নতুন বছরে শেয়ারবাজারে মূল্যসূচক অবশেষে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। তবে দাম বাড়ার তালিকায় যে কয়টি প্রতিষ্ঠান নাম লিখিয়েছে, দাম কমার তালিকায় রয়েছে তার দ্বিগুণের বেশি। আর লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় কিছুটা বাড়লেও প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন দুইশো কোটি টাকা স্পর্শ করতে পারেনি। বছরের তৃতীয় কার্যদিবস গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচক বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। এর মাধ্যমে টানা দুই কার্যদিবস পতনের পর শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিললো। সূচক ও লেনদেন বাড়লেও দুই বাজারেই দাম বাড়া প্রতিষ্ঠানের তুলনায় দাম কমা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেশি।
এর আগে নতুন বছর ২০২৩ সালের প্রথমদিন গত রোববার সবকটি মূল্যসূচকের পতন হয়। একই সঙ্গে ডিএসইতে দুইশো কোটি টাকার কম লেনদেন হয়। বছরের দ্বিতীয় কার্যদিবস গত সোমবারও সবকটি সূচকের পতন হয়। আর লেনদেন কমে দেড়শো কোটি টাকার নিচে নেমে আসে। এতে ২০২০ সালের ৭ জুলাইয়ের পর সর্বনিম্ন লেনদেনের ঘটনা ঘটে।
এমন পরিস্থিতিতে গতকাল ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমার মাধ্যমে। এরপরও লেনদেনের শুরুতে সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকে। তবে ১০ মিনিটের মধ্যে সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। সূচকের ঋণাত্মক ধারা অব্যাহত থাকে লেনদেনের প্রথম আড়াই ঘণ্টাজুড়ে। এতে আবারও দরপতনের শঙ্কা পেয়ে বসে বিনিয়োগকারীদের।
তবে দুপুর সাড়ে ১২টার পর বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায়। এতে পতন কাটিয়ে উঠে মূল্যসূচক। অবশ্য এরপরও যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে, কমেছে তার দ্বিগুণের বেশি। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৪৪ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৯টির। আর ১৬৯টির দাম অপরবর্তিত রয়েছে।
এরপরও ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ১৮৫ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৭৩ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৯২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৫২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়ছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১৯৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১৪৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৫২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৫ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশনের ১০ কোটি ২৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মুন্নু সিরামিক।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বসুন্ধরা পেপার, ওরিয়ন ফার্মা, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, জেনেক্স ইনফোসিস এবং আমরা নেটওয়ার্ক। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেয়া ১৭০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৯টির এবং ১০২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন