০দফা দাবী তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, এই সরকার পৃথিবীর সকল স্বৈরাচার সরকারকে হার মানিয়েছে। ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করে রাখতে বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিনা ওয়ারেন্টে এবং কোন রকম মামলা ছাড়াই আটক করছে। দলের মহাসচিব, যিনি অতি সজ্জন বলে শুধু বাংলাদেশ নয় পৃথিবীতে পরিচিতি লাভ করেছেন। সেই মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে কোন রকম কারন ছাড়াই রাতের অন্ধকারে বাড়ি থেকে তুলে এনে আটক দেখিয়ে কারাগারে রেখেছে।
বিনা ভোটের এই অবৈধ সরকার ভাবছে দলের মহাসচিব, দলের চেয়ারপার্সন তিনবারের সফল প্রধানমন্ত্রী, মাদার অব ডেমোক্রেসী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, আগামীর রাষ্ট্র নায়ক তারেক রহমান ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও অন্যান্য সিনিয়র নেতৃবৃন্দদের আটক করলে বিএনপি আন্দোলন থেমে যাবে। বিএনপি’র একজন নেতা বাহিরে থাকলে সব ধরনের আন্দোলন চলমান থাকবে। যার প্রমান ঢাকার গণসমাবেশ। কোন বাধাই বিএনপিকে রুখতে পারেনি। যার প্রমান জনগণ, দেশ বিদেশের সকল মিডিয়া বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, বিএনপি’র আর হারানোর কিছু নাই। এখন শুধু পাওয়া আর পাওয়া। এই সরকার দেশকে তার পিতার ন্যায় আবারও তলাবিহিন ঝুড়িতে পরিণত করেছে। সকল প্রকার নিত্যপন্যের মূল্য বৃদ্ধিতে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। রেমিডেন্স কমে এসেছে। সরকারী রিজার্ভ অনেক কমে গেছে। গার্মেন্টস সেক্টর ধ্বংসের পথে। ব্যাংকের তারুল্য সংকট দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন নিত্যাপন্যেও মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেদিকে নজর না দিয়ে বিএনপি’র গণমুখি আন্দোলনকে থামিয়ে দেয়ার জন্য এই ফ্যাসিস্ট সরকার উঠে পরে লেগেছে।
সরকারের পেটয়াবাহিণী দিয়ে ও আওয়ামীলীগ, যুকলীগ ও ছাত্রলীগসহ আওয়ামী সন্ত্রাসী দিয়ে বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি নেতাকর্মীদের হত্যা করছে। মেগা প্রকল্পের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা এই সরকার লোপাট করে বিদেশে পাচার করেছে। সুইচ ব্যাংকে রেখেছে। বিদেশে বাড়ি গাড়ি সব করে নিয়েছে। এই সকল অন্যায় ও অর্থ লোপাট এবং হত্যার বিচার সময় আসলে করা হবে বলে উল্লেখ করেন। এই সরকারের পতন ছাড়া বিএনপি ঘরে ফিরবেনা উল্লেখ করে চলমান সরকার পতনের আন্দোলনে সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন প্রধান অতিথি।
গণমিছিল ও পথ সভায় সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও রাসিক সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক মন্ত্রী এডভোকেট রুহল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রান ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শফিকুল হক মিলন, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম মার্শাল, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপি’র সদস্য দেবাশিষ রায় মধু ও বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপি’র সদস্য আবু বক্কার সিদ্দিক।
উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, রাজশাহী জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব অধ্যাপক বিশ্বনাথ সরকার, সাবেক সভাপতি এডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন তপু, মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন, ওয়ালিউল হক রানা, আসলাম সরকার, জয়নাল আবেদিন শিবলী, শফিকুল ইসলাম সাফিক ও বজলুল হক মন্টু, জেলা বিএনপি’র সদস্য অধ্যাপক আব্দুস সামাদ, রোকনুজ্জামান আলম, অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, সদর উদ্দিন, রায়হানুল আলম রায়হান, গোলাম মোস্তফা মামুন, তাজমুল তান টুটুল, শাহজাহান আলী, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, মকবুল হোসেন, কামরুজ্জামান হেনা, সাইদুর রহমান মন্টু, শাহাদৎ হোসেন, আমিনুল হক মিন্টু ও তোফায়েল হোসেন রাজু।
এছাড়াও মহিলাদল কেন্দ্রীয় কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রোকসানা বেগম টুকটুকি, মহানগর মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সকিনা খাতুন, জেলা মহিলা দলের সভাপতি এডভোকেট সামসাদ বেগম মিতালী, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দা রোমেনা হোসেন, মহানগর ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আকবর আলী জ্যাকি, সাংঘঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাকসুদুর রহমান সৌরভ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহম্মেদ রাহী ও সদস্য সচিব সানিনসহ রাজশাহী জেলা ও মহানগর বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন