রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়েছে গারো পাহাড়ে

এস. কে. সাত্তার, ঝিনাইগাতী (শেরপুর) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৫ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ঝুঁকিতে পড়েছে গারো পাহাড়ের কৃষি। অসময়ে বৃষ্টি, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, নদীভাঙন, শীতকালে দিনে গরম রাতে শীত। গরমে মাত্রাতিরিক্ত দাবদাহ। বৈরী আবহাওয়ায় মানুষ অতিষ্ঠ।
কৃষিতেও পড়েছে প্রভাব। মেঘালয় সীমান্তের গারো পাহাড় শেরপুরের কৃষি ও কৃষক বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মরে যাচ্ছে বৃক্ষ।
শেরপুরে পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র বেষ্টিত। পাহাড়ি নদী মহারশি, ভোগাই, চেল্লাখালি, সোমেশ্বরী, মালিঝি, নিতাই, মৃগী, দশানীসহ ১৬টি নদী ছিল। এখন ৮টি নদীর অস্তিত্ব মেলে। জলবায়ু পরিবর্তনে কৃষি ও কৃষকের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষি উৎপাদন। শেরপুরের ৮০% মানুষ কৃষি নির্ভর। জেলাটি খাদ্য উদ্বৃত্ত জেলা। ২০ বছরে ধানের সঙ্গে যোগ হয়েছে সবজি ও ফল উৎপাদন। ব্রহ্মপুত্র নদে বন্যায় নদী তীরবর্তী জমিতে পলি পড়ে উৎপাদন বৃদ্ধি পেতো। বোরো আবাদ ছাড়া ফসল বা সবজি উৎপাদনে সেচ দেয়ার প্রয়োজন হতো না। বন্যা পরবর্তী নদ-নদীতে এবং বর্ষায় বৃষ্টিতে মাঠ-ঘাট, খালে-বিলে পানি থাকতো। পানিতেই কৃষকরা আমন, পাটসহ সবজি ফলাতো। পাট পচাতেও পানি থাকতো। বৃষ্টির পানিতে আমনসহ সবজি আবাদ করা হলেও এবার দিতে হয়েছে সেচ। তেলের দাম বৃদ্ধি-লোডশেডিংয়ে বাড়তি খরচ যোগ হয়েছে।
শেরপুর সদর উপজেলার চরশেরপুরের দরিপাড়ার কৃষকরা জানান, গত ৩০ বছরেও দেখিনি আবহাওয়ার এমন বৈরি আচরণ। বর্ষায় বৃষ্টি নেই, খরা চলেছে ২ মাস। বন্যার আতঙ্কে থাকতাম। এবার কাঙ্খিত বৃষ্টি হয়নি। পাটের আবাদ ভালো হয়েছিল। জাঁক দেয়ার পানি পাইনি। ৪ হাজার টাকায় খাল ভাড়ায় সেচে জাঁক দিতে হয়েছে।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানান, জেলার সর্বত্র আমন আবাদে সেচ দিতে হয়েছে। বোরো মওসুমে পানির স্তর নিচে নেমে যাবে। কৃষকদের বাড়তি খরচ হবে।
জেলার খামাবাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) কৃষিবিদ হুমায়ুন কবির বলেন, সারা বিশ্বের মতো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়েছে শেরপুরেও। এতে গারো পাহাড়ে কাঙখিত বৃষ্টি হয়নি। এই প্রথম শেরপুর ও গারো পাহাড়ে কৃষকরা সেচে আমন আবাদ করেছে। ধানই নয়, পাটে ও প্রভাব পড়েছে।
প্রবীণ কৃষক ডা. আব্দুল বারী, আলহাজ রেজায়ুর রহমান, শরীফ উদ্দিন সরকার, সোরোয়ার্দী দুদু মণ্ডল ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আয়ুব আলী ফর্সা জানান, জীবনেও সেচে আমন আবাদ করিনি। এবার সেচে আমন আবাদ করতে হয়েছে। গাছপালাও মরে যাচ্ছে। ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ফারুক আল মাসুদ বলেন, শুধু শেরপুর বা গারো পাহাড় নয় বিশ^জুড়ে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। এ ব্যাপারে কারো হাত নেই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন