উচ্চ রক্তচাপকে নীরব ঘাতক বলা হয়। নীরবে এটি শরীরের অনেক ক্ষতি কওে ফেলে। অনেক সময় কোন লক্ষণ ছাড়াই উচ্চ রক্তচাপ আমাদের শরীরে থাকতে পারে। হঠাৎ করেই একদিন জটিলতা শুরু হয়। তখন আর কিছইু করার থাকেনা।
অনেক অসুখে লক্ষণ দেখেই রোগ ডায়াগনসিস করা যায়। কিন্তু উচ্চ রক্তচাপ এমন রোগ নয়। অনেক সময় রোগীর কোন উপসর্গই থাকেনা। দিনের পর দিন নিজের অজান্তে বয়ে নিয়ে বেড়ান এই মারাত্মক রোগ। হঠাৎ করেই কিডনির জটিলতা, হৃদরোগ বা ষ্টোকের মত জটিল কঠিন রোগ নিয়ে হাজির হন চিকিৎসকের কাছে। তখন অনেক দেরী হয়ে যায়। উচ্চ রক্তচাপ তাই নীরব ঘাতক। নীরবেই শরীরের ক্ষতি করতে থাকে।
কারো যদি ওজন বেশী হয়, উচ্চ রক্তচাপের পারিবারিক ইতিহাস থাকে, ধূমপান ও মদপানের অভ্যাস থাকে, ডায়াবেটিস ও রক্তে চর্বির আধিক্য থাকে তার অবশ্যই নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করতে হবে। এছাড়া গর্ভাবস্থায় যতবারই চিকিৎকের কাছে যাওয়া হোক না কেন রক্তচাপ মাপতেই হবে। বাসায় বা ফার্মেসিতে রক্তচাপ না মেপে অবশ্যই রেজিস্টার্ড ডাক্তারের কাছে যেয়ে রক্তচাপ পরিমাপ করতে হবে। কোন অবহেলাই এক্ষেত্রে কাম্য নয়। উচ্চ রক্তচাপ সন্দেহ হলে ঠিক নিয়মে মেপে রক্তচাপের সঠিক মাপটি জানতে হবে, তবেই সঠিক চিকিৎসা সময়মত দেয়া সম্বব। রক্তচাপ মাপার ৩০ মিনিট আগেই ক্যাফেইন জাতীয় খাবার খাওয়া বন্ধ করতে হবে, কাপড়ের উপর দিয়ে মাপা যাবে না, ঠিক ভাবে রুগীকে বসাতে হবে, রুগী অস্থির অবস্থায় থাকা যাবে না, যন্ত্র সঠিক জায়গায় বসাতে হবে, রক্তচাপ মাপার সময় কথা বলা যাবে না।
আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই স্বাস্থ্য বিষয়ে অসচেতন। চিকিৎসকের কাছে সহজে যেতে চাননা। এটা মোটেও ঠিক নয়। মাথাব্যথা, ঘাড়ব্যথা, ঘুম না হওয়া, বুক ধড়ফর করা, পা ফুলে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি সমস্যা হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ চিকিৎসক দিলে নিয়মিত খাওয়া উচিত। একটু ভাল লাগলেই বা সঠিক মাপে চলে আসলেই দোকানদার বা বন্ধুর কথায় এটি বন্ধ করে দেয়া চলবে না। সামান্য অবহেলাই অনেক ক্ষতির কারণ হতে পারে। নিয়মিত ডাক্তারের চেকআপে থাকলে জটিলতা প্রতিরোধ করা সম্ভব।
ডা. ফজলুল কবীর পাভেল,
রাজশাহী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন