শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

রাজাপুর উপজেলা প্রধান ডাকঘর জরাজীর্ণ, প্রাচীরের অভাবে মদ গাঁজার আসর।

রাজাপুর ( ঝালকাঠি) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ জানুয়ারি, ২০২৩, ৩:১৮ পিএম

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা পোস্ট অফিসের পরিত্যক্ত জরাজীর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে কার্যক্রম। পরিত্যক্ত ভবনের ছাদের বিভিন্ন স্থান থেকে কখনো মাথার উপর কখনো যন্ত্রপাতির উপর খুলে পড়ছে পলেস্তারা,ভীম ফেটে গেছে। দীর্ঘদিন কোন সংস্কার কিংবা মেরামত না করায় বর্তমানে পোস্ট অফিসের ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে কোন সময় বড়ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জানা গেছে, মানুষের কাছে বর্তমান সময়ে পোস্ট অফিসের গুরুত্ব কমে গেলেও এখনো সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের চিঠিপত্র আদান-প্রদান, চাকরীর আবেদন, সঞ্চয়পত্র লেনদেনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য এখনো পোস্ট অফিসে আসতে হয়। রাজাপুর উপজেলা পোস্ট অফিস এখন ও তার জনগুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করে আসছে। কিন্তু পোস্ট অফিসের ভবনের অবস্থা এতই ঝুঁকিপূর্ণ যে সব সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।

এছাড়াও পোস্ট অফিসে আসা সেবাগ্রহীতাদের সব সময় ছাদের দিকে চেয়ে থাকতে হয় কারণ কখন যে মাথার উপর ছাদের নিচের পলেস্তারা খুলে পড়বে তা বলা মুশকিল। শুধুমাত্র ভবনের ভিতরের অংশই নয় পুরো পোস্ট অফিস চত্বরের প্রতিটি জিনিসের অবস্থা খুবই নাজুক। নিরাপত্তা প্রাচীর নেই,। আবাসিক ভবনের ভেতর দিন-রাত বিভিন্ন জীবজন্তু খেলা করে। যার কারণে সন্ধ্যার পর থেকে এক ভুতরে পরিবেশের সৃষ্টি হয় পোস্ট অফিস প্রাঙ্গণে। মাদকসেবী, চোর-ছিনতাইকারীদের জন্য পোস্ট অফিস এখন রাতের বেলায় অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। সরকারি এমন জনগুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের প্রতি নতুন করে মানুষদের আগ্রহ সৃষ্টি করার জন্য পরিত্যক্ত এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেতঙ্গে আধুনিকমানের একটি নতুন ভবন নির্মাণ করা এখন সময়ের দাবীতে পরিণত হয়েছে।
পোস্ট অফিসে আসা সেবাগ্রহীতা বীরমুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম , আবদুস সোবাহান, দলিল লেখক মোঃ আবুল কালাম আজাদ মিলন সহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, সরকারি দপ্তরগুলোর খারাপ অবস্থা তা জানতাম কিন্তু এতো পরিমাণ খারাপ তা আমাদের জানা ছিলো না। সরকারি দপ্তরগুলো যে খুবই অবহেলিত তা এই পোস্ট অফিস ভবনে এলে স্পষ্ট বোঝা যায়। আমরা পোস্ট আসলে সব সময় ভয়ে ভয়ে থাকি যে কখন বুঝি ভবনের ছাদ ভেঙ্গে আমাদের উপর পড়ে। যেদিন ভবন ভেঙ্গে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটবে তখন সরকারের টনক নড়বে। অতিদ্রুত পোস্ট অফিসের এই ঝুঁকিপূর্ণ মরনফাঁদ ভবনটি ভেঙ্গে আধুনিক মানের একটি ভবন নির্মাণ করা প্রয়োজন তা না হলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কেউ পোস্ট কোন সেবা নিতে আসবে না।

পোস্টমাস্টার মোঃ নাসির উদ্দিন বলেন,রাজাপুর উপজেলা ডাকঘরের প্রাচীর না থাকায় অফিসের পিছনে বসে গাঁজা সেবনকারীরা অনায়াসে মদ ও গাজা সেবন করে।জরাজীর্ণ ভবনটি ১৯৮৫ নির্মান করা হয়েছে। ‘আমরা পোস্ট অফিসে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেবা দিয়ে আসছি। ছাদের পলেস্তারা খুলে পড়ে অফিসের অনেক মূল্যবান যন্ত্রপাতিগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। গরমের সময় আমরা ভয়ে ফ্যান চালু করি না কারণ ফ্যান কখন যে মাথার উপর কিংবা সেবাগ্রহীতাদের মাথার উপর খুলে পড়ে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। এমতাবস্থায় আমরা সেবার মানও বাড়াতে পারছি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘কার্যক্রমগুলো না করলেই নয় সেগুলো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চালিয়ে আসছি। পোস্ট অফিসের প্রতি সাধারণ মানুষদের আগ্রহী করতে চাইলে দ্রুত পরিত্যক্ত এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙ্গে একটি আধুনিক মানের নিরাপদ পোস্ট অফিস ভবন নির্মাণ করা জরুরী। তা না হলে এক সময় সরকারি এই গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর থেকে সাধারণ মানুষরা পুরোপুরি মুখ ঘুরিয়ে নিবেন। কতবার যে ভবনের এমন অবস্থার কথা কাগজে-কলমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি তার কোন ইয়ত্তা নেই। কিন্তু কোন ফল পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে জেলা পোস্ট অফিস পরিদর্শক মোঃ রিয়াজ হোসেন বলেন - আমাদের জরাজীর্ণ চতুর্থ পর্যায়ের কার্যক্রম দেশব্যাপী চলমান, জরাজীর্ণ পোস্ট অফিসের প্রক্কলন দেয়া থাকলে ও অনুমোদনের জন্য কাজ হচ্ছে না, বিভাগীয় অফিস সার্কেল খুলনাতে আছে, বরিশালে না থাকায় জনগনের ভোগান্তি হচ্ছে।শুধুমাত্র আশ্বাসই এখন আমাদের প্রধান ভরসা। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন