জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে প্রথমবারের মত গৃহীত ‘মিয়ানমারের পরিস্থিতি’ বিষয়ক একটি রেজুলেশনের আলোকে মিয়ানমারের বিদ্যমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, জরুরি অবস্থা, বন্দি মুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে সমস্যার সমাধানে আমাদের নিরলস ক‚টনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। অপরদিকে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে কোন চাপ বা দিক নির্দেশনা নেই বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত। পাশাপাশি জাতিসংঘের পক্ষ থেকে এ ধরনের দিক নির্দেশনা দেওয়ার সুযোগও নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন। এছাড়াও শেখ হাসিনা সরকারের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণ কর্মসূচির ভিত্তিতে চলতি বছরে জাতিসংঘে কাজ অব্যাহত থাকবে। নতুন বছর উপলক্ষে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে প্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রদূত মুহিত।
মতবিনিময়কালে রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, ইতোমধ্যে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ও নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে দুটি প্রস্তাবনা পাস হয়েছে। এ দুটি প্রস্তাবনাকে সামনে রেখে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ ত্বরান্বিত হতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, মিয়ানমারের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার যৌক্তিকতা নিয়ে মিয়ানমারের চ্যালেঞ্জ করা রিট আন্তর্জাতিক আদালত খারিজ করে দিয়েছে। ফলে এখন দায়ের করা মামলার কার্যক্রম চলতে আর বাধা নেই।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলার মৃত্যুদÐপ্রাপ্ত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, খুনিরা প্রতিটি দেশে একটি আইনের অধীনে আশ্রয়ে আছে। তাই তাদের ফেরত নেওয়ার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দেশের আইনি কাঠামোর ওপর নির্ভর করছে। তবে খুনিদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে সংশ্লিস্ট দেশের সাথে আমরা সব রকম চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছি।
লিখিত বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত ২০২২ সালে মিশন কর্তৃক সম্পাদিত বিভিন্ন কাজের ফিরিস্তি তুলে ধরে বলেন, ২০২২ সালটি আমাদের জন্য অত্যন্ত কর্মমূখর একটি বছর ছিল। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন, করোনা মহামারিসহ অন্যান্য বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মুখে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ, নিরাপত্তা পরিষদ ও অন্যান্য সংস্থাসমূহ বিশ্বের সকল মানুষের দুঃখ-দুর্দশা কমিয়ে, ভবিষ্যতে সকলের জন্য টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতের লক্ষ্যে কাজ করে গেছে। এসকল বৈশ্বিক ইস্যুতে এবং জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় অবস্থান নেয়ার পাশাপাশি রোহিঙ্গা ইস্যু, টেকসই উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, নারীর ক্ষমতায়ন, জাতিসংঘে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমসহ আমাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে আমাদের মিশন সরব ছিল।
এসময় মিয়ানমারে সদ্য নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি ডা. মনোয়ার হোসেন ও মিশনের অন্যান্য কর্তকর্তা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্ট মাসে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশনে স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন