এক পিস মিষ্টির ওজন এক কেজি এবং একটি মিষ্টির দাম ৩০০ টাকা। শুনতে অবাক লাগলেও এমনি এক মিষ্টির দেখা মিলেছে যশোরের কেশবপুরের সাগরদাঁড়ির মধুমেলায়। মিষ্টিপ্রেমীদের নজর কাড়া এ মিষ্টির নাম 'বালিশ মিষ্টি'।
মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯৯ তম জন্মবার্ষিকীতে সাগরদাঁড়িতে সপ্তাব্যাপী মধুমেলায় এ মিষ্টি তৈরি করে নিয়েসেছেন নড়াইল থেকে আগত টুম্পা মিষ্টান্ন ভান্ডার। নড়াইল ও সাতক্ষীরার কারিগররা এ মিষ্টি তৈরি করেছেন। আলোড়ন সৃষ্টি করা এই মিষ্টি দেখতে ও স্বাদ নিতে মেলার মিষ্টির দোকানে ভিড় করছেন অনেক দর্শনার্থীরা। দাম বেশি হওয়ায় অনেকে আবার না খেয়ে, ছবি তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। আবার অনেকে বাড়ির জন্য কিনে নিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এ বালিশ মিষ্টি।
মামা রফিক নামের যশোর থেকে আসা এক দর্শনার্থী বলেন, এবারের মধুমেলায় এসে ব্যতিক্রমী এ বালিশ মিষ্টিটি দেখলাম। দাম শুনে এবং ওজন শুনে অবাক লাগছে। প্রথম এ মিষ্টির নাম শুনলাম এবং দেখলাম। তবে দামটা অনেক বেশি মনে হচ্ছে। যেটা অনেক ক্রেতাদের ক্রয় সামার্থের বাহিরে চলে যাচ্ছে।
ফাারহানা রহমান মুক্তা বলেন, মিষ্টি খুব পছন্দ করি। এবার এই বালিশ মিষ্টিটা দেখলাম তাই দাম বেশি হলেও নিয়ে নিয়ে যাবো।
সোনিয়া খাতুন নামে এক দর্শনার্থী বলেন, সাতক্ষীরা থেকে মেলায় ঘুরতে এসেছি। এবার প্রথম এসেছি। মধুমেলায় এ মিষ্টির কথা সবার মুখে মুখে। এক মিষ্টির দাম ৩০০ টাকা আবার ওজন এক কেজি। একটা মিষ্টি তাও যদি সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে যায়, তাহলে মিষ্টির স্বাদ নিবে কিভাবে মানুষ। এ মিষ্টির দাম সর্বোচ্চ ২০০-২৫০ টাকা হওয়া উচিত।
কারিগররা জানান, অনান্য বছর এ মিষ্টি প্রতি পিচ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু এ বছর তেল, চিনি, ময়দা, দুধের দাম বেড়ে যাওয়ায় মিষ্টির উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে লোকসান ঠেকাতে এ বছর মিষ্টির দাম বাড়তি। ক্রেতারা আরো জানান, বালিশ মিষ্টির দাম বেশি হলেও মিষ্টিপ্রেমীরা এর স্বাদ নিতে ভোলেন না।
টুম্পা মিষ্টান্ন ভান্ডারের সত্ত্বাধিকারী সাইদুর রহমান বলেন, মধুমেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শনার্থীরা আসেন। এজন্য আমরা উন্নত মানের এই মিষ্টিগুলো তৈরি করে থাকি। অনান্য বার এ বালিশ মিষ্টির দাম থাকে ২০০-২৫০ টাকা। এবার মিষ্টি তৈরির কাচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় মিষ্টির দামও বাড়তি।
এবারের মধুমেলায় বৃহৎ পরিসর নিয়ে বসেছে মিষ্টির দোকানগুলো। বাহারি রকমের মিষ্টি আর মিষ্টির গন্ধে গোটা এলাকার যেন মিষ্টিমুখর। এখানে শুধু বালিশ মিষ্টিই নয় পাওয়া যাচ্ছে জর্দা মিষ্টি, পোলাও মিষ্টি, বালুশা মিষ্টি, রাজভোগ মিষ্টিসহ আরও কয়েকপ্রকারের মিষ্টি। যশোর জেলা প্রশাসন আয়োজিত এবারের মধুমেলা শুরু হয়েছে গত ২৫ জানুয়ারী। আগামী ৩১ জানুয়ারি এ ঐতিহ্যবাহী মধুমেলা শেষ হবে ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন