আইন-শৃংলাবাহিনীর নিরবতা আর স্থানীয় এক ছাত্রনেতার ছত্রছায়ায় কেবিএস, ০০৭, র্যাকলেস, বার্ণিং, বিএসবি, ডিএলজি, ব্ল্যাক লিষ্ট, ভ্যামপায়ারসহ অন্তত ২০টি কিশোর গ্যাং দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শহরের আনাচে-কানাচে। মাদক, ছিনতাই, চুরি, হামলা, অপহরণসহ নানা বিদ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে মাত্র ১৩ বছর থেকে ১৯ বছর পর্যন্ত স্কুল গামী এসব কিশোরকে। গ্যাং রূপ দিতে কুষ্টিয়া শহরের ‘ নামের অধ্যাক্ষর’ স’ এক ছাত্রনেতা তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন বলে নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, সদর উপজেলার খাজানগরসহ কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকায় আবারও বেপরোয়া হয়ে পড়েছে কিশোর গ্যাং। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল ইউনিয়নের খাজানগরে কিশোর গ্যাং এর অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে কিশোর গ্যাং এর অত্যাচার। ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণ তাদের কাছে জিম্মি। গত ১ জানুয়ারি এই কিশোর গ্যাং এর খপ্পরে পড়ে চাতাল শ্রমিকের সরদার আবু বক্কর। তিনি দীর্ঘদিন সুনামের সাথে বিভিন্ন রাইস মিলে শ্রমিক সরবরাহ দিয়ে থাকেন। ঘটনার দিন দাদা রাইস মিলের শ্রমিকের ইজিবাইক আটকে রাখে কিশোর গ্যাং। এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আবু বক্কার পৌছালে তার যানবাহন কেড়ে নেয়। সেই সাথে তার কাছে থাকা নগদ ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা কেড়ে নিয়ে তাকে বেধড়ক মারপিট করে। এতে তার ২ হাত ও বুকের খাচা ভেঙ্গে যায়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরে বাংলাদেশ ক্রিটিক্যাল কেয়ার এন্ড জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং সেখানেই এখনও চিকিৎসাধীন। ২ জানুয়ারি কুষ্টিয়া মডেল থানায় ১৯ জনকে আসামি করে এজাহার জমা দেয়া হলেও আজ অবধি ভুক্তভোগী কোন আইনি সহায়তা পায়নি বলে অভিযোগ করেছেন। হামলাকারীরা ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আবু বক্কর জানান, এই কিশোর গ্যাং পরিচালনা করে থাকেন লাল মিয়ার ছেলে আজাদ। এলাকায় আজাদ কসাই নামে পরিচিত। তার ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং। মামলায় অন্য অভিযুক্তরা হলেন-বারেকের ছেলে জুয়েল, মোহরের ছেলে আসলাম ও তার ছোট ভাই জব্বার, শহিদুলের ছেলে শান্ত, মনু শেখের ছেলে শাহীন, সুবহানের ছেলে মিন্টু, শামসুলের ছেলে সানোয়ার, সামাদের ছেলে ফারুক, লাল মিয়ার ছেলে রিপন। আহত আবু বক্কর বলেন-আমাকে যারা হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, কুষ্টিয়ার খাজানগরে উন্মুক্ত স্থানে রাইচ মিলের জ্বলন্ত ছাইতে পুড়ে যায় শিশু আবদুল্লাহ। খাজানগরের কাতলমারির উত্তর মাঠে সুজনের জমিতে উন্মুক্ত স্থানে যেখানে শিশুরা খেলা করে উক্ত স্থানেই ছাই ফেলার ইজারা নেয় অটোরাইস মিলের ছাই অপসারণ সর্দার বাক্কার । সেই ছাইয়ে পড়ে যায় একই এলাক্র জুয়েল ড্রাইভার এর তিন বছরের শিশু পুত্র আবদুল্লাহ। জ্বলন্ত ছাইয়ে দুই পা দুটি হাত মারাত্মক ভাবে পুড়ে যায়। এঘটনার সূত্র ধরেই হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে বটতৈল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিন্টু ফকিরের সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমি উনাকে দেখতে গিয়েছিলাম এবং বিষয়টি আমার নজরে আছে। তাদেরকে আইনগতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়ে এসেছি। এমন অমানবিক ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। তার বাড়ির আশেপাশে যেয়ে যারা হুমকি ধামকি দিচ্ছে এমন খবর আমিও পেয়েছি তাদেরকে বলেছি যারা এমনটি করছে তাদেরকে ধরে আমাদেরকে খবর দেয়ার জন্য।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ দেলোয়ার হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন বিষয়টি আমার নজরে এসেছে অন্যায়কারী কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন