চলতি লবণ মৌসুমে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানীর টার্গেট নিয়ে প্রায় ৪০ হাজার চাষি লবণ উৎপাদনে মাঠে নেমেছে। লবণ উৎপাদন এলাকার ৬৩ হাজার ২৯১ হেক্টর জমিতে এবারে লবণ চাষ হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে লবণের মূল্য ভালো থাকায় চাষিরা খুশী এবং লবণ উৎপাদনে আগ্রহী। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে চলতি মৌসুমে রেকর্ড পরিমান লবণ উৎপাদনের আশা করছেন সংশিষ্টরা।
কক্সবাজার বিসিক সূত্র মতে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমের ২৩ লাখ ৮৫ হাজার মেট্রিকটন চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানীর মত অতিরিক্ত লবণ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
বাজারে লবণের মূল্য স্থিতিশীল থাকায় এবং চাষিরা প্রশিক্ষণ পাওয়ায় দ্বিগুন উৎসাহ নিয়ে তারা মাঠে নেমেছে। এছাড়াও গত বছর এই সময়ে প্রতিমণ লবণের
বাজার মূল্য ছিল ২টাকা ৮৫ পয়সা। কিন্তু চলতি মৌসুমে বর্তমানে প্রতিমন লবণের
বাজার মূল্য ৪টাকা ৬৩ পয়সা। চাষিদের আন্তরিকতায় ১লা জানুয়ারী পর্যন্ত ২৮ হাজার ৬১০ মেট্রিকটন লবণ উৎপাদন হয়েছে। অথচ গত বছর এই সময়ে লবণ উৎপাদন হয়েছিল মাত্র ১হাজার ৪৫০ মেট্রিকটন।
লবণ বাংলাদেশের অন্যতম একটি স্বনির্ভর খাত। কক্সবাজারের কুতুবদিয়া, মহেশখালী, পেকুয়া, চকরিয়া, কক্সবাজার সদর, উখিয়া ও টেকনাফে লবণ উৎপাদনের জমি রয়েছে। এছাড়াও দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কিছু এলাকায় লবণ উৎপাদন হয়ে থাকে। সব মিলিয়ে চলতি মৌসুমে লবণ উৎপাদনের জমির পরিমান হচ্ছে ৬৩ হাজার ২৯১ হেক্টর।
সংশ্লিষ্টদের মতে দেশের লবণ উৎপাদন এলাকা থেকে যথাযথভাবে লবণ উৎপাদন করা হলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব। কিন্তু একটি মহল নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য কৃত্রিম ঘাটতি দেখিয়ে লবণ আমদানি করে দেশীয় এই স্বনির্ভর খাতকে ধ্বংস করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে উৎপেতে আছে। সুযোগ বুঝে তারা যে কোন সময় লবণ আমদানির জিকির তুলে থাকে।
এছাড়াও লবণ শিল্পের উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজারে একটি লবণ বোর্ড স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন লবণ সংশ্লিষ্টরা।
বিসিক কক্সবাজারের উপ মহা ব্যবস্থাপক মোঃ জাফর ইকবাল ভূঁইয়া এপ্রসঙ্গে বলেন, দেশের চাহিদা মিটিয়ে বাইরে রপ্তানি করা যায় মত সার্ফেলাস লবণ উৎপাদনের জন্য চাষীদের প্রশিক্ষিত করা এবং সরকারী সহযোগিতার কোন বিকল্প নেই। এব্যাপারে বিসিক সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, লবণ বোর্ড হলেই যে সমস্যার সমাধান হবে-তা কিন্তু ঠিক নয়। বিসিকে আরো জনবল বাড়িয়ে শক্তিশালী করা হলে লবণ শিল্পের সমস্যা সমাধান সম্ভব। তবে লবণ শিল্পের উন্নয়নে শহরের কাছে চৌফলদন্ডিতে ৩০ একর জমির উপর বঙ্গবন্ধু লবণ গবেষণা ইনস্টিটিউট স্থাপনে সমীক্ষা ও সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে এটি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এটি হলে লবণ চাষীদের সমস্যার সমাধান হবে। তিনি আরো বলেন, কাদা লবণের পরিবর্তে সাদা লবণ উৎপাদনে পলিথিন পদ্ধতির বিষয়টি বুঝাতে চাষীদের ১২ বছর সময় লেগেছে। তিনি আশা করছেন, চলতি মৌসুমে রেকর্ড পরিমান লবণ উৎপাদন হবে। যা দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানী করা সম্ভব হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন