জঙ্গি সংগঠন 'জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র' অস্ত্র সরবরাহকারীসহ তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি)।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে কবীর আহাম্মদ এই জঙ্গি সংগঠনকে টাকার বিনিময়ে অস্ত্র সরবরাহ করত। সরবরাহ করতে গিয়ে নিজেই হয়ে যান জঙ্গি সংগঠনের সদস্য।
রোববার বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি ও রাজধানীর কদমতলী এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। মো. কবীর আহাম্মদসহ (৫০) গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. ইয়াসিন (৪০) ও আব্দুর রহমান ইমরান (২৬)।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, সিটিটিসি গত বছরের ২১ ডিসেম্বর কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের একটি দল জঙ্গি সংগঠনটির সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম তুহিন ও মো. নাঈম হোসেনকে পার্বত্য চট্রগ্রামের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও সংগৃহীত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এ সংগঠনে অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে কবির আহাম্মদকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয় সিটিটিসি।
পরে সিটিটিসির একটি দল কবির আহাম্মদকে বান্দরবান জেলা থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যাংছড়ি থানাধীন বাইশারী এলাকার দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে দুটি প্লাস্টিকের ড্রাম ভর্তি অস্ত্র ও গোলাবারূদ জব্দ করা হয়।
সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান বলেন, কবীর আহাম্মদ জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ায় অস্ত্র সরবরাহ করেছিল এবং জব্দ করা অস্ত্রের কিছু অংশ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর কাছে সরবরাহ করার পরিকল্পনা ছিল। প্রাথমিকভাবে তার বিরুদ্ধে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় অস্ত্র মামলার তথ্য পাওয়া যায়। জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার মাষ্টার মাইন্ড পলাতক আসামি শামিন মাহফুজ দুর্গম পার্বত্য এলাকায় সংগঠনের সশস্ত্র প্রশিক্ষণের জন্য বিভিন্ন ধাপে অস্ত্র সংগ্রহের জন্য তার সঙ্গে যোগাযোগ করে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার কবির আহাম্মদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগরীর কদমতলী থানা এলাকা থেকে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার আরও ২ সক্রিয় সদস্য মো. ইয়াসিন (৪০) ও আব্দুর রহমান ইমরানকে (২৬) গ্রেপ্তার করা হয়। তারা উভয়েই পলাতক আসামি শামিন মাহফুজের ঘনিষ্ট সহযোগী।
সিটিটিসি প্রধান জানান, আব্দুর রহমান ইমরানের মাধ্যমে শামিন মাহফুজ বিভিন্ন সময় তার সাংগঠনিক আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করতেন। ইয়াসিন বিভিন্ন সময় শামিন মাহফুজের জন্য সেল্টার হাউজ ব্যবস্থাপনাসহ সংগঠনের উগ্রবাদী আদর্শে দীক্ষিত হয়ে হিজরতে গমনকারীদের জন্য ব্যবহৃত সেল্টার হাউজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন।
তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ৩টি দেশীয় পিস্তল, ৬টি একনলা বন্দুক, ১১ রাউন্ড গুলি, ১৪০ রাউন্ড সিসার তৈরি গুলি, ২ লিটার অ্যাসিড, গান পাউডার, লিটার অকটেন, ২ কার্টুন ম্যাচবক্স, একটি কয়েল বৈদ্যুতিক তার, ২ বোতল দাহ্য রাসায়নিক পদার্থ, ২টি স্প্রে ক্যান, ১টি লোহার করাত, স্কচ টেপ ও সুপার গ্লু, ট্রেনিংয়ের পোষাক ও টুপি এবং হ্যান্ডস করাত ও ব্লেড জব্দ করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন