জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাহসীকতার সাথে পরিবার ও এলাকার মানুষ ধাওয়া করে ৪ জন ডাকাতকে আটক করে থানা পুলিশে সোপর্দ করায় ভূয়সী প্রসংশা করেছেন সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার এহসান শাহ। এমন বীরত্বের সাথে সাহসীকতার কাজ করায় সকলের প্রতি ধন্যবাদসহ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন তিনি। এসপি বলেন, পুলিশ সব সময় মানুষের নিরাপত্তার জন্য নিয়জিত রয়েছে। বিশেষ করে রাতের বেলায় প্রতিটি ইউনিয়নে পুলিশ টহলে থাকে। মানুষের যান-মালের নিরাপত্তায় পুলিশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। তিনি আরও বলেন, দিনের বেলায় বিভিন্ন ঝামেলায় থাকলেও রাতের বেলায় কারো ফোন ফেলে তাৎক্ষনিক যোগাযোগ রক্ষা করার চেষ্টা করেন। আইনী সহায়তার জন্য তার দরজা সব সময় খোলা রয়েছে। রোববার বিকেলে ছাতক উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের জালালপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এলাকাবাসীর সাথে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথাগুলো বলেন। ডাকাত ধরে দেয়ায় জালালপুর গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী মাসুক মিয়া, পর্তুগাল প্রবাসী শাহিন মিয়া, আবদুল হামিদ, স্কুল শিক্ষক সাইদুল আলম ডালিম, স্কুল ছাত্র মাজহারুল ইসলামসহ পরিবারের সদস্য ও এলাকার লোকজনকে ফুল দিয়ে তিনি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
এসময় বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, সহকারী পুলিশ সুপার (ছাতক-দোয়ারার সার্কেল) রণজয় চন্দ্র মল্লিক, ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মুহাম্মদ মাইনুল জাকির, ওসি তদন্ত আরিফুল আলম, গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুন্দর আলী, উত্তর খুরমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদ, ছাতক থানার এসআই আসাদুজ্জামান রাসেল ও মাসুদ রানা, এলাকার মুরব্বি আবদুর রহিম, আবদুল হামিদ, আবদুল কাইয়ুম, ফখর উদ্দিন, আবদুল কাহার, ওয়াছিব আলী, আবদুল মানিক, ছালিম উল্লাহ, আমিন উদ্দিন, শুকুর আলী, আবুল খয়ের, সাহাব উদ্দিন, সাবেক মেম্বার সায়াদ আহমদ, মাস্টার সাজ্জাদ আহমদ, কাচা মিয়া, হেলাল আহমদ মেম্বার, আছকির আলী মেম্বার, খালেদ আহমদ খলিল মেম্বার প্রমুখ। এর আগে পুলিশ সুপার প্রবাসীর বাড়িতে তাদের সকল সদস্যদের সাথে কথা বলে শান্তনা দিয়ে ডাকাতির সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের আশ্বাস দেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর রাতে ছাতক উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামে প্রবাসী মাসুক মিয়া, শাহিন মিয়া ও কালা মিয়ার বাড়িতে এক দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সংঘবদ্ধ ডাকাতরা স্বর্ণালঙ্কার, নগদ অর্থ, মোবাইলসহ মূল্যবান মালামাল লুট করে। এসময় মায়ের মোবাইল নিয়ে গোপনে তাদের এক আত্মিয়ের কাছে ফোন করে ডাকাত প্রবেশ করে লুটপাটের বিষয়টি জানায় স্কুল ছাত্র মাজহারুল। তার ফোনের পর গ্রাম ও এলাকাবাসী মসজিদের মাইকে তাৎক্ষণিক ঘোষণা দিয়ে এগিয়ে আসে ওই প্রবাসীর বাড়িতে। ধাওয়া করে জনতার হাতে দুইজন ও পরিবারের লোকজনের হাতে অস্ত্রসহ আরও দুই ডাকাত আটক হয়। ডাকাতদের প্রহারে পরিবারের ৫সদস্য আহত হন। পরদিন আটককৃত জুয়েল ওরফে লাল মিয়া, সাইফুল ওরফে সাইকুল, আনফর ওরফে আনহার, সাইফুল ওরফে শফিকুল ইসলাম নামের ওই চারজন ডাকাতকে ৩ রাউন্ডগুলীসহ একটি পাইপগান, একটি চাইনিজ কুড়াল ও ৬টি মোবাইলসহ থানা পুলিশে তাদেরকে সোপর্দ করা হয়। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে ওইদিন থানায় একটি মামলা (নং-১৭) দায়ের করেন প্রবাসীদের সহোদর স্কুল শিক্ষক সাইদুল আলম ডালিম। ডাকাতদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী একদিন পরে আবুল হোসেন নামের আরেক ডাকাতকে পুলিশ গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত ডাকাতরা সুনামগঞ্জ জেল হাজতে রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন