বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

নওগাঁর পতœীতলায় মাদ্রাসায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

বেতন আছে চাকরি নাই---চাকরি আছে বেতন নাই

নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০২৩, ৬:০৯ পিএম

নওগাঁর পতœীতলায় কাদিয়াল সিদ্দিকিয়া দাখিল মাদ্রাসায় “বেতন আছে চাকরি নাই চাকরি আছে বেতন নাই”এমন ঘটনার অভিযোগ উঠেছে। তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুল মোতালেবের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। উক্ত মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুল মোতালেব ভূঁয়া বি.এড সাটিফিকেট দিয়ে উচ্চতর স্কেলের জন্য নওগাঁ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে দাখিল করলে তার দাখিলকৃত বি.এড পাসের সনদটি ভূঁয়া বলে প্রমাণিত হলে জেলা শিক্ষা অফিসার তার এম.পিও বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করলে আব্দুল মোতালেব তার অপরাধ স্বীকার করে লিখিত ভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করে দায় মুক্ত হয়। তিনি বিভিন্ন প্রার্থীর নিকট থেকে চাকরি দেয়ার নামে টাকা নেয় পরে চাকরি না দিতে পারায় পাওনাদাররা তার নিকট চাপ দিলে তিনি তার ব্যাংকের ফাঁকা চেক প্রদান করে কালক্ষেপন করছে বলে জানা গেছে। এসব অপকর্মের জন্য গত ১ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে ওই মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষ তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন। অপর দিকে উক্ত শিক্ষক আব্দুল মোতালেবের স্ত্রী মোছাঃ মৌসুমী খাতুনকে গত ১৮ মার্চ ২০১৫ ইং তারিখে জুনিয়র শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রদান করেন ওই প্রতিষ্ঠান কিন্তু ঐ সময়ে উক্ত পদ শূন্য ছিল না। প্রতিষ্ঠানের ফজলুল হক জুনিয়র শিক্ষক গত ০৪ সেপ্টম্বর ২০১৫ ইং তারিখে অবসরে গেলে পদটি শূন্য হয়। উল্লেখ্য ১৯৯৫ সালের পরিপত্র অনুযায়ী মোঃ আব্দুল মজিদ দাখিল স্তরে জুনিয়র শিক্ষক থাকায় উক্ত পদে পদায়ন হয়। দাখিল স্তরে আব্দুল মজিদের স্থলে সিনিয়র শিক্ষক মোঃ দেলোয়ার হোসেন বি.এস.সি উচ্চ পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। পরবর্তীতে ২২ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে এক পরিপত্রের আদেশ বলে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের কমিটির নিয়োগ বাতিল করা হয়। সেই হিসেবে আব্দুল মজিদ ২৩ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে অবসর গ্রহণ করেন। উক্ত স্থানে বিধি বর্হিভ’ত ভাবে মৌসুমী খাতুন গত ১৮ মার্চ ২০১৫ তারিখে সহকারি শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়। উল্লেখ্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, মাদ্রাসার সুপারের স্বাক্ষর জাল করে মৌসুমী খাতুনকে নিয়োগ প্রদান করা হয়। যাহা সম্পূর্ণ অবৈধ নিয়োগ বলে প্রামানিত হয়। এ যাবৎ তিনি অবৈধ নিয়োগ নিয়ে প্রায় ১০,০০,০০০/- (দশ লক্ষ) টাকা বেতন ভাতা উত্তোলন করেছেন যা ফেরৎ যোগ্য তবে এ টাকা আদায়ে দায়ভার কে নিবেন এ নিয়ে এলাকায় চলছে নানা গুনঞ্জন। ইতোপূর্বে নওগাঁ জেলা প্রশাসক বরাবরে মতিন ও আইয়ুব নামে দুই জন অভিযোগ করে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত নিয়ে আসে কিন্তু দুর্নীতি ঢাকতে তদন্তের আয়োজন করে নিজেরাই ফেঁসে যাওয়াই বর্তমানে আতঙ্কে আছে তারা। এ বিষয়ে মাদ্রাসার সুপার মোঃ নওশাদ আলমের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, সরকারি চাকরি বিধি মোতাবেক মৌসুমী খাতুনের চাকরি অবৈধ। তার উত্তোলিত বেতন সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে বলে তিনি জানান। তিনি আরো জানান গত ২০১৬ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক অডিট কালে মৌসুমীর নিয়োগ অবৈধ বলে অডিট আপত্তি দেন। তবুও মৌসুমী খাতুন বহাল তবিয়তে চাকরি করছেন। মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুল মোতালেবের সাথে কথা বললে তিনি তার সাময়িক বরখাস্তের সত্যতা স্বীকার করেন তবে তার স্ত্রী শিক্ষিকা মৌসুমী খাতুন এ প্রতিবেদকের সাথে কথা বলতে এড়িয়ে যান। মাদ্রাসার বর্তমান সভাপতি ও স্থানীয় ইউ.পি চেয়ারম্যান মোঃ শহিদুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন উভয়পক্ষের মধ্যে ৬/৭টি মামলা চলমান আছে। তবে মৌসুমি খাতুনের চাকরি সাবেক সভাপতি রকিবের আমলে হয়েছে। এ বিষয়ে পতœীতলা শিক্ষা অফিসার জিল্লুর রহমানের সঙ্গে কথা বলনে তিনি জানান উক্ত মাদ্রাসার সাবেক সভাপতি রকিব ও তার লোকজন আদালতে কয়েকটি মামলা করে অবশেষে পতœীতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবরে সস্প্রতি ১টি অভিযোগ জমা দিয়েছেন। অভিযোগটি তদন্ত করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমার নিটক প্রেরণ করেছেন। অভিযোগটি তদন্ত প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। এ বিষয়ে পতœীতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রুমানা আফরোজ এর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান উক্ত বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি, অভিযোগটি তদন্তের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসারে বরাবরে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নিদের্শ দেয়া হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন