স্টাফ রিপোর্টার : দেশে নারী ও শিশুসহ ৪ লাখ লোক ‘বর্জ্যজীবী’। এ পেশার সাথে সম্পৃক্ত হয়ে তারা তাদের জীবন ও জীবিকা টিকিয়ে রেখে চলেছে। ‘বর্জ্যজীবী’ বা ধিংঃব ঢ়রপশবৎ হলো শহরের একটি অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠী যারা রাস্তা, ডাস্টবিন বা বর্জ্য ডাম্পসাইট থেকে বর্জ্য সংগ্রহ ও তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। অনেকে এদের ‘টোকাই’ বলেও অভিহিত করে। ২০০৯ সালের পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী শুধু ঢাকা শহরেই ১ লাখ ২০ হাজার দরিদ্র মানুষ ফেলে দেয়া বর্জ্য সামগ্রী পুনঃচক্রায়ন ও পুনঃব্যবহারের ব্যবসার সাথে জড়িত। তারা ঢাকা শহরের মোট বর্জ্যরে শতকরা ১৫ ভাগ পুনঃচক্রায়ন ও পুনঃ ব্যবহারের কাজ করে থাকে যার মূল্য বছরে প্রায় ১ হাজার ৭১ কোটি টাকার মতো।
গতকাল সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে “গ্রামবাংলা উন্নয়ন কমিটি এবং বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরাম” যৌথভাবে এক সভার আয়োজন করে। এতে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট গবেষক ও গ্রামবাংলা উন্নয়ন কমিটির প্রধান নির্বাহী একেএম মাকসুদ আহমদ। বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সাংবাদিক সালিম সামাদ, খায়রুজ্জামান কামাল, এনামুল কবীর রুপম। জাতীয় অর্থনীতিতে বড় ধরনের ভ‚মিকা থাকা সত্তে¡ও বর্জ্যজীবীরা সমাজের এক অবহেলিত শ্রেণি হিসাবে বিবেচিত।
তাদের কাজের কোনও আইনগত স্বীকৃতি নেই; শিক্ষার সুযোগ থেকে বর্জ্যজীবী শিশুরা বঞ্চিত; দক্ষতা বৃদ্ধির কোনও সুযোগ নেই; স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত। বর্জ্যজীবী শিশুদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং জীবন ও জীবিকা সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিতকরণ সভায় বক্তাগণ নানা প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। শহরের ডাম্পিং সাইটে ট্রাকগুলো আবর্জনা ফেলে এবং বুলডোজারগুলো আবর্জনা সমান করতে থাকা আবার একইসাথে শত শত শিশু-কিশোর-কিশোরী-নারী-পুরুষ এক হাতে আরচা ও অন্য হাতে বস্তা নিয়ে বর্জ্য সংগ্রহের প্রতিযোগিতায় নামে। পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, শহরগুলোতে ১৩ হাজার ৩শ’ ৩২টন বর্জ্য তৈরী হয় যা ২০২৫ সালে বেড়ে হবে ৪৭ হাজার টন।
সভায় আলোচকগণ, বর্জ্যজীবী নারী ও শিশুদের মানবাধিকার রক্ষায় সরকারকে উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য আহবান জানানো হয়। সেই সাথে বর্জ্যজীবী শিশুদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং জীবন ও জীবিকা অবস্থার উন্নয়নে নীতি নির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণের উদ্দেশ্যে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন