চট্টগ্রাম বন্দরে গেল বছর পণ্য পরিবহন বেড়েছে। তবে কমেছে কনটেইনার পরিবহন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশে অব্যাহত ডলার সঙ্কটে ঋণপত্র খোলার হার কমার প্রভাব পড়েছে কনটেইনার পরিবহনে। বন্দরের কর্মকর্তারা বলছেন, যুদ্ধের প্রভাবে ডলার-সঙ্কট দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। রেমিট্যান্স এবং রফতানি খাতে মন্দার কারণে রিজার্ভে টান পড়ে। এ কারণে বিলাস পণ্য এবং অতি জরুরি নয় এমন সব পণ্যের ঋণপত্র (এলসি) খোলার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে সরকার। ফলে বছরের শেষদিকে এসে দেশে আমদানি অনেক কমে গেছে। এতে কনটেইনারবাহী পণ্যের আমদানি-রফতানি কমায় পরিবহনও কমেছে।
বন্দর কর্মকর্তাদের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, ২০২২ সালে চট্টগ্রাম বন্দর ও এর আওতাধীন কমলাপুর কনটেইনার ডিপো ও পানগাঁও নৌ টার্মিনালের দিয়ে আমদানি-রফতানি ও খালি মিলিয়ে প্রতিটি ২০ ফুট লম্বা হিসেবে কনটেইনার পরিবহন হয়েছে ৩১ লাখ ৪২ হাজার ৫০৪টিইইউএস। ২০২১ সালে ৩২ লাখ ১৪ হাজার কনটেইনার পরিবহন হয়েছে। এ হিসেবে প্রায় আড়াই শতাংশ কমেছে কনটেইনারে পণ্য পরিবহন। এর আগে, ২০২০ সালে ২৮ লাখ ৩৯ হাজার ৯৭৭, ২০১৯ সালে ৩০ লাখ ৮৮ হাজার ১৮৭, ২০১৮ সালে ২৯ লাখ ৩ হাজার ৯৯৬ এবং ২০১৭ সালে ২৬ লাখ ৬৭ হাজার ২২৩ কনটেইনার পরিবহন করেছিল চট্টগ্রাম বন্দর।
তবে সব ধরনের পণ্য পরিবহন ২০২২ সালে আগের বছরের তুলনায় বেশি হয়েছে। ২০২২ সালে ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৬৫ হাজার ৬৮২ মেট্রিকটন পণ্য পরিবহন হয়। ২০২১ সালে পরিবহন হয় ১১ কোটি ৬৬ লাখ। পণ্য পরিবহন বেড়েছে ২ শতাংশের কিছু বেশি। ২০২০ সালে এ সংখ্যা ছিল ১০ কোটি ৩২ লাখ ৯ হাজার মেট্রিকটন এবং ২০১৯ সালে ১০ কোটি ৩০ লাখ ৭৭ হাজার মেট্রিকটন। ২০২২ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ এসেছে ৪ হাজার ৩৬১টি। ২০২১ সালে এসেছিল ৪ হাজার ৫৪টি। ২০২০ সালে ৩ হাজার ৭২৮টি এবং ২০১৯ সালে ছিল ৩ হাজার ৮০৭টি। বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রভাবে ২০২০ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার পরিবহন এবং বন্দরে জাহাজ আসার সংখ্যা কমে যায়। তবে একবছরের মাথায় কনটেইনার পরিবহন ও জাহাজ হ্যান্ডলিং আবারও অগ্রগতির ধারায় ফিরেছিল। কিন্তু ২০২২ সালে এসে অগ্রগতি আবারও থমকে গেছে। ১৯৭৭ সালে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে কনটেইনার পরিবহন শুরু হয়। দেশের আমদানি-রফতানি খাতের ৯৮ শতাংশ কনটেইনার চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পরিবহন হয়। বাকি দুই শতাংশ মোংলা বন্দর দিয়ে হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন