সরকার পতনের লক্ষ্যে যুগপৎ আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচি গণমিছিল করেছে ১২ দলীয় জোট। চূড়ান্ত বিজয় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জোটের নেতারা। গতকাল শুক্রবার বেলা তিনটায় রাজধানীর বিজয় নগর পানির ট্যাংকের সামনের সড়কে গণমিছিল পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জোটের নেতারা এই ঘোষণা দেন। এর আগে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে বিজয় নগর এলাকায় জড়ো হতে থাকেন ১২-দলীয় জোটের নেতারা। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বিজয় নগর পানির ট্যাংকের সামনে থেকে এই জোটের মিছিল শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে একই স্থানে এসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে জোটের নেতারা বিজয় নগর পানির ট্যাংকের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু করে পুরানা পল্টন মোড়ে ঘুরে নাইটিঙ্গেল মোড়ে গিয়ে মিছিল শেষ করেন।
গণমিছিলের আগে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, দেশের রাজনীতির ইতিহাসে আজ নতুন পর্বের সূচনা হয়েছে। যুগপৎ আন্দোলন এ দেশে নতুন পরিস্থিতির জন্ম দেবে।
তিনি বলেন, চূড়ান্ত বিজয় না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলবে। আগামী ১১ জানুয়ারির নতুন আরেকটি কর্মসূচি ঘোষণা দেন তিনি। ওই দিন বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। বিএনপি ঘোষিত ১০ দফা দাবি আদায় এই কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক বলেন, ডিসেম্বর মাসে বিজয়ের যাত্রা শুরু হয়েছে। বিজয় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাবেন না। শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তন করে তাঁরা ঘরে ফিরবেন।
এনডিপির চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদ আবু তাহের বলেন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ১৭০ দিন হরতাল করেছিল। ক্ষমতায় এসে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করেছে। অবিলম্বে সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল উত্থাপন করতে হবে। রাজবন্দীদের মুক্তি দিতে হবে।
বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, যুগপৎ আন্দোলনের মাধ্যমে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। সরকার পালিয়ে যাওয়ার রাস্তা খুঁজছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে না দিলে সরকার পালিয়ে যাওয়ার পথ পাবে না।
মুসলিম লীগের মহাসচিব জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী বলেন, মেহনতি জনতার সংগ্রাম কখনোই ব্যর্থ হয় না।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের গোলাম মো. ইকরাম বলেন, তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া দেশে নির্বাচন হবে না। আলেমদের মুক্তি দিতে হবে।
ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব আবদুল করিম বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে চার বছর কারান্তরীণ রেখে তিলে তিলে মারার চেষ্টা চলছে। আলেম-ওলামাদের অন্যায়ভাবে দুই বছর কারাবন্দী করে রাখা হয়েছে। আমরা আলেম-ওলামাসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি চাই।
এছাড়াও সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জাগপার সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, এনডিপির চেয়ারম্যান কাজী মোহাম্মদ আবু তাহের, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
গণমিছিলে অংশ নিয়ে নেতা-কর্মীরা ‘এই মুহূর্তে দরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার’, ‘নিশিরাতের সরকার আর না আর না’, ‘পুলিশ দিয়ে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।#
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন