শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

রুটিন কর্মসূচি ও দ্বিধা-বিভক্তিতে খুলনা বিএনপি’র বছর পার

| প্রকাশের সময় : ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এ.টি.এম. রফিক ও আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে : কেন্দ্র থেকে রাজপথ সরগরমের আন্দোলন না থাকায় রুটিন কর্মসূচি পালন ও দ্বিধা-বিভক্তির মধ্য দিয়ে খুলনা বিএনপি আরো একটি বছর পার করল। এ বছরেই খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি’র মধ্যে দৃশ্যমান দূরত্বেরও সৃষ্টি হয়েছে। বড় কোনো অর্জন না হলেও নতুন নতুন  বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে দলের মধ্যে। খুলনা বিএনপি নেতাকর্মীদের বছরের একটা বড় সময় কেটেছে  আদালতের বারান্দায়। ২০১৬ সাল, বছরটি কেমন কাটল; দলটির নেতাকর্মীদের সাথে আলাপচারিতায় উপরোক্ত মূল্যায়ন উঠে এসেছে। নেতাকর্মীদের অভিযোগ, বিএনপি’র দুর্গখ্যাত খুলনায় ঐক্যবদ্ধতার চিরচেনা রূপ পাল্টে এভাবে শুরু হয়েছে নতুন মেরুকরণ।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী খুলনায় পৃথকভাবে পালন করেছে মহানগর ও জেলা বিএনপি। এমনকি একে অন্যের কর্মসূচিতে উপস্থিতও ছিলেন না শীর্ষ নেতারা। এর মধ্যে, নগর বিএনপি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা শাহাদাৎ বার্ষিকীর কর্মসূচি পৃথক ব্যানারে পালন করে। আবার, নগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্র নেতা তরিকুল ইসলাম জহিরের নেতৃত্বে নব্বই’র ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতাদের ব্যানারে খুলনা প্রেসক্লাবে শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া-মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ, সমাবেশ ও রুটিন কর্মসূচিগুলো নগরীর দলীয় কার্যালয়ের সামনে সকাল-বিকাল খুলনা জেলা ও মহানগর বিএনপি পৃথক পৃথকভাবে পালন করেছে। এমনকি গত ১১ জুন জেলা বিএনপি’র উদ্যোগে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মানে খুলনা ক্লাবে অনুষ্ঠিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলেও মহানগর বিএনপির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদককে দেখা যায়নি। আবার নগর বিএনপির ইফতার মাহফিলেও জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা ছিলেন না। পূর্বে খুলনায় নগর ও জেলা বিএনপির প্রায় সকল কর্মসূচি ঐক্যবদ্ধভাবেই অনুষ্ঠিত হতো। পৃথকভাবে হলেও একে অন্যের কর্মসূচিতে শীর্ষ নেতাদের থাকতো সরব উপস্থিতি।
মহানগর : গত ৯ এপ্রিল মহানগর বিএনপি’র সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মনোনীত করা হয়। ৬ষ্ঠ কাউন্সিলে ‘এক নেতার এক পদ’ বাস্তবায়নের ঘোষণায় নগর বিএনপিতে নতুন মেরুকরণ শুরু হয়। যদিও কেন্দ্রীয় পদ থেকে নজরুল ইসলাম মঞ্জু অব্যাহতি নিলে সেটার অবসান হয়। তবে তাতে গৃহদাহ থামেনি। শুরু হয় ওয়ার্ডের পর থানা বিএনপির সম্মেলনের প্রস্তুতি। গত ১২ নভেম্বর নগর বিএনপির নির্বাহী কমিটির সভায় কোষাধ্যক্ষ ও খালিশপুর থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান মিঠুসহ ৬ জনকে অব্যাহতি দেয়া হয়। একই সাথে খালিশপুর থানা কমিটি বাতিল করে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী সেকেন্দার আলী ডালিমকে আহ্বায়ক ও নগর বিএনপির সহ-সভাপতি স ম আব্দুর রহমানকে সদস্য সচিব করে ৩১ সদস্যেও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়। ওই সভায়, গত ৫ নভেম্বর খালিশপুর থানা বিএনপির নির্বাহী কমিটির সভায় হামলার ঘটনা তদন্তে মহানগর বিএনপির উপদেষ্টা জাফরউল্লাহ খান সাচ্চু, সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলাম ও যুগ্ম-সম্পাদক মাহবুব কায়সারের সমন্বয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এর পরে, শাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা ও আরিফুর রহমান মিঠু তাদের অনুসারীদের নিয়ে অব্যাহতির ও সম্মেলনের মাধ্যমে পকেট কমিটির প্রস্তুতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন করেন।
জেলা বিএনপি : খুলনা জেলা বিএনপি’র নেতাকর্মীরা নেতা বলতে সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. শফিকুল আলম মনাকেই জানেন। প্রকাশ্যে কোনো গ্রুপিং না থাকলেও সিনিয়র সহ-সভাপতি এ্যাড. গাজী আব্দুল বারীর সাথে শফিকুল আলম মনার মতনৈক্য রয়েছে বলে অভিযোগ নেতাকর্মীদের। সর্বশেষ সেটার দৃশ্যমান হয়-গত ১৩ অক্টোবর রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রামে নিষ্ক্রিয় ও জুনিয়রদের দিয়ে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা হলে। বিএনপি’র একজন কেন্দ্রীয় নেতা জেলা বিএনপিতে হস্তক্ষেপ করছেন বলে নেতাকর্মীদের মধ্যে গুঞ্জন রয়েছে। গত অক্টোবরের শেষদিকে জেলা বিএনপি’র পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অধ্যাপক মাজিদুল ইসলাম। এরমধ্যে কাউকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি’র দায়িত্বও দেয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৪ শে নভেম্বর জেলা বিএনপি’র সম্মেলনে অধ্যাপক মাজিদুল ইসলামকে সভাপতি ও এ্যাড. শফিকুল আলম মনাকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছিল। সর্বশেষ, গত ৪ মার্চ জেলা বিএনপির সম্মেলনের নির্ধারিত তারিখ থাকলেও; হয়নি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তৃণমূল বিএনপি’র পুনর্গঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভাইস-চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজাহান কোন মন্তব্য করতে চাননি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন