মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ইরাকের মত দেশকে শাসন করা কঠিন সাদ্দাম ছিলেন একজন সাহসী নায়ক

| প্রকাশের সময় : ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সিএনএন : সাদ্দাম হোসেনের বড় মেয়ে রাঘাদ হোসেন বলেছেন, ইরাকের একটি দেশ শাসন করা কঠিন। মানুষ এখন তা বুঝতে পারছে। তিনি বলেন, সাদ্দাম হোসেন ছিলেন একজন নায়ক, সাহসী, জাতীয়তাবাদী, লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে প্রতীক।
২০০৩ সালে ইরাকে হামলা চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে ক্ষমতাচ্যুত করে। তার বড় মেয়ে রাঘাদ তখন জর্দানে আশ্রয় নেন। ২০০৬ সালে প্রহসনমূলক বিচারে সাদ্দাম হোসেনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়। তারপর থেকে এটাই কোনো সংবাদ মাধ্যমের সাথে রাঘাদের প্রথম সাক্ষাতকার। আম্মান থেকে টেলিফোনে সিএনএন’র সাথে এ সাক্ষাতকারে রাঘাদ বলেন, সাদ্দাম হোসেন ছিলেন একজন নায়ক, সাহসী, জাতীয়তাবাদী, লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে প্রতীক। তিনি ছিলেন একজন সংগ্রামী। তিনি জানতেন, এ সংগ্রাম সহজ নয়। তিনি বলেন, সাদ্দাম হোসেনের সময় ইরাকে স্থিতিশীলতা ছিল। তার বিশ্বাস, সাদ্দাম হোসেন প্রেসিডেন্ট থাকলে ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও এ ধরনের গ্রুপগুলো মাথাচাড়া দিতে সক্ষম হত না। তিনি বলেন, যে বছর আমার বাবাকে হত্যা করা হয় সে বছরই আইএসের আত্মপ্রকাশ ঘটে। তিনি ক্ষমতায় থাকাকালে এ ধরনের গ্রুপকে দেখা যায়নি।  
তিনি বলেন, অনেকে তার বিরুদ্ধে নিষ্ঠুরতার অভিযোগ করেন। হ্যাঁ, নিষ্ঠুরতা হয়েছে, কোনো কোনো সময় বেশি মাত্রায়ই হয়েছে। আমরা তা সমর্থন করিনি। কিন্তু ইরাক এমন একটি দেশ যা শাসন করা কঠিন। মানুষ এখন তা বুঝতে পারছে। রাঘাদ বলেন, তিনি, তার বোন ও মা সাদ্দামের কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের সাথে কখনোই জড়িত ছিলেন না।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন যে, ভাবি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার আগের প্রেসিডেন্টদের চেয়ে আলাদা হবেন। তিনি বলেন, এ মানুষটি সবে নেতৃত্বে এসেছেন। তবে যা মনে হয়, ট্রাম্পের মধ্যে উচ্চস্তরের রাজনৈতিক চেতনা রয়েছে যা আগের সব প্রেসিডেন্টের সাথে তার পার্থক্য সৃষ্টি করেছে।
রাঘাদ সিএনএনকে বলেন, ট্রাম্প অন্যদের ভুলকে তুলে ধরেছেন, বিশেষ করে ইরাকের ব্যাপারে তারা যে ভুল করেছেন। তার অর্থ ইরাকে যে ভুল করা হয়েছে এবং আমার বাবার ক্ষেত্রে যা ঘটেছে সে ব্যাপারে তিনি জানেন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণাকালে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি ইরাক যুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলেন। তবে যুদ্ধের আগে ও পরে প্রকাশ্যে তিনি ইরাকে হামলার প্রতি সমর্থন জানান। তিনি সাদ্দাম হোসেনকে মন্দ লোক বলে আখ্যায়িত করলেও সন্ত্রাসীদের দমনে তার ভূমিকার প্রশংসা করেন।
৪৮ বছর বয়স্ক রাঘাদ এখন আম্মানে বাস করেন। বর্তমান ইরাক সরকার ইরাকের বাথপার্টিকে সমর্থন করার জন্য তাকে অভিযুক্ত করেছে এবং তাকে প্রত্যর্পণ করার জন্য জর্দানের কাছে কয়েকবার অনুরোধ জানিয়েছে। তবে জর্দান সরকার তাতে সাড়া দেয়নি।  রাঘাদ বলেন, আমি কোনো রাজনীতি করি না।  কোনো দল বা গ্রুপকেও সমর্থন করি না। ইরাকের সরকার আমার বিরুদ্ধে আইএসকে সমর্থন করার অভিযোগ করেছে। তিনি বলেন, তাদের সাথে আমার কোনো সম্পর্ক বা যোগাযোগ নেই। আমাদের পরিবারের মতাদর্শের সাথে তাদের মতাদর্শের কোনো মিল নেই।   
রাঘাদ দীর্ঘ প্রবাস জীবনের অবসান ঘটিয়ে ইরাকে ফিরতে চান যদি ইরাক মধ্যপন্থা, ঘৃণা ও প্রতিহিংসামুক্ত অধ্যায়ে প্রবেশ করে। তিনি বলেন, এটা আমার দেশ, আমার পরিবারের দেশ, আমার পূর্ব-পুরুষের দেশ। এটা প্রত্যেকের ইরাক। আমি কেন দেশে ফেরার স্বপ্ন দেখব না? একদিন দেশে ফেরাই হবে আমার জন্য স্বাভাবিক।
ইরাকে অনিঃশেষ সহিংসতা চলা সত্ত্বেও দেশের ভবিষ্যত সম্পর্কে তিনি আশাবাদী। তিনি মনে করেন যা ঘটছে তা সাময়িক, এটাই ইরাকের ভবিষ্যত নয়। এ লড়াই অনিঃশেষ নয়। ইরাকের আশা আছে। 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
Habil ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১:২১ এএম says : 0
I agree with you
Total Reply(0)
Azad Miah ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১১:৫০ এএম says : 0
That's right
Total Reply(0)
Muhmmad Kawsar ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১১:৫১ এএম says : 0
Yes in deed. Now the country is in ruin.
Total Reply(0)
Múhíb Sálmáń ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১১:৫১ এএম says : 0
ইরাক শাসন করা কত যে কঠিন তা পশ্চিমা .........গুলো এখন হাড়ে হাড়ে টেড় পাচ্ছে।
Total Reply(0)
এম, এস, আনোয়ার ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৬, ৯:৫৬ এএম says : 1
তাইতো লোকে বলে, "দাঁত থাকতে দাঁতের মুল্য বোঝা যায় না।"
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন