জমাদিউসসানি হিজরী সালের ৬ষ্ঠ মাস। এই মাসের ধর্মীয় বৈশিষ্ট্য ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। এছাড়া প্রথম ইসলাম গ্রহণকারী ও প্রথম খলীফা এবং ইসলামের সর্বশেষ নবী-রসূল হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর ‘অনন্তসঙ্গী’ হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.) এর ওফাত হয় এই মাসের ২২ তারিখে।
মুসলিম বিশে^ এই দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করা নিষ্প্রয়োজন। মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর সব কথা ও ঘটনা সর্বপ্রথম যিনি বিনা বাক্যে এবং বিনা দ্বিধা-সংকোচে সত্য বলে স্বীকার করেছিলেন, হুজুর (সা.) এর পবিত্র জবানে তাকে ‘সিদ্দীক’ উপাধিতে ভ‚ষিত করেছিলেন এবং খোদ তিনিই যাকে ‘আফজালুল বাশার’ বা মানব শ্রেষ্ঠ আখ্যায়িত করেছিলেন, তার পবিত্র জীবনাদর্শ আলোচনা-স্মরণ করার জন্য কোনো বিশেষ দিন-তারিখ বা সময় নির্দিষ্ট করারও প্রয়োজন পড়ে না। সবসময়ই তার আদর্শের কথা স্মরণ করা প্রত্যেক মুসলমানের নৈতিক দায়িত্ব। তথাপি বলতে হয়, হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.) এর ওফাত দিবসটি কেবল মুসলমানদের জাতীয় পর্যায়ে নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও যথাযথ মর্যাদায় পালিত হওয়ার দাবি রাখে। অথচ, দুঃখের বিষয়, এ দেশে দিবসটি প্রায় নীরবে চলে যায়, লৌকিকতা প্রদর্শন হিসেবেও দিবসটির অধিকাংশ মুসলমানই কোনো খোঁজ খবর রাখে বলে মনে হয় না।
খাতামুন-নবীয়্যীন সর্বশেষ নবী-রসূল (সা.) এই প্রথম মুসলমানের পরিচয় দিয়েছেন এবং প্রশংসা করেছেন এভাবে:
রসূলুল্লাহ (সা.) কে প্রশ্ন করা হয়, আপনার দৃষ্টিতে কে সবচেয়ে বেশি প্রিয়? তিনি বলেন, আয়েশা (রা.)। লোকেরা আরজ করল, আমাদের উদ্দেশ্য পুরুষদের মধ্যে কে? হুজুর (সা.) বললেন, তার (আয়েশার রা.) পিতা।
রসূলুল্লাহ (সা.) প্রায় বলতেন, যারা আমার প্রতি কোন প্রকারের ‘এহসান’ বা উপকার করেছে, আমি তাদের প্রতিদান দিয়েছি আবু বকর (রা.) ব্যতীত। আমার উপর তার বিরাট উপকার রয়েছে, তার প্রতিদান কেয়ামতের দিন স্বয়ং আল্লাহতা’লা দেবেন।
রসূলুল্লাহ (সা.) এর উল্লিখিত বক্তব্যের ব্যাখ্যা তার অপর একটি উক্তিতে বিদ্যমান। তিনি বলেন, আমার প্রতি কারো উপকার আবু বকর (রা.) অপেক্ষা অধিক নয়। তিনি তার জান-মাল দিয়ে আমার সাহায্য করেছেন, উপরন্তু তার কন্যাকে আমার সঙ্গে বিয়ে দিয়েছেন।
উমমুল মোমেনীন হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, একরাত আসমানে নক্ষত্ররাজি ঝকঝক করছিল, আমি নিবেদন করলাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনার উম্মতের মধ্যে কারো নেকী বা পূণ্য কি আসমানের তারকারাজির সমান হবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ আয়েশা! উমর ফারুক (রা.) এর পূণ্যগুলো আসমানের তারকারাজির সমান হবে। হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, আমার ধারণা ছিল যে, হুজুর (সা.) আমার আব্বাজানের নাম উল্লেখ করবেন। কিন্তু আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! তাহলে আমার আব্বাজানের? হুজুর বললেন, বিচলিত হওয়ার কিছু নেই আয়েশা! আবু বকর (রা.) এর কেবল হিজরত রজনীর পূণ্যগুলো উমর (রা.) এর সমগ্র জীবনের পূণ্যগুলোর অধিক হবে।
হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.) এর পক্ষে হুজুর (সা.) এর নৈকট্য লাভের যত সুযোগ হয়েছিল, তিনি হুজুর (সা.) এর প্রকাশ্য ও গোপন বিষয়াদি সম্পর্কে যত বেশি অবহিত ছিলেন এবং হুজুর (সা.) এর প্রতি তার যে গভীর আস্থা ও বিশ^াস ছিল তা আর কারো ছিল না। রসূলুল্লাহ (সা.) গভীর রাত পর্যন্ত তার কাছে বসে মুসলমানদের সমস্যাবলী এবং বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলাপ-আলোচনা করতেন এবং অধিকাংশ সময় তার পরামর্শকে অত্যন্ত গুরুত্ব প্রদান করতেন। বস্তুত: যদি কেউ এই বিষয়ের যোগ্য হতো যে, হুজুর (সা.) এর দৃষ্টিতে সে অতিপ্রিয় তা হলে হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.) এ বিষয়ে সবচেয়ে যোগ্য বলে বিবেচিত হতেন। হুজুর (সা.) এর নিকট তিনি কত উচ্চ মর্যাদার অধিকারী ছিলেন, হুজুর (সা.) এর উল্লিখিত কয়েকটি উক্তি ও মন্তব্য হতে তা সহজে অনুমান করা যায়। রসূলুল্লাহ (সা.) এর নিকট এত বড় মর্যাদার অধিকারী আর কোনো সাহাবী ছিলেন না।
হযরত আবু বকর (রা.) কীভাবে সিদ্দীক বা মহাসত্যবাদী হওয়ার গৌরব অর্জন করেছিলেন, তারও একটি চমৎকার কাহিনী আছে। বলা হয়ে থাকে যে, একবার কতিপয় কাফের কোরেশ হযরত আবু বকর (রা.) এর নিকট সমবেত হয়ে বলতে শুরু করে, এখনও কি আপনি স্বীয় বন্ধুর প্রেমে লিপ্ত থাকবেন? ‘আপনার বন্ধু এখন বলতে আরম্ভ করেছেন যে, আল্লাহতা’আলা তাকে রাতের অন্ধকারে বায়তুল মোকাদ্দেসে (জেরুজালেমে) নিয়ে গিয়েছিলেন।’ এ কথাটি ইতোপূর্বে আরো বহু লোক শ্রবণ করে মোরতাদ (ধর্মত্যাগী) হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এ কথাটি যখন হযরত আবু বকর (রা.) শ্রবণ করেন, তখন তিনি বলেন, ‘যদি হুজুর (সা.) এ কথা বলে থাকেন, তাহলে তা সত্য হওয়াতে কোনো কথা থাকতে পারে না।’ প্রশ্নকারী এ কথা শুনে বিস্মিত হয়ে যান, যে বিষয়টি তার দৃষ্টিতে বিশ^াসযোগ্য নয়, তা আবু বকর (রা.) এর জন্য সাধারণ বিষয়, সন্দেহ, সংশয় ও প্রমাণিত হয় না। প্রশ্নকারী আবার হযরত আবু বকর (রা.) এর সাথে কথা-বার্তা বলতে শুরু করেন এবং তাকে প্রশ্ন করেন, আপনার জ্ঞান-বুদ্ধি কি স্বীকার করে যে, তিনি রাতেই বায়তুল মোকাদ্দাসে গমন করেছিলেন এবং ভোর হওয়ার আগেই প্রত্যাবর্তন করেন? হযরত আবু বকর (রা.) বললেন, যদি মোহাম্মদ (সা.) এ অপেক্ষাও ধারণা বহির্ভ‚ত কথা বলেন এবং বলেন যে, ‘আমি সকাল-বিকেলে আসমান অতিক্রম করেছি তা হলেও আমি তাকে সত্যবাদী বলে বিশ^াস করবো এবং এটি আমার জন্য কোনো অভিনব বিষয় হবে না।’ এ ঘটনার পর তিনি রসূলুল্লাহ (সা.) এর দরবারে উপস্থিত হন। হুজুর (সা.) যা বলতেন, তা তিনি অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে শ্রবণ করতে থাকেন এবং বলতে থাকেন ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি তিনি আল্লাহর রসূল।’ এই ঘটনার পর রসূলুল্লাহ (সা.) তাকে সিদ্দীক উপাধিতে ভ‚ষিত করেন বলে অনেকের অভিমত। তবে ভিন্ন বর্ণনা অনুযায়ী তিনি এ উপাধি জাহেলিয়াত যুগেই প্রাপ্ত হয়েছিলেন। এর কারণ হচ্ছে এই যে, তখন আরব গোত্রগুলোর মধ্যে বিরাজমান ঝগড়া-বিবাদ মীমাংসা করার দায়িত্ব অত্যন্ত সততার সাথে পালন করতেন বলে সকলের নিকট তিনি সিদ্দীক নামে খ্যাতি লাভ করেছিলেন। আরবদের মধ্যে খুন-হত্যা ছিল সাধারণ ব্যাপার। এসব ঘটনায় হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.)কে সালিশ মানা হতো এবং তার ফায়সালা সকলে এক বাক্যে মেনে নিত। অপর কোনো ব্যক্তি এই কাজ সমাধা করলে কোরেশদের অবাধ্য গোত্রগুলো পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে সেই ফায়সালা প্রত্যাখান করতো। কিন্তু হযরত আবু বকর (রা.) এর ক্ষেত্রে এরূপ ঘটনা কখনও ঘটেনি।
প্রথম খলীফা আমীরুল মোমেনীন হযরত আবু বকর (রা.) এর দুটি উপাধি সর্বাধিক পরিচিত ‘আবু বকর’ এবং ‘সিদ্দীক’ এ দুটি উপাধি জাহেলিয়াত ও ইসলাম উভয় যুগেই সর্বাধিক পরিচিতি লাভ করে। তার অপর একটি উপাধি ছিল ‘আতীক’ অতি সুন্দর খুবসুরতকে আতীকও বলা হয়। হযরত আবু বকর (রা.) ছিলেন অতি সুদর্শন-সুন্দর। আবার এ কথাও বলা হয় যে, শব্দটির মূল হচ্ছে ‘ইতক’ যার মানে হচ্ছে আজাদ করা। এদিক থেকে আতীক মানে আজাদ, মুক্ত। তার পিতা আবু কোহাফা (রা.) কর্তৃক এই নামকরণের কারণ হিসাবে বলা হয়ে থাকে যে, তাদের কোনো সন্তান জীবিত থাকত না। আবু বকর (রা.) যখন জন্মগ্রহণ করেন, তখন তার পিতা তাকে কোলে করে কেবলামুখী হয়ে দোয়া করেছিলেন, যার মর্ম এই ‘হে আল্লাহ! এই সন্তান তোমার দোজখ হতে আজাদ বা মুক্ত, তুমি তা আমাকে দান কর।’
তাছাড়া কোনো কোনো বর্ণনা হতে জানা যায় যে, জাহেলিয়াত যুগে হযরত আবু বকর (রা.) এর নাম ছিল আবদুল কা’ব। কিন্তু ইসলাম যুগে এই নাম পরিবর্তন করে আব্দুল্লাহ রাখা হয়। হুজুর (সা.) তার আতীক নামটি একারণেই অক্ষুণœ রাখেন যে, হুজুর তাকে আগুন হতে মুক্ত বলে সুসংবাদ জানিয়ে ছিলেন। অর্থাৎ ‘আশারায়ে মোবাশশারা’ বা জীবদ্দশায় যে দশজন বেহেশতের সুসংবাদ প্রাপ্ত, হযরত আবু বকর (রা.) তাদের মধ্যে প্রথম।
হযরত আবু বকর সিদ্দীকি (রা.) আমুল ফীল বা হস্তী সালের দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় বর্ষে জন্মগ্রহণ করেন। এই হিসাবে তিনি বয়সে রসূলুল্লাহ (সা.) এর প্রায় দুই বছরের ছোট ছিলেন। তার পিতার নাম ছিল উসমান। কিন্তু তার কুনিয়াত (উপনাম) আবু কোহাফা অধিক প্রসিদ্ধ ছিল। তার এবং হুজুর (সা.) এর বংশ ঊর্ধ্বতন ৬ষ্ঠ বংশে মোররা ইবনে কাবে মিলে যায়। তার পিতা-মাতা বনু তামীম বংশের সন্তান ছিলেন। এই বংশের লোকেরা তাদের উত্তম চরিত্র ও তাহজীব-তমুদ্দনে প্রসিদ্ধ ছিলেন এবং রমণীরাও তাদের আদর্শ নারীত্ব ও নাজকতায় দৃষ্টান্ত হিসেবে গণ্য হতেন। মোট কথা হযরত আবু বকর (রা.) এর বংশ বনু তামীম গোত্র ও পরিবার সামাজিক গুণাবলীর কারণে আরব পরিবারগুলোর মধ্যে অত্যন্ত উচ্চমর্যাদার অধিকারী ছিল। আবু কোহাফা তার জীবদ্দশায় তার পুত্র হযরত আবু বকর (রা.) মক্কায় অতি উচ্চ আসনে দেখতে পান, যার যোগ্যও ছিলেন। উল্লেখ্য, আবু কোহাফা উসমান ইবনে আমের মক্কা বিজয়ের দিন ইসলাম গ্রহণ করেন এবং হযরত আবু বকর (রা.) এর ইন্তেকালের পর হিজরী ১৪/৬৩৫ সালে ৯৭ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।
হযরত আবু বকর (রা.) এর জীবনকে দুইভাগে ভাগ করা হয়, ইসলামের পূর্বে ও পরের যুগ। মুসলমান হওয়ার পূর্বে তিনি যেমন আরবের সম্মানিত সন্তান ও নানা গুণের অধিকারী ছিলেন, তেমনি ইসলাম গ্রহণের পরও তিনি বহুক্ষেত্রে উচ্চ সম্মান ও শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী হন। তিনি জাহেলী যুগের আরবে প্রচলিত পাপাচারে কখনও লিপ্ত হননি। ইসলামের আবির্ভাবের এক বছর পূর্বে রসূলুল্লাহ (সা.) এর খেদমতে তার আসা-যাওয়া হতে থাকে এবং ইসলাম গ্রহণের পর তিনি হুজুর (সা.) এর নির্দেশে তবলীগ প্রচারের দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। উম্মুল মোমেনীন হযরত খাদিজাতুল কোবরা (রা.) হুজুর (সা.)সহ যে মহল্লায় অবস্থান করতেন হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.)ও একই মহল্লায় বাস করতেন। ফলে দুইজনের মধ্যে গভীর সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছিল। পুরুষদের মধ্যে সর্বপ্রথম হযরত আবু বকর (রা.) ইসলাম গ্রহণ করেন এবং তারই আহŸানে হযরত উসমান (রা.), আবদুর রহমান ইবনে আওফ (রা.), সাদ ইবনে আবি ওক্কাস (রা.), যোবায়ের ইবনুল আওয়াম (রা.) এবং তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ (রা.) প্রমুখ ইসলাম গ্রহণ করেন। রসূলুল্লাহ (সা.) এর সঙ্গে তিনি মদীনায় হিজরত করেন এবং হুজুর (সা.) এর সঙ্গে সকল যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। বদর, ওহোদ ও হোনায়ন যুদ্ধে তার বীরত্বপূর্ণ ভ‚মিকার দৃষ্টান্ত বিরল। তাবুক যুদ্ধের সময় হযরত আবু বকর (রা.) তার ঘরের সমস্ত সম্পদ হুজুর (সা.) এর খেদমতে উপস্থিত করেন। হুজুর (সা.) জিজ্ঞাসা করেন, পরিবার-পরিজনের জন্য তুমি কি রেখে এসেছো? জবাবে বললেন, আল্লাহ ও তার রসূলকে রেখে এসেছি।
ইসলামের জন্য হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.) তার মাল-দৌলত কতটা অকাতরে দান করতেন, তার আরেকটি ঘটনা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। হযরত ইবনে উমর (রা.) বর্ণনা করেন, উমমুল মোমেনীন হযরত আয়েশা (রা.) এর মহান পিতা যখন ইসলাম গ্রহণ করেন, তখন তার কাছে বাণিজ্যিক আসবাবপত্র ছাড়া চল্লিশ হাজার দীনার মওজুদ ছিল। কিন্তু মক্কা হতে মদীনায় হিজরত করার পর তিনি ইসলামের প্রচার-প্রসার, দরিদ্র মুসলমানদের সাহায্য এবং অত্যাচারী প্রভাবশালী কোরেশদের গোলামী হতে মুসলমানদের মুক্তির জন্য সে সময় পর্যন্ত ৩৫ হাজার দীনার ব্যয় করেছিলেন। তাছাড়া মসজিদে নববীর জমীনও তিনি নিজের অর্থ দিয়ে খরীদ করে ওয়াকফ করে দেন। এই পবিত্র ভ‚মির একটি অংশ রওজায়ে জান্নাত এবং রওজা শরীফের মধ্যে এই অংশ অবস্থিত। এই পবিত্র স্থানের উচ্চ মর্যাদার কথা স্বয়ং হুজুর (সা.) ে
ঘাষণা করেছেন।
হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.) এর সৌভাগ্য হয়েছিল যে, হুজুর (সা.) তাকে হিজরী নবম সালে নিজের প্রতিনিধি রূপে আমীরুল হজ¦ মনোনীত করে মক্কায় প্রেরণ করেন এবং ইন্তেকালের পূর্বে তিনি ১৭ ওয়াক্ত নামাজের ইমামতি করেন। তার শ্রেষ্ঠত্বের কথা পবিত্র কোরআনের ১৭টি স্থানে ইশারা ইঙ্গিতে বলা হয়েছে।
রসূলুল্লাহ (সা.) এর ওফাতের পর মুসলমানগণ আমীরুল মোমেনীন ও খলীফা হিসাবে হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.)কে মনোনীত করেন। তার খেলাফত কাল ছিল দুই বছর তিন মাস ১১ দিন। খেলাফতের এই গুরুত্বপূর্ণ পদ গ্রহণের পর তিনি সর্বপ্রথম যে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন, সেগুলো হচ্ছে প্রথমত: জাকাত অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে জেহাদ, দ্বিতীয়ত: নবুওয়াতের মিথ্যা দাবিদারদের মূলোৎপাটন, তৃতীয়ত: মুর্তাদ দমন। তাছাড়া কোরআন সংকলন ও হুজুর (সা.) কর্তৃক সর্বশেষ ঘোষিত ওসামা অভিযান পরিচালনা করা, যা হুজুর (সা.) এর ওফাতের কারণে স্থগিত হয়ে গিয়েছিল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন