বাংলাদেশী মুসলিম কমিউনিটি ইউকের উদ্যোগে গতকাল (৯ জানুয়ারি, সোমবার) সন্ধ্যায় বার্মিংহামে অনুষ্ঠিত হয়েছে “বাংলাদেশে শিক্ষা ব্যবস্থায় ধর্মীয় ও নৈতিকতা বিবর্জিত পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন: ভবিষ্যৎ জাতি গঠনে এর প্রভাব এবং আমাদের করণীয়” শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক।
লতিফিয়া ফুলতলী কমপ্লেক্স বার্মিংহামের চেয়ারম্যান মাওলানা এম এ কাদির আল হাসান-এর সভাপতিত্বে ও সিরাজাম মুনিরা জামে মসজিদ এন্ড এডুকেশন সেন্টার বার্মিংহামের পরিচালক আলহাজ্জ হাফিজ সাব্বির আহমদের পরিচালনায় বৈঠকে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশী মুসলিম কমিউনিটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। এতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা আখতার হোসাইন জাহেদ।
বৈঠকে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে শিক্ষা নিয়ে ষড়যন্ত্র দীর্ঘ দিনের। বিশেষ করে ইসলামী শিক্ষা নিয়ে সময় সময় ষড়যন্ত্র করে আসছে কিছু ইসলাম বিদ্বেষীরা। সম্প্রতি ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির জন্য ইসলামী মূল্যবোধ পরিপন্থি যে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করা হয়েছে তা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ইসলামী জ্ঞানহীন করার গভীর একটি ষড়যন্ত্র। এ ষড়যন্ত্র রুখে দিতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বক্তারা বাংলাদেশে শিক্ষা নিয়ে সকল ষড়যন্ত্র ও ইসলামী আদর্শ পরিপন্থি পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের প্রতিবাদ জানান।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা এম এ কাদির আল হাসান বলেন, বাংলাদেশ সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমানের দেশ হয়েও এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত অনন্য। এদেশে সকল ধর্মের মানুষের জন্য আলাদা ধর্মীয় শিক্ষা থাকবে এটা স্বাভাবিক। তবে আমার সন্তানকে কেন দেব-দেবির শিক্ষা দেওয়া হবে? কেন আমার সন্তানকে পৌত্তোলিকতার শিক্ষা দেওয়ার আয়োজন করা হবে? এটার উদ্যেশ্য কী তা আমাদের বোধগম্যের বাহিরে নয়। জেনে রাখতে হবে, যে দেশে এখনো ফজরের আজান শুনে মানুষের ঘুম ভাঙ্গে, যে দেশে এখনো ইশার আজান শুনে মানুষ ঘুমায়, সে দেশে কোনভাবেই স্যেকুলারিজম কায়েম করতে দেওয়া হবে না।
হাফিজ সাব্বির আহমদ তাঁর বক্তব্যে বলেন, ফেরআউন খোদা দাবি করার আগে ধর্মীয় শিক্ষা বন্ধ করেছিল। আজ যেন বাংলাদেশে ফেরআউনি কায়দায় দেশ শাসনের স্বপ্ন দেখা হচ্ছে। ধর্মীয় শিক্ষা সংকোচন করা হচ্ছে। স্যেকুলার ধর্মহীন জতি গঠনের পায়তারা চলছে। দেশের মানুষ মুখ খুলে কথা বলার সাহস পাচ্ছেনা। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের সকল বাঙালীদের প্রতিবাদমূখর হতে হবে। জানিয়ে দিতে হবে, বাংলাদেশে সেকুলার ধর্মহীন জাতি গঠনের কোন ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবেনা। তিনি সরকারকে আহবান করে বলেন, যে বইগুলো শিক্ষার্থীদের হাতে দেওয়া হয়েছে তা অনতিবিলম্বে ফিরিয়ে নিন। অন্যথায় এর পরিনাম খুবই ভয়াবহ হবে।
মিডল্যান্ডস আনজুমানে আল ইসলাহর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মাওলানা মোঃ হুসাম উদ্দিন আল হুমায়দীর পবিত্র কুরআন শরীফ তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া বৈঠকে বক্তব্য রাখেন ফুলতলী ইসলামিক সেন্টার কভেন্ট্রির পরিচালক আলহাজ্জ জসিম উদ্দিন, বাংলাদেশ মাল্টিপারপাস সেন্টারের ডাইরেক্টর কামরুল ইসলাম চুনু , বার্মিংহাম জামে মাসজিদ এন্ড ইসলামিক সেন্টারের চেয়ারম্যান ব্যারিষ্টার ইসমাইল হোসেন, আনজুমানে আল ইসলাহ ইউকের কাউন্সিল মেম্বার মাওলানা রফিক আহমদ, মাষ্টার আব্দুল মুহিত, বার্মিংহাম জামে মাসজিদ এন্ড ইসলামিক সেন্টারের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা এ কে এম মুকাররম হাসান, বার্মিংহাম খেলাফত মজলিসের সভাপতি মাওলানা এনামুল হাসান সাবির ও বিওন টিভির পরিচালক বিশিষ্ট সাংবাদিক রিয়াদ আহাদ।
বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব আব্দুল মালিক পারভেজ, ফয়েজ উদ্দিন আহমদ এমবিই, বার্মিংহাম আনজুমানে আল ইসলাহর প্রেসিডেন্ট মাওলানা বদরুল হক খান, সেক্রেটারি হাফিজ সামিম আল মামুন, সিরাজাম মুনিরা জামে মসজিদ এন্ড এডুকেশন সেন্টার বার্মিংহামের ইমাম মাওলানা শামসুল ইসলাম, কারি আহমদ আলী, ফুলতলী ইসলামিক সেন্টার কভেন্ট্রির খাদিম শেখ মুর্শেদ আহমদ, হাজী সাহাব উদ্দিন ও হাফিজ আবুল হোসাইন আব্দুল হামিদ আয়না প্রমূখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন