বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

চিঠিপত্র

| প্রকাশের সময় : ১৯ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

খেজুরের রস কাঁচা পান বিপজ্জনক

হিম হিম বইছে হাওয়া শীতের কি কাপন, বছর ঘুরে আবার এসেছে শীতের আগমন। হেমন্তের মিষ্টি বিকালে কুয়াশার চাদর জড়িয়ে বাংলার জমিনে নেমেছে হাড়কাঁপানো শীত। শীত হচ্ছে একটি উৎসব আমেজের ঋতু। শীত মানেই বিভিন্ন পিঠাপুলির উৎসব আর খেজুর রস সংগ্রহের একটা ব্যস্ততম সময়। শীতকালে গাছিরা খেজুর রস সংগ্রহ করার জন্য আগাম প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। এ প্রস্তুতি হিসাবে তারা খেজুর গাছের মাথা ভালো করে পরিষ্কার করে সাদা অংশ কেটে রোদে শুকিয়ে রাখেন। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পর গাছিরা গাছের মাথার শুকানো সাদা অংশ কেটে নলি লাগিয়ে ছোট বড় বাসন বেঁধে রস সংগ্রহ করেন। অনেক গাছি এই সংগ্রহকৃত রস হাট-বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আবার অনেকে জাল দিয়ে লালি বা গুর তৈরি করেন। খেজুর রস থেকে নানা ধরনের গুড় তৈরি করা যায়। যেমন ঝোলা গুড়, ঢিমা গুড়, পাটালি গুড় ইত্যাদি। এছাড়া খেজুর রস দিয়ে ফিরনী, পায়েস এবং খেজুর রস থেকে উৎপন্ন গুড় দিয়ে ভাপা পিঠা এবং গাঢ় রস দিয়ে তৈরি করা হয় মুড়ি, চিড়া, খই ও চিতই পিঠাসহ হরেক রকমের পিঠাপুলি। খেজুর রস পান করলে শরীরের দুর্বলতা দূর হয়। কারণ, এতে উচ্চ প্রাকৃতিক চিনি এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে। অনেকে কাঁচা খেজুর রস পান করে থাকে। কারণ কাঁচা অবস্থায় রসের আসল স্বাদ পাওয়া যায়। কিন্তু এই কাঁচা রস সরাসরি পান করা মোটেও নিরাপদ নয়। এখানে চরম পর্যায়ের স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকে, এমনকি অনেক সময় মৃত্যুর কারণও হতে পারে। হাঁড়িতে জমা হওয়া এই কাঁচা রসের প্রতি মানুষের যেমন আকর্ষণ থাকে, তেমনি অন্যান্য পশু-পাখিও আকৃষ্ট হয়। বিষাক্ত সাপ, বাদুড় এবং অন্যান্য কীটপতঙ্গ কাঁচা রসের মিষ্টি গন্ধে আকৃষ্ট হয়ে হাঁড়ি থেকে রস খায়। এভাবে ধীরে ধীরে পুরো পাতিলের রস বিষাক্ত হয়ে যায়, যা অনেক সময় মৃত্যুর কারণও হতে পারে। তাছাড়া, বাদুড় নিপাহ নামক ভাইরাস বহন করে থাকে। তাই বাদুর যখন রস পান করে, তার থেকে নির্গত হওয়া নিপাহ ভাইরাসটি হাঁড়ির রসে ছড়িয়ে পড়ে, যা পরবর্তীকালে মানুষ পান করলে তার মৃত্যুর কারণ হতে পারে। তাই কাঁচা খেজুর রস পান করা থেকে বিরত থাকুন। জীবন বাঁচাতে রস সেদ্ধ করে পান করুন। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো ৭০ থেকে ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপে উত্তপ্ত করতে হবে। তাহলেই ভাইরাস মরে যাবে।

মো. শাহাদাত হোসেন সাগর
শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন