জাতীয় শিক্ষানীতিতে ধর্মীয় শিক্ষার সঙ্কোচনের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, ধর্মহীন শিক্ষানীতি জাতিকে পঙ্গু করার নামান্তর। ইসলামী শিক্ষা সঙ্কোচন করে নাস্তিক্যবাদ শিক্ষা চালুর ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না। অবলিম্বে প্রত্যেক শ্রেণিতে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। একই সাথে তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি সম্পাদন, সীমান্তহত্যা বন্ধ, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে জাতীয়-আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা। ভারত প্রতিবেশি বন্ধু হলে তিস্তার ন্যায্য পানির হিস্যা দিতে হবে। কাশ্মীরে পাখির মতো মুসলিম গণহত্যা বন্ধ করতে হবে। সীমান্ত হত্যা বন্ধ করে বন্ধুত্বের প্রমাণ দিতে হবে।
কার্যকর স্বাধীন নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা, অবহেলিত সুফিবাদী জনতার অধিকার আদায় ও জাতীয় শিক্ষানীতিতে ধর্মীয় শিক্ষা সঙ্কোচনের প্রতিবাদসহ পাঁচ দফা দাবিতে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় পরিষদের ব্যবস্থাপনায় আজ শনিবার সকাল ৯টায় ঢাকার ঐতিহাসিক গুলিস্তান চত্বরে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট চেয়ারম্যান আল্লামা এম এ মতিন। মহাসমাবেশের ঘোষণাপত্র ১০ দফা প্রস্তাবনা পেশ করেন দলের মহাসচিব প্রিন্সিপাল স.উ.ম আবদুস সামাদ। দলের চেয়ারম্যান এম এ মতিন বলেন, আমাদের দেশে নির্বাচন ঘনিয়ে আসলেই এক অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হয়। ক্ষমতায় থাকার জন্য ও ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য এ অসুস্থ প্রতিযোগিতার বলী হয় সাধারণ জনগণ। এভাবে গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার ভুলন্ঠিত হচ্ছে বার বার। এ অবস্থা আর চলতে পারে না। আমরা চাই দেশে সুস্থধারার রাজনীতির বিকাশ হোক, জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত হোক। এ জন্য চাই স্বচ্ছ ব্যালটবাক্সে ব্যালট পেপারে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। নির্বাচন কমিশনকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে। নতুন আইন পাশ করে নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী ও কার্যকর স্বাধীন করতে হবে। অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক বা দলীয় সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না এবং নিরপেক্ষ, অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পাদনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি যে স্থায়ী সমাধান নয় তা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, দেশের অধিকাংশ মানুষ সূফিবাদী। অথচ সুফিবাদীরা দেশে সবচেয়ে অবহেলিত ও অধিকার বঞ্চিত। সুফিবাদী আলেম ও নেতাকর্মীদের হত্যাকা-ের কোন বিচার হয়নি। বায়তুল মুকাররম, ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ কোথাও সুফিবাদী জনতার প্রতিনিধিত্ব নেই। দেশের উপজেলা পর্যায়ে বাস্তবায়নাধীন ৫৬০ টি মডেল মসজিদের অধিকাংশই আজ স্বাধীনতা বিরোধী উগ্রবাদীদের দখলে। সুফিবাদী জনতার প্রতি আর বৈষম্য বরদাশত করা হবে না। আমরা সুফিবাদী জনতাকে তাদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করার জোর দাবি জানাচ্ছি। তিনি দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে প্রবাসীদের বৈধ চ্যানেলে প্রেরিত অর্থে প্রণোদনা প্রদানসহ অর্থ পাচারকারী, দুর্নীতিবাজ, জঙ্গীবাদীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান। বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মহাসচিব প্রিন্সিপাল স.উ.ম আবদুস সামাদ জাতীয় শিক্ষানীতিতে ধর্মীয় শিক্ষার সঙ্কোচনের তীব্র প্রতিবাদ বলেন, ধর্মহীন শিক্ষানীতি জাতিকে পঙ্গু করার নামান্তর। অবলিম্বে প্রত্যেক শ্রেণিতে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। একই সাথে তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি সম্পাদন, সীমান্তহত্যা বন্ধ, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে জাতীয়-আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। মহাসমাবেশে আরোও বক্তব্য রাখেন, আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআত বাংলাদেশের চেয়ারম্যান শায়খুল হাদিস আল্লামা কাজী মঈনুদ্দীন আশরাফী, কো-চেয়ারম্যান শায়খুল হাদিস সোলাইমান আনসারী, মহাসচিব পীরে তরিকত সৈয়দ মুহাম্মদ মছিহুদ্দৌলা, সাংগঠনিক সচিব প্রিন্সিপাল ড. ইছমাঈল নোমানী। বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট প্রেসিডিয়াম সদস্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী হারুন, শাহাব উদ্দীন, চৌধুরী প্রিন্সিপাল আহমদ হোসাইন আলকাদেরী, প্রিন্সিপাল ড. শেখ আফজল হোসেন, এম সোলায়মান ফরিদ, পীরে তরিকত ছাদেকুর রহমান হাশেমী, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী এম এ ওয়াহিদ সাবুরী, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম পাঠোয়ারী, প্রিন্সিপাল আবু জাফর মঈনুদ্দিন, প্রিন্সিপাল আল্লামা তৈয়্যব আলী, শেখ শাহজাদা গোলাম মুহাম্মদ আবদুল কাদের কাউকাব, অধ্যাপক নাজিম উদ্দিন, শাহজালাল আখঞ্জি, সৈয়্যদ মুজাফফর আহমদ মুজাদ্দেদী, প্রিন্সিপাল আবু তালেব বেলাল পীরজাদা গোলামুর রহমান আশরফ শাহ। মহাসমাবেশের ১০ দফা প্রস্তাবনা পেশ করেন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মহাসচিব প্রিন্সিপাল স.উ.ম আবদুস সামাদ।
প্রস্তাবে বলা হয়, এনসিটিবি জাতীয় শিক্ষাক্রমে ধর্মীয় শিক্ষা সঙ্কোচন নীতি গ্রহণের প্রতিবাদ জানাচ্ছে আজকের সমাবেশ। ধর্মহীন জাতি পশুত্বের নামান্তর। প্রাথমিক পর্যায় হতে শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। স্কুলের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সাথে মাদরাসা পর্যায়ের ইবতেদায়ী ও দাখিল পর্যায়ে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করে সরকার কর্তৃক প্রণীত ও জাতীয় সংসদে গৃহীত জাতীয় শিক্ষা নীতি-২০১০ অনুযায়ী স্বতন্ত্র শিক্ষাক্রম,পাঠ্যসূচি ও পাঠ্যবই তৈরি করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্দ্ধগতিতে নাকাল দেশের সাধারণ জনগন। সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের দমনপূর্বক নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। দুর্নীতিবাজ-জঙ্গিবাদ - সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠাই বিদ্যমান আইন বাস্তবায়নে কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন